Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নেট বন্ধে ডিজিটাল উদ্যোগেরও সঙ্কট কাশ্মীরে

কাশ্মীরে চাকরির সুযোগ কমেছে অনেক দিন ধরেই। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া কাজের সুযোগ খুলে দিয়েছিল অনেকের কাছে।

শুধুমাত্র শ্রীনগরের সরকারি মিডিয়া সেন্টারেই নেট ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন সাংবাদিকেরা। অপেক্ষা সেখানেও। রবিবার। ছবি: পিটিআই।

শুধুমাত্র শ্রীনগরের সরকারি মিডিয়া সেন্টারেই নেট ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন সাংবাদিকেরা। অপেক্ষা সেখানেও। রবিবার। ছবি: পিটিআই।

সাবির ইবন ইউসুফ
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:০৩
Share: Save:

পড়াশোনা বন্ধ। সংবাদপত্র বন্ধ। টানা ৪২ দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় কাশ্মীরে বন্ধ ডিজিটাল উদ্যোগও। ফলে বন্ধ অনেক তরুণ-তরুণীর রোজগারও।

কাশ্মীরে চাকরির সুযোগ কমেছে অনেক দিন ধরেই। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া কাজের সুযোগ খুলে দিয়েছিল অনেকের কাছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেই নিজেদের সৃষ্টিশীল কাজের মাধ্যমে রোজগার করছিলেন তাঁরা। কিন্তু টানা ৪২ দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সেই সুযোগও বন্ধ হয়েছে। ফলে হতাশা বাড়ছে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে।

কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া শাইক খানের কথাই ধরা যাক। মাঝে মাঝে রোজগারের জন্য অনলাইনে কিছু কাজ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা অনেকেই তো একমাত্র সোশ্যাল মিডিয়াতেই নিজেদের সৃষ্টিশীলতা দেখানোর সুযোগ পাই। এখানকার অনেক পড়ুয়াকেই ডিজিটাল উদ্যোগপতি বলা চলে। কিন্তু ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় আমরা বড় ধাক্কা খেয়েছি।’’ শাইকের কথায়, ‘‘ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে যাঁরা ছবি বিক্রি করে তাদের কথাই ধরুন। তাঁদের রোজগারে বড় ধাক্কা লেগেছে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনের নথি (স্টাডি মেটিরিয়াল) ডাউনলোড করেন অনেকে। নেট না থাকায় তা-ও করা যাচ্ছে না।

বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে কাশ্মীরে কয়েকটি স্কুল খুললেও পড়ুয়া যে তেমন আসেনি তা জানা গিয়েছিল আগেই। কিন্তু পড়ুয়ারা এলেও সব স্কুলে পঠনপাঠন চালানো যেত কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে স্কুলের পরিচালকদেরই।

এক সর্বভারতীয় স্কুলের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষিকার কথায়, ‘‘আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশে আমাদের অন্য শাখাগুলির সঙ্গে একযোগে শিক্ষাদানের কৌশল স্থির করা, পরীক্ষা নেওয়া বা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কাজ করি। কিন্তু কাশ্মীরে এখন সে সব কিছুই করা যাচ্ছে না।’’ তিনি বলছেন, ‘‘এখানে পড়ানো কত দূর হয়েছে, তা কর্তৃপক্ষকে জানানো যায়নি। পরীক্ষা নেওয়ার একটি অনলাইন পোর্টালের সঙ্গে একযোগে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা। সেটাও কার্যকর করা যায়নি।’’

ওই স্কুলেরই অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলে বিজ্ঞান, অঙ্ক ও ভাষার আলাদা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে। ইন্টারনেট থাকলে পড়ুয়ারা বাড়ি থেকেই ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে পড়াশোনা এগোতে পারত। কিন্তু সেটাও হচ্ছে না।

ইন্টারনেটের মাধ্যমেই উপত্যকা বা দেশের অন্য প্রান্তে থাকা চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নতুন ওষুধ, যন্ত্রপাতি সম্পর্কে জানেন চিকিৎসকেরা। অনেক ক্ষেত্রে প্রবীণ চিকিৎসকদের মতামতও নেন অনেকে। এখন সে পথও বন্ধ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE