Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নর্দমা থেকে একরত্তি ‘স্বাধীনতা’ কুড়িয়ে পেলেন অভিনেত্রী

তামিলে ‘সুথন্থিরাম’, যার অর্থ স্বাধীনতা। কুড়িয়ে পাওয়া সদ্যোজাতের এমনই নাম রেখেছেন পেশায় অভিনেত্রী গীতা।

নর্দমা থেকে সদ্যোজাতকে উদ্ধার করছেন গীতা। ছবি: টুইটার।

নর্দমা থেকে সদ্যোজাতকে উদ্ধার করছেন গীতা। ছবি: টুইটার।

সংবাদ সংস্থা
চেন্নাই শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৪৫
Share: Save:

স্বাধীনতা দিবসের সকালে নর্দমা থেকে একরত্তি ‘স্বাধীনতা’ কুড়িয়ে পেলেন চেন্নাইয়ের বালসারাবক্কমের বাসিন্দা গীতা। তামিলে ‘সুথন্থিরাম’, যার অর্থ স্বাধীনতা। কুড়িয়ে পাওয়া সদ্যোজাতের এমনই নাম রেখেছেন পেশায় অভিনেত্রী গীতা।

বালসারাবক্কমের এসভিএস নগরের সিক্সথ স্ট্রিট এলাকায় মেয়ের সঙ্গেই থাকেন গীতা। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ দুধওয়ালার মুখে প্রথম শোনেন, বাড়ির পাশের নর্দমায় কী যেন একটা কাঁদছে। প্রথমে ভেবেছিলেন বিড়াল ছানা। ঠিক করে নিয়েছিলেন, যা-ই থাক না কেন, বাঁচাতেই হবে।

তবে উঁকি দিতেই চমকে ওঠেন গীতা। সিমেন্টের ড্রেনের ভিতরে দু’টি পাইপ। তারই ফাঁকে আটকে একটি সদ্যোজাত শিশু। তখনও অটুট নাড়ি। সেটা দিয়েই দু’তিন পাকে গলাটা প্যাঁচানো। গা-ভর্তি পাঁক-কাদা, পোকা-মাকড়। আগের দিন সারারাত বৃষ্টি হয়েছে। কে জানে, হয়তো সারারাত ধরেই ওখানে!

আর দেরি করেননি গীতা। নর্দমা থেকে সাবধানে শিশুটিকে বার করার চেষ্টা করতে থাকেন। প্রথমে পা দু’টো, পরে বেরিয়ে আসে ফুটফুটে একটা ছেলে। গোটা ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

প্রথমেই শিশুটির গলা থেকে নাড়ির পাক খুলে ফেলেন গীতা। আশপাশের কৌতূহলী মুখগুলোর কাছেই একটু জল চান। শিশুটির গা থেকে কোনও মতে নোংরাটুকু ধুয়েই তাকে নিয়ে ছোটেন চেন্নাইয়ের এগমোর হাসপাতালে। তখনও শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছিল শিশুটির। সেখানে ইনকিউবেটরে রাখা হয় তাকে। চিকিৎসকেরা জানান, আপাতত স্থিতিশীল সে। তবে শরীরে জলশূন্যতা ও ঘাড়ে ক্ষত রয়েছে। আরও কিছু দিন তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

গীতার কথায়, ‘‘ইচ্ছে করেই নর্দমার গভীরে বাচ্চাটিকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যাতে বাইরে থেকে কোনও ভাবে দেখা না যায়। নাড়িটা এমন ভাবে গলায় পেঁচিয়ে দেওয়া হয়, যে সেটার চাপে ধীরে ধীরে মৃত্যু হত শিশুটির।’’

খবর পেয়েই হাসপাতালে আসেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সি বিজয়াভাস্কর। শিশুটির বিশেষ যত্ন নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পুলিশের অনুমান, বুধবার ভোরের দিকে শিশুটিকে কেউ ওখানে ফেলে যায়। স্থানীয় হাসপাতালগুলিতে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে। এলাকার সিসিটিভ ফুটেজও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আইন অনুযায়ী, সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পরে সরকারি শিশু হোমেই ঠাঁই হবে সুথন্থিরামেরও। সমাজ কল্যাণ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, শিশুটির দায়িত্ব নেবে সরকার। পাশাপাশি তাদের বার্তা, এ ভাবে সন্তানকে নর্দমায় ফেলে না দিয়ে পরিত্যক্ত শিশুদের জন্য রাজ্য সরকারের যে প্রকল্প রয়েছে, তার সুবিধা নিক বাবা-মায়েরা।

তবে সুথন্থিরামকে নিজের কাছেই রাখতে চান গীতা। তিনি জানান, তাঁকে যদি দায়িত্ব দেওয়া হয়, তিনি সানন্দে শিশুটিকে বড় করতে রাজি। শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আইনি পদক্ষেপে প্রশাসনের সাহায্যও চেয়েছেন গীতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chennai Child চেন্নাই
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE