বিজেডি মহাজোটে থাকছে না, জানিয়ে দিলেন নবীন পট্টনায়েক। ছবি: পিটিআই
প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করলেন নবীন পট্টনায়ক। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘‘মহাজোটের সঙ্গে নেই।’’ তবে কি তিনি ফেডারেল ফ্রন্টে? বললেন, কংগ্রেস-বিজেপি দুই দলের সঙ্গেই সমদূরত্ব বজায় রাখবে বিজু জনতা দল (বিজেডি)। তবে কি ফেডারেল ফ্রন্টে? খোলসা করেননি বিজেডি সুপ্রিমো। লোকসভা ভোটের মুখে ওড়িশার শাসক দলের নেতার এই ঘোষণা রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
গতকাল মঙ্গলবার নবীনের দল বিজেডি দিল্লিতে কৃষকদের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। তাতে যোগ দেন তিনি। সেখানে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, আগামী লোকসভা ভোটে তিনি কি মাহজোটে শামিল হবেন। জবাবে বিজেপি সুপ্রিমো বলেছিলেন, ‘‘আরও কিছুটা সময় চাই।’’ সেই সময়ের জন্য বেশি অপেক্ষা করতে হল না। ২৪ ঘণ্টা পরই আগামী অবস্থান অনেকটাই স্পষ্ট করলেন নবীন।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই যে, বিজু জনতা দল মহাজোটের অংশ নয়।’’ জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি এবং কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্বের লাইনেই হাঁটবে তাঁর দল। কংগ্রেস এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে লোকসভা নির্বাচনে মহাজোট গঠনের জোর তৎপরতা চলছে। তার মূল উদ্যোক্তা অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। তিনি সব রাজ্যে গিয়ে ছোট দলগুলির সঙ্গে এ নিয়ে দৌত্য করছেন। আবার কংগ্রেসের সঙ্গেও নিরন্তর যোগাযোগ রেখে কথা চালাচালি করছেন অন্য দলগুলির সঙ্গে। প্রায় সব বিরোধী দলের এই ঐক্যবদ্ধ শক্তিকেই সম্ভাব্য ‘মহাজোট’ বলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আগামী দু’টি অর্থবর্ষেও ভারতের জিডিপির হার বাড়বে, পিছিয়ে পড়বে চিন: বিশ্বব্যাঙ্ক
আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খান, রাজ্যে চাঙ্গা গেরুয়া শিবির
এই অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙেই তেলঙ্গানা হয়েছে। মাসখানেক আগেই দ্বিতীয়বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন কেসিআর। তিনি আবার বিজেপি এবং কংগ্রেসের সমদূরত্ব রেখে আলাদা একটি ফ্রন্ট গঠনের তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজে উদ্যোগী হয়ে নবীন পট্টনায়েক এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে প্রস্তাব দিয়েছেন। যদিও দুই মুখ্যমন্ত্রীর কেউই তাতে সাড়া দেননি। এই জোটকে ফেডারেল ফ্রন্ট বলছে রাজনৈতিক শিবির।
তবে কি ফেডারেল ফ্রন্টে যাচ্ছেন নবীন? জল্পনা উড়িয়েও দেননি আবার ‘হ্যা’ও বলেননি। বিজেপি-কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্বের লাইন কি তবে ‘একলা চলো’? এবং ভোটের পর পরিস্থিতি অনুযায়ী সমীকরণ? এই প্রশ্নেও ধোঁয়াশা জিইয়ে রেখেছেন বিজেপি নেতা।
নবীন অবশ্য বারবারই অবস্থান বদলেছেন। আর রাজনৈতিক মহলে নানা রকম জল্পনা ছড়িয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ-র প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দকে সমর্থন করেছিলেন। অথচ উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনের সময় ভিড়ে যান বিরোধী পক্ষে। যদিও কংগ্রেস এখনও মনে করে, ক্রস ভোটিং করে বেঙ্কাইয়া নায়ডুর জয়ের পথ মসৃন করেছিলেন বিজেডি সাংসদরা। এর পর আসে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচন। তখন আবার প্রধানমন্ত্রী মোদীর ফোন পেয়েই এনডিএ প্রার্থী হরিবংশ নারায়ণ সিংহকে সমর্থন করে বিজেডি। কার্যত দলের আট সাংসদের ভোটেই জয় নিশ্চিত হয় এনডিএর। তার পর থেকে মনে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছিলেন, আগামী লোকসভা ভোটে এনডিএ জোটের সঙ্গেই থাকতে পারেন। কিন্তু এ দিন সেই সম্ভাবনা আপাতত খারিজ করে এবং বিরোধী জোটেও না থাকার কথা জানিয়ে নয়া জল্পনা উস্কে দিলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy