Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বাজিটা শেষ অবধি মারল কে? মধ্যরাতেও উত্তপ্ত ভোপাল

সকালে গণনা শুরু হয়ে কেন মধ্যরাত পর্যন্ত চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশে মোট আসন ২৩০।

লখনৌতে কংগ্রেস সমর্থকের উচ্ছাস।—ছবি পিটিআই।

লখনৌতে কংগ্রেস সমর্থকের উচ্ছাস।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:০০
Share: Save:

সেঞ্চুরি পার করল দুই শিবিরই। কিন্তু রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হল না, বাজিটা শেষ অবধি মারল কে? মধ্যপ্রদেশে ‘কমল’ (পদ্ম) ফুটল, না কমল নাথের আবির্ভাব হল? আর এই নিয়েই উত্তেজনায় মধ্যরাতেও উত্তপ্ত হয়ে রইল শীতের ভোপাল।

সকালে গণনা শুরু হয়ে কেন মধ্যরাত পর্যন্ত চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশে মোট আসন ২৩০। সকাল থেকেই কখনও বিজেপি এগিয়ে, কখনও কংগ্রেস। সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় ১১৬টি আসন কেউ কেউ ছুঁয়েও আবার পিছিয়ে গেল। কিন্তু রাতে রাহুল গাঁধীরা নিশ্চিত, মধ্যপ্রদেশেও তাঁদেরই সরকার হবে। কারণ, নিজের জোরে ম্যাজিক সংখ্যা না এলেও অখিলেশ-মায়াবতী-নির্দলরা রয়েছেন হাত ধরার জন্য। তাদের সমর্থন নিয়ে কংগ্রেস অনেকটাই নিশ্চিত। এবং তার পরেই গোয়ার পরিণতির কথা মাথায় রেখে রাহুল মধ্যপ্রদেশে কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি। ফল ঘোষণা যত রাতেই হোক, তখনই সরকার গড়ার জন্য রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে আগাম চিঠি দিয়ে রেখেছে কংগ্রেস। এবং সেই চিঠি দিতে গিয়েও জম্মু-কাশ্মীরের ফ্যাক্স-অভিজ্ঞতা মাথায় রাখল তারা। এ ক্ষেত্রে আর ফ্যাক্স নয়, সরাসরি ই-মেল করে এবং হাতে চিঠি পাঠিয়েছেন কংগ্রেসের কমল নাথ!

কংগ্রেসের অভিযোগ, মধ্যপ্রদেশ সরকারের কর্তাদের চাপে কমিশন ফল ঘোষণায় দেরি করছে। কংগ্রেসের চিন্তা বেড়েছে মঙ্গলবার রাতেই অমিত শাহ ভোপাল যেতে পারেন, এমন একটা খবরে। তার মধ্যেই গভীর রাতে রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাকেশ সিন্হা টুইট করে জানান, তাঁদের সঙ্গে নির্দলদের সমর্থন আছে। কাল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবেন। এর পরেই বিজেপিকে নিয়ে অস্বস্তি বেড়েছে কংগ্রেসের।

আরও পড়ুন: থেমে গেল নরেন্দ্র মোদীর বিজয়রথ! সেমিফাইনালে ধাক্কা মোদীত্বে

ভোটের পরে ‘মামা’ শিবরাজ সিংহ চৌহান এবং কমল নাথ উভয়েই ১৩০টি আসনের দাবি করেছিলেন। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, তাঁদের জমি তৈরিই ছিল। কৃষক ও বেকারদের অসন্তোষ এমনকি উচ্চবর্ণের ক্ষোভও ছিল। সবার উপরে ছিল ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা বিজেপির বিরুদ্ধে একঘেয়েমি। কিন্তু কংগ্রেস সেই ক্ষোভ ঠিক মতো কাজে লাগাতে ব্যর্থ মূলত দু’টি কারণে। এক, সাংগঠনিক দুর্বলতা। দুই, নেতাদের রেষারেষি।

আরও পড়ুন: মোদীর কাছেই শিখেছি কী করা উচিত নয়: রাহুল

বিজেপি বলছে, ফল আরও খারাপ হতে পারত। বিজেপির বিধায়কদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রচুর ছিল। যেটুকু মুখরক্ষা হয়েছে, তার কারণ ‘মামা’র ভাবমূর্তি এবং বিজেপি-আরএসএসের সংগঠন। না হলে কংগ্রেস অনায়াসে রাজ্য দখল করত।

যে চম্বল-গ্বালিয়রে উচ্চবর্ণের ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল, সেখানে বিজেপি খারাপ ফল করেছে। শিবরাজ বলেছিলেন, কোনও ‘মাই কা লাল’ সংরক্ষণ তুলতে পারবে না। তার পরেই সেখানে উচ্চবর্ণের আন্দোলন শুরু হয়। তৈরি হয় নতুন দল। তাদের সামলাতে খোদ মোহন ভাগবত আসরে নামলেও শেষরক্ষা হয়নি।

মন্দসৌরে চাষিদের উপরে পুলিশের গুলি চলার পর কৃষক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে গোটা রাজ্যে। মন্দসৌরের আশেপাশের এলাকায় বিজেপি অনেকটা গুছিয়ে নিলেও বাকিটা সামলাতে পারেনি। গুজরাতের মতো মধ্যপ্রদেশেও গ্রামের মুখ ফেরানো চিন্তা বাড়িয়েছে মোদীর। বিজেপি বোঝানোর চেষ্টা করছে, লোকসভায় সমীকরণ ভিন্ন হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE