Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রাজস্থানে কঠিন ঠাঁই, তাই কি প্রচারে দায়সারা মোদী? 

অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে না-পারলেও ভোট বাজারের বিপণন কৌশল নরেন্দ্র মোদী নিজের হাতের তালুর মতো বোঝেন— এমনটা মনে করেন তাঁর প্রতিপক্ষরাও। ব্র্যান্ড মোদীকে কী ভাবে প্রচারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করতে হয়, সেটা তাঁর নখদর্পণে।

নরেন্দ্র মোদী এবং বসুন্ধরা রাজে। —ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী এবং বসুন্ধরা রাজে। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২৭
Share: Save:

জনমত সমীক্ষাগুলির আগেই একটি চাল টিপে তিনি বুঝে গিয়েছিলেন, রাজস্থানের পিচে মাথা খুঁড়লেও রান আসবে না। ফলে আঁকড়ে পড়ে থাকলে প্রথমত অযথা সময় নষ্ট। দুই, ব্যর্থতার দায় নিজের কাঁধে চাপবে।

অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে না-পারলেও ভোট বাজারের বিপণন কৌশল নরেন্দ্র মোদী নিজের হাতের তালুর মতো বোঝেন— এমনটা মনে করেন তাঁর প্রতিপক্ষরাও। ব্র্যান্ড মোদীকে কী ভাবে প্রচারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করতে হয়, সেটা তাঁর নখদর্পণে। কিন্তু গত মাসের ৮ তারিখ অজমেরে বিজয় সংকল্প সভায় গিয়েই মোদী বুঝতে পেরেছিলেন, রাজস্থানে জয়ের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, ওই সভায় অন্তত ৩ লাখ মানুষ হবে। বাস্তবে সামনের আসনগুলিও ভরেনি।

এর পর একের পর এক জনমত সমীক্ষায় রাজস্থানে বিজেপির হারের পূর্বাভাস মিলেছে। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, ছত্তীসগঢ়ে এখন পর্যন্ত ৬টি জনসভার পরিকল্পনা হয়ে গেলেও রাজস্থানে প্রচার দায়সারা ভাবেই সারবেন মোদী। এটা ঠিক যে ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহের সঙ্গে মোদীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল। তা ছাড়া, সেখানে মায়াবতী-অজিত জোগী জোটের সক্রিয়তায় বিজেপির ভোটের ফসল তোলার সম্ভাবনাও বাড়ছে। তাই সেই অপেক্ষাকৃত অনুকূল পরিবেশে বারবার গিয়ে ‘মোদী হাওয়া’র সিলমোহর লাগানো যাবে বলেই মনে করছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। একই ভাবে মধ্যপ্রদেশের হাওয়াটাও দেখে নিতে চাইছেন মোদী। যদি সেখানে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়, তবে সে রাজ্যেও পতাকা ওড়ানোর প্রস্তুতি নেবেন তিনি।

আরও পড়ুন: মর্যাদা মেলেনি, অন্তাগড়ের বাঙালিরা জবাব দিতে প্রস্তুত

কিন্তু রাজস্থানে এখনও কোনও জনসভার পরিকল্পনাই করা হয়নি। বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যে বলছেন ভোটের এখনও দেরি আছে। তবে দলীয় সূত্রের মতে, বসুন্ধরা রাজের সঙ্গে মোদী এবং অমিত শাহ দু’জনেরই দূরত্ব সুবিদিত। সম্প্রতি রাজস্থানের কিছু জেলায় পোস্টারও পড়ে। যার বিষয়— বসুন্ধরা বিদায় নিন, মোদী আসুন! ক্ষুব্ধ বসুন্ধরা ঘরোয়া মহলে অভিযোগ করেছেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে। রাজ্যে বিজেপির কোণঠাসা পরিস্থিতিতে মোদী যে প্রচারে গা করছেন না, তাতেও হতাশ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, এই বিপদেই তো সামনে এসে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো উচিত ছিল দলের শীর্ষ নেতার।

আরও পড়ুন: পাঁচ রাজ্যে ‘পিঙ্ক’ বুথ বাধ্যতামূলক

তবে রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, রাজস্থানের হারা মাঠে সময় নষ্ট করার পক্ষপাতী নন মোদী। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটকে জল মাপার কাজে লাগাতে চাইছেন তিনি। কারণ, এর পরেই লোকসভা ভোটের মেগা প্রচার আছে। তাই নিজেকে এখনই পুরো খরচ না-করে ‘জমিনি হকিকৎ’ বুঝে নিয়ে সেই মতো ভোট বাজারে নামতে চাইছেন বিজেপির তারকা প্রচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE