Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গোমাংসে অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপির

অসম ও মণিপুরের পরে বাকি রাজ্যগুলিতেও বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার গঠন মোদী-অমিত শাহদের লক্ষ্য। কিন্তু আজ তাঁদের অস্বস্তি বাড়িয়ে মেঘালয়ের আরও এক বিজেপি নেতা দল ছেড়েছেন। মোদী সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গারো পাহাড়ে ‘বিফ ও বিচি (স্থানীয় মদ) পার্টি’-র আয়োজন করেছিলেন উত্তর গারো হিলের জেলা বিজেপি সভাপতি বাচু মারাক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৭ ০৩:৪৭
Share: Save:

মেঘালয় থেকে গোমাংস-বিতর্ক ক্রমশ দানা বাঁধছে উত্তর-পূর্বের অন্যান্য রাজ্যে। ফলে অস্বস্তিতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনকী উত্তর-পূর্বের বাইরেও এই বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। দলীয় একটি সূত্রের বক্তব্য, গবাদি পশু কেনাবেচা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক নির্দেশিকা ঘিরে গোটা দেশেই যে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা’র প্রচার আরও জোরদার হবে, সে বিষয়ে একমত শীর্ষ নেতারা। পরিস্থিতি কী ভাবে সামাল দেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে বিজেপিতে।

অসম ও মণিপুরের পরে বাকি রাজ্যগুলিতেও বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার গঠন মোদী-অমিত শাহদের লক্ষ্য। কিন্তু আজ তাঁদের অস্বস্তি বাড়িয়ে মেঘালয়ের আরও এক বিজেপি নেতা দল ছেড়েছেন। মোদী সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গারো পাহাড়ে ‘বিফ ও বিচি (স্থানীয় মদ) পার্টি’-র আয়োজন করেছিলেন উত্তর গারো হিলের জেলা বিজেপি সভাপতি বাচু মারাক। তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হয়। তিনি আজ দল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এই বিতর্কে আগেই ইস্তফা দিয়েছেন পশ্চিম গারো পাহাড়ের বিজেপি সভাপতি বার্নার্ড মারাক।

আরও পড়ুন: গো-রক্ষায় জাতীয় নিরাপত্তা আইন!

উপজাতি ও খ্রিস্টান প্রধান মেঘালয়ে গোমাংস প্রিয় খাদ্য। কেন্দ্রের নির্দেশিকা সেখানে যাতে বলবৎ করা না হয়, তার জন্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দরবার করছেন মেঘালয়ের বিজেপি নেতৃত্ব। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ওই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে এই নির্দেশিকাকে সামনে রেখে বিজেপি-বিরোধী প্রচারকে তুঙ্গে নিয়ে গিয়েছে রাজ্যে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস। শীর্ষ নেতৃত্বের উদ্দেশে রাজ্যের বিজেপি নেতারা তাই বলছেন, মেঘালয়ের সব উপজাতির মধ্যেই গোমাংস জনপ্রিয়। রাজ্যের ৮০ শতাংশ মানুষ শুধু নন, মেঘালয়ের বিজেপি নেতা-কর্মীদের সিংহভাগই গোমাংসভোজী। আজ মারাক এবং বার্নার্ড বলেছেন, ‘‘উপজাতি ও খ্রিস্টানদের খাদ্যাভ্যাস বদলানোর চক্রান্ত করেছে বিজেপি।’’ তাঁদের প্রশ্ন, আমিষভোজী হিন্দুরা যে মাংস খান, তার উপরে কেন নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে না? ১০ জুন তিনি নিজের উদ্যোগে ‘বিফ পার্টি’ করছেন বলে জানিয়েছেন বার্নার্ড। মারাক সেখানে আসবেন। বহু বিজেপি নেতা-কর্মীও ওই পার্টিতে যোগ দেবেন বলে তাঁরা ইঙ্গিত দিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে উত্তর-পূর্বে বিজেপির জোট-শরিক এনপিপি-ও প্রশ্ন তুলেছে। দলের সভাপতি কনরাড সাংমার দাবি, উত্তর-পূর্বের জনগোষ্ঠীগুলির উপরে বিজেপির ধারণা বা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। কারণ, উত্তর-পশ্চিম ভারতের নিরামিষাশী নেতাদের এখানকার আবেগ, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি নিয়ে ধারণাই নেই। এনপিপি মণিপুর বিজেপি জোট সরকারেরও শরিক। সেখানেও সরকারকে সতর্ক করেছেন কনরাড। খ্রিস্টান প্রধান নাগাল্যান্ডেও এনপিএফ-বিজেপি জোটের সরকার চলছে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ ও আশঙ্কা ছড়িয়েছে সেখানেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Beef BJP বিজেপি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE