প্রতীকী ছবি।
নয় নয় করে দশ বছর হয়ে গেল প্রবাসে। বছরের বাকি তিনশোটা দিন গড্ডলিকা প্রবাহে কাটানো গেলেও এই সময়টা বাড়ির জন্য মন কেমন করে ওঠে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেই তো আর উপায় থাকে না। ফলে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে প্রবাসের পুজোর খোঁজে বেরিয়ে পড়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না আমাদের।
আমার প্রবাস আমদাবাদ। এখানে এ বছর অন্তত ১৫টি পুজো হচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম কালীবাড়ির পুজো এ বার ৮০ বছর পার করল। এই কালীবাড়ির পুজো চালায় এখানকার ‘বেঙ্গলি কালচালার অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএ)। পুজোটি অবশ্য কালীবাড়িতে হয় না। শহরের একটা বড় ময়দানে হয়। সেই পুজোকে ঘিরেই গতবার কী গন্ডগোল!
এই রাজ্যের মানুষজন অত্যন্ত ভদ্র ও নিরীহ। গাড়িতে হাল্কা ধাক্কা লাগলেও পরস্পরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে চলে যান। পশ্চিমবঙ্গের মানুষজনের মতো কোমর বেঁধে ঝগড়া শুরু করে দেন না। পদে পদে তাঁরা জানান দেন যে, এটা ‘গাঁধীভূমি’।
এ হেন ‘ঝামেলাহীন’ গুজরাতে বিসিএ-র দুর্গাপুজো নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে জোর বচসা লেগে গেল বাঙালিদের। দুর্গাপুজো, বিশেষত প্রবাসীদের দুর্গাপুজোয়, অন্যতম আকর্ষণ পেটপুজো। আর আমাদের পেটপুজো মানেই তো বিরিয়ানি, কষা মাংস, ফিশ ফ্রাইয়ের মতো হরেক কিসিমের আমিষ পদ। পুজো মণ্ডপ-লাগোয়া চত্বরে কলকাতা ও মফস্সলের অসংখ্য নামী-অনামী দোকান স্টল দেয়। গুজরাতে দুষ্প্রাপ্য পাঁঠার মাংস আর ভেটকি মাছের নানা পদ চাখতে সেই সব স্টলে উপচে পড়ে ভিড়। পুজোর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের সংঘাতে গত বছরের বিসিএ-র পুজোয় আমিষ পদের একটিও স্টল দেওয়া যায়নি। পেটুক বাঙালি এতে যারপরনাই চটে গেলেও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের টলানো যায়নি। এ বার অবশ্য পুজোর কর্মকর্তারা মণ্ডপের স্থান বদল করে কালীবাড়ির পাশের মাঠে চলে গিয়েছেন।
ফলে কব্জি ডুবিয়ে খেতে এ বার আর কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy