Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

আপত্তি খারিজ, পাঁচ দিনই হবে অযোধ্যা শুনানি

মুসলিম পক্ষের প্রধান আইনজীবী রাজীব ধবনের দাবি ছিল, তাড়াহুড়ো করে শুনানি শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে। এটা সপ্তাহে তিন দিন হোক।

সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।

সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩৮
Share: Save:

সপ্তাহে তিন দিন নয়। সোম থেকে শুক্র, সপ্তাহে পাঁচ দিনই অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার শুনানি হবে।

মুসলিম পক্ষের প্রধান আইনজীবী রাজীব ধবনের দাবি ছিল, তাড়াহুড়ো করে শুনানি শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে। এটা সপ্তাহে তিন দিন হোক। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আজ জানান, সোম থেকে শুক্রবারই শুনানি চলবে। হিন্দু পক্ষের অন্যতম মামলাকারী, অযোধ্যার মহন্ত ধরমদাসের অভিযোগ, মুসলিমরা নিষ্পত্তিতে বাধা তৈরি করতে চাইছে। আইনজীবী মহলে প্রশ্ন, প্রধান বিচারপতি কি নভেম্বরে অবসরের আগেই ফয়সালা করে যেতে চাইছেন!

প্রধান বিচারপতি জানিয়েছিলেন, তাঁর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে ‘নিয়মিত’ অর্থাৎ মঙ্গল থেকে বৃহস্পতিবার শুনানি হবে। সোম ও শুক্রবার নতুন ও অন্যান্য মামলার জন্য নির্ধারিত। আচমকাই সিদ্ধান্ত হয়, শুক্রবারও শুনানি হবে। এতে সুপ্রিম কোর্টে আজ ১৫টির বদলে ১২টি বেঞ্চ বসে। তিনটি বেঞ্চ না বসায় অন্তত ১৮০টি মামলার শুনানি হয়নি। ১ জুলাইয়ের হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে প্রায় ৬০ হাজার মামলা ঝুলে রয়েছে। তার মধ্যে ৪৬ হাজার মামলা শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হতে কোনও বাধা নেই। তবু পাঁচ দিন করে শুনানির সিদ্ধান্ত থেকে স্পষ্ট, সুপ্রিম কোর্ট এই মামলাকে কতখানি অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবীর যুক্তি ছিল, শুনানিতে এই রকম তাড়াহুড়োয় তাঁর আপত্তি রয়েছে। এটা তাঁর উপর অত্যাচার। সওয়ালের প্রস্তুতির জন্য সময় দরকার। পাঁচ বিচারপতির মধ্যে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ছাড়া আর কেউ ইলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় পড়েছেন কি না, তা নিয়ে কটাক্ষও করেন ধবন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, শুনানি পাঁচ দিনই হবে। ধবন দরকার হলে এক দিনের বিরতি নিতে পারেন।

অযোধ্যার বিতর্কিত জমির দু’ভাগ হিন্দুদের ও এক ভাগ মুসলমানদের দিতে নির্দেশ দিয়েছিল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। অযোধ্যায় পূজিত রামলালা বিরাজমানের আইনজীবী কে পরাশরন সুপ্রিম কোর্টে এর বিরোধিতা করে যুক্তি দেন, রামের জন্মস্থান ভগবানের স্বরূপ। দেবতা আইনত এক জন ব্যক্তি। তাঁকে ভাগ করা যায় না। বিচারপতি চন্দ্রচূড় প্রশ্ন করেন, ‘‘আইনত কী ভাবে জন্মস্থানকে ব্যক্তি ধরা যায়?’’ পরাশরন বলেন, ‘‘দেবতার মতো পুজো করা হয় জন্মস্থানকেও। মূর্তি ছাড়াও পুজো হতে পারে। কেদারনাথ মন্দিরেই দেবতার মূর্তি নেই। হিন্দুরা পাহাড়কেও পুজো করে। চিত্রকূট পর্বতকে পরিক্রমা করা হয়। ঋক বেদ অনুযায়ী সূর্যও দেবতা। মূর্তি না-থাকলেও সূর্য আইনত ব্যক্তি। উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট নদীকেও ব্যক্তির মর্যাদা দিয়েছে। রামকে ঐতিহাসিক চরিত্র প্রমাণে, রামলালার আইনজীবী পৌরাণিক বিশ্বাসের নানা উদাহরণ তুলে ধরেন। বিচারপতি শরদ এ বোবদে বলেন, ‘‘ভাবছিলাম, এখনও কি অযোধ্যায় রঘুবংশ সাম্রাজ্যের কেউ রয়েছেন?’’ পরাশরনের জবাব, ‘‘আমার জানা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE