Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘বর্মা, আস্থানার যুদ্ধ চললে পড়ে থাকত শুধু লেজ’

ইংরেজি বাগধারায় তারা ‘কিনকেলি ক্যাট’ বলেই পরিচিত। দুই নাছোড়বান্দার লড়াই দেখলে তাঁদের সঙ্গে ‘কিনকেলি ক্যাট’-এর তুলনা টানা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৭
Share: Save:

দু’টো বিড়াল ছিল। দু’জনেই মনে করত, দুনিয়ায় একটা বিড়াল থাকলেই যথেষ্ট। দু’জনেই আঁচড়াআঁচড়ি, কামড়াকামড়ি করে এমন লড়াই করল যে, তাদের লেজ ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট রইল না!

ইংরেজি বাগধারায় তারা ‘কিলকেনি ক্যাট’ বলেই পরিচিত। দুই নাছোড়বান্দার লড়াই দেখলে তাঁদের সঙ্গে ‘কিনকেলি ক্যাট’-এর তুলনা টানা হয়। আজ সিবিআইয়ের ডিরেক্টর অলোক বর্মা ও স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার সংঘাত প্রসঙ্গে সেই তুলনাই টানলেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল। তাঁর যুক্তি, ‘‘দুই শীর্ষ অফিসার একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছিলেন। যা প্রকাশ্যে চলে আসে। ফলে সিবিআই-কে বিদ্রুপের মুখে পড়তে হচ্ছিল।’’

গত ২৩ অক্টোবর বর্মা ও আস্থানা, দু’জনকেই ছুটিতে পাঠিয়ে দেয় মোদী সরকার। অভিযোগ ওঠে, বর্মার হাতে রাফাল-চুক্তি নিয়ে তদন্ত শুরু করার মতো তথ্য ছিল বলেই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অন্য দিকে আস্থানা প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন বলে পরিচিত। বর্মা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছিলেন। ফলে আস্থানাকে বাঁচাতে এই সিদ্ধান্ত কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বর্মা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।

আজ প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে বেণুগোপালের দাবি, ‘‘ডিরেক্টর ও স্পেশাল ডিরেক্টরের লড়াইয়ে দেশের প্রধান তদন্তকারী সংস্থার প্রতি আস্থা, তার বিশ্বাসযোগ্যতা ও সম্মান নষ্ট হচ্ছিল। আমাদের লক্ষ্য সেই আস্থা রক্ষা করা। দুই শীর্ষ অফিসারের লড়াই কেন্দ্র বিস্মিত হয়ে দেখছিল। সব কিছু সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাচ্ছিল।’’ বিচারপতি কে এম জোসেফ জানতে চান, বর্মা সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন, এমন কোনও প্রমাণ রয়েছে কি না। বেণুগোপাল একাধিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের সংকলন আদালতকে দেন।

বর্মা ৩১ জানুয়ারি সিবিআই ডিরেক্টরের পদ থেকে অবসর নেবেন। তাঁকে ছুটিতে পাঠিয়ে এম নাগেশ্বর রাওকে ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর করা হয়েছে। সিবিআই ডিরেক্টরের পদের মেয়াদ দু’বছর নির্দিষ্ট। তার আগেই তাঁকে সরিয়ে সরকার আইন ভেঙেছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বর্মার আইনজীবীরা। কিন্তু আজ কেন্দ্র যুক্তি দিয়েছে, বর্মার থেকে দায়িত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তাঁকে বদলি করা হয়নি। বর্মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেন আস্থানা। বর্মাও পাল্টা অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগ যায় কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনে। কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতেই কেন্দ্র দু’জনকেই দায়িত্ব থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE