‘তিনি বৃদ্ধ হলেন’— বয়সের ক্যালেন্ডারে তিনি বৃদ্ধ বটে। কিন্তু তা রুখতে পারেনি তাঁকে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। তিনি রাজকুমার বৈশ্য। বয়স ৯৫। এখনও নিয়ম করে দু’বেলা পড়তে বসেন। কারণ অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর হওয়া তাঁর স্বপ্ন। আর সে লক্ষ্যে তিনি এই বয়সেও অবিচল। পড়াশোনার কাজে রাজকুমারকে সাহায্য করছেন তাঁর অবসরপ্রাপ্ত পুত্র এবং পূত্রবধূ। ‘‘আমি স্বপ্নপূরণের খুব কাছে দাঁড়িয়ে আছি। তবে শুধু ডিগ্রি পাওয়া নয়। অর্থনীতি বিষয়টা ভালভাবে বুঝতে চাই আমি। যাতে দেশের মানুষের সমস্যাগুলো বুঝতে পারি। আর সাধ্যমতো সাহায্য করতে পারি’’— ফোকলা দাঁতে হেসে বলেন রাজকুমার। এই মুহূর্তে নালন্দা মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। বয়স তাঁর কাছে নিতান্ত একটা সংখ্যা। তুমুল আত্মবিশ্বাস এবং মনের জোরে ভর করে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন লক্ষ্যপূরণের দিকে।
১৯৩৮। আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন রাজকুমার। ১৯৪০-এ পান আইনের ডিগ্রি। পেশার চাপে তার পরই পড়াশোনার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৮০-তে কোডারমার একটি বেসরকারি সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার পদ থেকে অবসর নেন তিনি। দশ বছর আগে মারা গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। তার পর দ্বিতীয় পক্ষের পুত্র এবং পূত্রবধূর সঙ্গে বিহারের রাজেন্দ্র নগর কলোনিতে থাকতে শুরু করেন। বাড়িতে পড়াশোনার পরিবেশ থাকায় তাঁর সুবিধেই হয়েছে।
নালন্দা মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার এস পি সিংহ জানিয়েছেন, ‘‘যখন আমরা দেখলাম উনি এ বয়সেও ঠিকমতে লিখতে পড়তে পারছেন তখন আমাদের প্রতিনিধিরা ওঁর বাড়িতে গিয়ে ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য নাম নথিভুক্ত করেন। আমরা প্রথমে হিন্দি স্টাডি মেটিরিয়াল পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু উনি ইংরেজিতে পড়তে চাইলে তাও সঙ্গে সঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এটা আমাদের কাছে দারুণ অভিজ্ঞতা। ’’
টেনশনহীন জীবনে বাঁচতে ভালবাসেন রাজকুমার। নতুন প্রজন্মকেও সে দাওয়াই দেন। পরীক্ষার জন্য পড়ার সময় কিছুটা বাড়িয়েছেন তিনি। আপাতত ভাল রেজাল্ট করে স্নাতকোত্তর হওয়ার অপেক্ষায় ৯৫-এর বৃদ্ধ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy