Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Jammu & Kashmir

জম্মু-কাশ্মীরে সরকার ছাড়ল বিজেপি, মেহবুবার ইস্তফা

ইদ মিটতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন। এর পরেই পিডিপি-র সঙ্গে কেন্দ্রের বিরোধ প্রকাশ্যে এসে পড়ে।

ভেঙে গেল সাড়ে তিন বছরের জোট। ফাইল চিত্র।

ভেঙে গেল সাড়ে তিন বছরের জোট। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৮ ১৪:৩৯
Share: Save:

প্রায় সাড়ে তিন বছরের সম্পর্ক ছিঁড়ে বেরিয়ে এল বিজেপি। যার জেরে ইস্তফা দিলেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। কারণ, বিজেপি-র সঙ্গে জোট বেঁধেই মেহবুবার দল পিপল্‌স ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) এত দিন উপত্যকায় সরকার চালাচ্ছিল।পরে মেহবুবা মুফতি সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন, উপত্যকায় পেশীশক্তির জোর চলবে না।

মঙ্গলবার দুপুরে নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে জম্মু-কাশ্মীরে সরকার থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্তের কথা জানান বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব। তিনি বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরে পিডিপি-র সঙ্গে পথচলা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সরকার থেকে সরে আসা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।’’ এর পরেই রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে আসেন। বিজেপি জম্মু কাশ্মীরে রাজ্যপালের শাসন চায়, বৈঠকে এমনটা জানিয়েছিলেন রাম মাধব।

জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় মোট ৮৭টি আসন। ২০১৪-র মে মাসে উপত্যকায় যে নির্বাচন হয়, সেখানে পিডিপি পেয়েছিল ২৮টি আসন। বিজেপি পেয়েছিল ২৫টি। এ ছাড়া ওমর আবদুল্লার দল ন্যাশনাল কনফারেন্স ১৫টি, কংগ্রেস ১২টি এবং অন্যান্যরা ৭টি আসন পেয়েছিল। বিজেপি এবং পিডিপি যৌথ ভাবে ম্যাজিক সংখ্যা ৪৪ ছাড়িয়ে ৫৩-য় পৌঁছয়। সেই জোটই এত দিন সরকার চালাচ্ছিল উপত্যকায়।

আরও পড়ুন: কেজরী-টুইটে প্রধানমন্ত্রীই লক্ষ্য রাহুলের

রাম মাধব ওই সাংবাদিক বৈঠকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন। তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাস, হিংসা এবং কট্টরবাদ উপত্যকায় সাধারণ নাগরিকদের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করছিল। শুজাত বুখারির খুন তার উদাহরণ।’’ তিনি জানান, জম্মু-কাশ্মীর মন্ত্রিসভা থেকে বিজেপি-র সকল সদস্য আজই পদত্যাগ করবেন। এর পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘দেশের নিরাপত্তা এবং সংহতির মতো বৃহৎ স্বার্থকে মাথায় রেখে বলতেই হয়, জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সে কারণেই আমরা সরকার থেকে সরে এসে রাজ্যের ভার রাজ্যপালের হাতে তুলে দিতে চেয়েছি।’’

আরও পড়ুন: রাহুলের জন্মদিনে শুভেচ্ছা মোদীর, তোড়জোড় কংগ্রেসে

রমজানের মাসে উপত্যকা জুড়ে যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু, সেই সংঘর্ষ বিরতির সুযোগ নিয়ে উপত্যকায় একের পর এক নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। দু’টি ভিন্ন ঘটনায় খুন হয়েছেন সাংবাদিক শুজাত বুখারি এবং সেনা জওয়ান ঔরঙ্গজেব। ইদ মিটতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন। এর পরেই পিডিপি-র সঙ্গে কেন্দ্রের বিরোধ প্রকাশ্যে এসে পড়ে।

যদিও রাম মাধব এ দিন স্বীকার করে নিয়েছেন, পিডিপি-র সঙ্গে এই বিরোধ জোটের শুরুর দিন থেকেই ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘আদর্শগত কোনও মিল না থাকা সত্ত্বেও আমরা সে দিন উপত্যকায় পিডিপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলাম শুধু জনগণের রায়কে সম্মান জানাতে। না হলে, সেই সময়েই রাজ্য রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের শাসনে চলে যেত।’’

আরও পড়ুন: এবার বন্যার সতর্কতা তিন দিন আগে, গুগলের সঙ্গে চুক্তি কেন্দ্রের

পাল্টা সাংবাদিক বৈঠকে মেহবুবা মুফতিও বলেন, ‘‘ক্ষমতার জন্য নয়, উপত্যকায় শান্তি ও মানুষের আস্থা ফেরাতে জোট করেছলাম। চেয়েছিলাম অস্ত্রবিরতি চুক্তি জারি রাখতে। পাকিস্তানের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে ছিলাম। আর সেই প্রক্রিয়ায় কাজও হয়েছিল। জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরেছিল। কিন্তু অস্ত্রবিরতি তুলে নেওয়া হয়েছে। এটা কাশ্মীরের মানুষ মেনে নিতে পারবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP PDP Jammu & Kashmir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE