লালুপ্রসাদ যাদবকে চিঠি লিখে দল ছাড়লেন রঘুবংশ প্রসাদ সিংহ। —ফাইল চিত্র
বিহারে ভোটের মুখে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) শিবিরে বড়সড় ধাক্কা। দল ছাড়লেন লালুপ্রসাদ যাদবের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী ও দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা রঘুবংশ প্রসাদ সিংহ। জেলবন্দি লালুপ্রসাদকে এক লাইনের চিঠি লিখে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন মনমোহন জমানার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রঘুবংশ। দলীয় সূত্রে খবর, বৈশালীর প্রাক্তন সাংসদ মাফিয়া ডন রাম সিংহকে আরজেডি দলে নিতে পারে, এমন জল্পনার জেরে রঘুবংশ দল ছাড়লেন। অন্য একটি সূত্রে খবর, অতঃপর নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)-এ যোগ দিতে পারেন রঘুবংশ।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন রঘুবংশ। সেরে উঠলেও এখনও কিছু শারীরিক সমস্যা থাকায় দিল্লির এমস হাসপাতালে ভর্তি তিনি। হাসপাতাল থেকেই লালুপ্রসাদকে চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘জননায়ক কর্পূরি ঠাকুরের মৃত্যুর পর থেকে দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে আপনার সঙ্গে আছি। কিন্তু আর নয়।’’ আরও লিখেছেন, ‘‘বিহারের সাধারণ মানুষ ছাড়াও দলের নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে অনেক ভালবাসা পেয়েছি। আমায় ক্ষমা করবেন।’’
তিন দশকেরও বেশি সময়ের সম্পর্ক ছেদ করলেন কেন রঘুবংশ? পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির চারটি মামলায় সাজা পেয়ে লালুপ্রসাদ জেলে যাওয়ার পর থেকে দলের হাল ধরেছেন লালুপুত্র তেজস্বী। বিহারের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, তাঁর দল পরিচালনা নিয়ে অসন্তোষ ছিল রঘুবংশের। তার উপর সম্প্রতি জল্পনা ছড়ায়, বৈশালীর প্রাক্তন এলজেপি সাংসদ তথা মাফিয়া ডন রাম সিংহকে দলে নিতে পারে আরজেডি। এই বিষয় নিয়ে দলের সঙ্গে রঘুবংশের মতবিরোধ আরও বাড়ে। তার জেরে জুন মাসেও এক বার দল ছাড়ার কথা জানিয়েছিলেন রঘুবংশ। কিন্তু সে যাত্রায় লালুপ্রসাদের হস্তক্ষেপে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। তবে এ বার আর তিনি ফিরবেন না বলেই অনুমান রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
আরও পড়ুন: পরের দিন নিট, ১২ সেপ্টেম্বর লকডাউন প্রত্যাহার, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
১৯৯৭ সালে জনতা দলের জমানা থেকেই লালুপ্রসাদের সঙ্গী রঘুবংশ। প্রথম মনমোহন সিংহ সরকারে তিনি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন। তার আগেও দেবগৌড়ার জমানায় তিনি পশুপালন দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। বলা হয়, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পটি তাঁরই মস্তিস্কপ্রসূত। আরজেডি-তেও তিনি ছিলেন জাতীয় সহ-সভাপতি। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বিহার ও জাতীয় রাজনীতির বহু ঘাত-প্রতিঘাতের সাক্ষী এ হেন রঘুবংশের বিধানসভা ভোটের মুখে দলত্যাগ আরজেডি শিবিরের কাছে বড়সড় ধাক্কা। সেই কারণেই তাঁকে ফেরানোর বা সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করানোর তৎপরতাও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের বিরুদ্ধে জবরদস্ত আন্দোলন: অধীর
বিহারের বর্তমান বিধানসভার মেয়াদ শেষ ২৯ নভেম্বর। তার আগেই নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। বন্যা এবং করোনা অতিমারির কারণে ভোট পিছিয়ে যেতে পারে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তবে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে বিহারের ভোট নির্দিষ্ট সময়েই হবে। এখন দেখার ভোটে রঘুবংশ কার হয়ে ময়দানে নামেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy