Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

অযোধ্যা রায়কে সামনে রেখে মুসলিমদের পাশে নিয়েই এগোচ্ছে সঙ্ঘ

বেরোনোর আগে কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম, সমাজবাদী পার্টি-সহ সব দলের কাছে শান্তি-সম্প্রীতি বজায়ের আবেদন জানাবে গেরুয়া শিবির। গডকড়ী-পটেলের গত কালের বৈঠকও না কি ছিল সেই উদ্দেশ্যেই।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

চিত্র এক— সংসদে উর্দু কবি নিদা ফজলির লাইন যখন শুনিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তখনই অনেকে চমকে যান। আগামিকাল সেই নিদা ফজলির স্মরণে দিল্লিতে শায়ের ও কাওয়ালির আয়োজন হয়েছে। নেপথ্যে বিজেপি-আরএসএস।

চিত্র দুই— আরএসএস আগামী কয়েক দিনে সব দলের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে, বিশেষ করে মুসলিম নেতাদের কাছে। অযোধ্যা-রায় বেরোনোর আগে কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম, সমাজবাদী পার্টি-সহ সব দলের কাছে শান্তি-সম্প্রীতি বজায়ের আবেদন জানাবে গেরুয়া শিবির। গডকড়ী-পটেলের গত কালের বৈঠকও না কি ছিল সেই উদ্দেশ্যেই।

চিত্র তিন— জমিয়তে উলেমা-ই-হিন্দের সভাপতি আরশাদ মাদানিও গত কাল বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট অন্যত্র মসজিদ নির্মাণ করতে বললে, সেটা আমাদের জয় হবে না। কিন্তু সেই রায় মেনে নিতে হবে।’’ অযোধ্যা মামলার অন্যতম শরিক ইনি। ফলে তাঁর বক্তব্যের গুরুত্ব রয়েছে।

চিত্র চার— জমিয়তে উলেমা-ই-হিন্দেরই সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ মাদানি, শিয়া ধর্মগুরু কলবে জওয়াদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা মুজফ্ফর আলি, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তারিক মনসুর, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের সদস্য কমল ফারুকি, প্রাক্তন সাংসদ শহিদ সিদ্দিকি, হজ কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান কওসর শমিম, জেএনইউ-এর অধ্যাপক আবদুল নফি, সুফি সজ্জাদা নশীন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিরুদ্দিন চিস্তিরা গেলেন সংখ্যালঘু মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির বাড়ি। রায়ের পর শান্তি বজায় রাখার প্রস্তাব নিয়ে সেখানে হাজির সঙ্ঘ নেতারাও।

চিত্র পাঁচ — আগামী কাল দিল্লিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভিন্ন পেশার লোকেদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন সঙ্ঘের নেতা কৃষ্ণগোপাল। উদ্দেশ্য সম্প্রীতির আর্জি জানানো।

কেন্দ্রের এক মন্ত্রী এক বার মুখ ফস্কে বলে ফেলেছিলেন, বিজেপি সংখ্যালঘু ভোটের প্রত্যাশা করে না। কিন্তু তিন তালাককে উচ্চগ্রামে নিয়ে গিয়ে সেই বিজেপিকেই মুসলিম মহিলাদের মন জয়ের চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে। নির্বাচনে মুসলিমদের একাংশের ভোট পেয়েছে বলে বিজেপি দাবি করে। সামনের সপ্তাহেই অযোধ্যার রায় ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট। তার আগে প্রধানমন্ত্রী গত কালই নিজেদের মন্ত্রী-নেতাদের সতর্ক করেছেন, রায় যেমনই হোক, সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। যদিও যে সময় এই রায় বেরোনোর কথা, সামনের সপ্তাহের সেই সময়ে ব্রিক্‌স সম্মেলনে ব্রাজিল যাচ্ছেন মোদী।

কিন্তু এই রায়কে সামনে রেখে গেরুয়া শিবির যে ভাবে মুসলিমদের পাশে রেখে এগোনোর কৌশল নিচ্ছে, তা কপালে ভাঁজ ফেলেছে কংগ্রেসের। কংগ্রেস নেতা রশিদ আলভি যেমন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যা বলছেন, অতি উত্তম। সুপ্রিম কোর্টের রায় আসার পর সকলেরই উচিত তা মেনে নেওয়া। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রশ্ন জাগে, যাঁরা এত দিন মেরুকরণের রাজনীতি করে এসেছেন, তাঁদের কি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী?’’

রায় বেরোনোর পরে গেরুয়া শিবিরের ভূমিকা কী হবে, তা পরের কথা। কিন্তু বিজেপি বলছে, প্রধানমন্ত্রী যে ‘সবকা সাথ, সবকা বিশ্বাস’-এর স্লোগান নিয়ে এগোচ্ছেন, এখন তারই প্রতিফলন ঘটছে। বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ হুসেনের মতে, ‘‘আরএসএসের সঙ্গে মুসলিমদের যে সমন্বয় আলোচনা শুরু হয়েছে, ভবিষ্যতেও তা বজায় থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Congress Ayodhya Verdict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE