ফাইল চিত্র
এমনিতেই বিজেপির অন্দরে মোদী-বিরোধী বলে পরিচিত তিনি। ছেলেকে অর্থ থেকে কম গুরুত্বের মন্ত্রকে সরাতেই যশবন্ত সিন্হা ফের সরব হলেন নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ।
মোদী জমানায় লালকৃষ্ণ আডবাণী-ঘনিষ্ঠ অন্য প্রবীণ নেতাদের মতো তাঁরও গুরুত্ব প্রায় নেই! তা নিয়ে অসন্তুষ্ট যশবন্ত আডবাণী, মুরলী মনোহর জোশীদের সঙ্গে নিয়ে মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহও করেছিলেন। তবে ছেলে জয়ন্ত সিন্হা মোদী-সরকারের অর্থ প্রতিমন্ত্রীর পদে থাকায় দ্রুত চুপও করে গিয়েছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহেই জয়ন্তকে অর্থ থেকে সরিয়ে কম গুরুত্বের বিমান মন্ত্রকে পাঠিয়ে দিয়েছেন মোদী। আইআইটি, হার্ভার্ডের প্রাক্তনী জয়ন্ত এতে ক্ষুব্ধ হলেও চুপচাপ কাজ শুরু করেছেন নয়া মন্ত্রকে। আর ছেলের গুরুত্ব কমতেই ফের স্বমহিমায় যশবন্ত! তবে অতীতের মতো সরাসরি নয়, অত্যন্ত কৌশলে মোদীকে খোঁচা মেরেছেন বাজপেয়ী সরকারের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। যে কারণে চূড়ান্ত বিড়ম্বনায় পড়েও আপাতত কিল হজম করতে হচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বকে।
মোদী জমানায় দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার নিয়ে সরকারের তরফে যতই হইচই হোক, দেশের অন্দরে তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠেছে। কিছু দিন আগেই এই বৃদ্ধির হারকে ‘অতিশয়োক্তি’ বলেছে মার্কিন বিদেশ দফতর। যশবন্তের দাবি, নতুন পদ্ধতিতে সরকারি ভাবেই কিছু গরমিল থাকছে। যে গরমিলের পরিমাণ বাড়ছে। আর্থিক বৃদ্ধির হার মাপার পদ্ধতি বদলে ফেলায় গত দুই অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার ৭.২% ও ৭.৬%-য় পৌঁছেছে। কিন্তু গরমিল বাদ দিলে বৃদ্ধির হার ৩.৯%-এ নেমে আসে! নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী।
যশবন্তের যুক্তি, শিল্পে উৎপাদন বাড়ছে না। মাসের পর মাস রফতানি কমছে। ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। বেসরকারি লগ্নি আসছে না। কৃষিতে দুর্দশা চলছে। পরিষেবা ক্ষেত্র একই জায়গায় আটকে। ‘‘তা হলে এই আর্থিক বৃদ্ধি আসছে কোথা থেকে’’— প্রশ্ন তোলার সঙ্গে সঙ্গে পরোক্ষে মোদীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন, দেশের সমালোচকদের কথা না শুনলেও অন্তত ‘ভাল বন্ধু’ আমেরিকার কথা তো শোনা উচিত! যশবন্তের কৌশলী খোঁচায় আপাতত চুপ থাকলেও বিষয়টি ছেড়ে দেবে না বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর অমিত শাহ তাঁর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘যশবন্ত সিন্হা বরাবরই মোদী-শাহের বিরুদ্ধে, এটি নতুন নয়। কিন্তু তাঁর ছেলের বিদায়ের পরই অর্থনীতি নিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy