বিজেপি তাঁকে লোকসভায় টিকিটই দিচ্ছে না, জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। —ফাইল ছবি
মোদী-অমিত শাহের অবস্থান বা মন্তব্য নিয়ে বহুবার তিনি ‘খামোশ’ বলেছেন। এবার সেই শত্রুঘ্ন সিনহাকেই ‘খামোশ’ করার ইঙ্গিত দিল বিজেপি। দলীয় সূত্রে খবর, বিহারিবাবুকে লোকসভা ভোটের টিকিট না-ও দেওয়া হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে জিতে আসা শত্রুঘ্নর পটনা সাহিব লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়াতে পারেন বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার। এ বিষয়ে এখনও ‘কালীচরণ’ শত্রুঘ্নর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বিজেপিতে ‘জানি দুশমন’ শত্রুঘ্নর আত্মপ্রকাশ কার্যত ২০১৪-র লোকসভা ভোটের কিছুদিন পর থেকেই। বাজপেয়ী জমানার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবারও মন্ত্রিত্বের আশা করেছিলেন। কিন্তু ‘নসীব’ হয়নি। আর তার পর থেকেই বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একের পর এক ‘গোলা বারুদ’ ছুড়তে শুরু করেন ‘কালীচরণ’। দলের ‘দো উস্তাদ’ মোদী-অমিত শাহকে কার্যত ‘দো শত্রু’র অবস্থানে বসিয়ে ফেলেন। যখনই দল কোনও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ‘নরম-গরম’ তোপ দেগেছেন পটনা সাহিবের ‘বেতাজ বাদশা’। কখনও বিবেকের ভূমিকায় বলেছেন ‘হোশিয়ার’। কখনও বা খোলামেলা বিরুদ্ধাচারণ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ‘হামসে না টকরানা’। সাম্প্রতিক রাফাল চুক্তি নিয়ে তোপ দেগেছেন, সরব হয়েছেন পেট্রোল ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও।
দল অবশ্য এত দিন তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়নি। তবে ‘বদলা’ নেওয়ার উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসাবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকেই বেছে নেওয়া হতে পারে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। পটনা সাহিব কেন্দ্র দূরে থাক, দল তাঁকে টিকিট দেবে কি না, তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, দলের তরফেই সুকৌশলে সুশীল মোদীর নাম ভাসিয়ে হাওয়া বোঝার চেষ্টা করছে বিজেপি। ভোটারদের এবং অবশ্যই শত্রুঘ্নর মন বোঝার চেষ্টা করছে দল। তারপর হাওয়া বুঝে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: সুইচ দিতেই ভুলে গেলেন বিমানকর্মী! যাত্রীদের নাক-কান দিয়ে রক্ত, জরুরি অবতরণে রক্ষা
মে মাসেও দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, ২০১৯-এও পটনা সাহিব কেন্দ্র থেকেই লড়বেন। জোর দিয়েছিলেন পটনা সাহিব কেন্দ্রের উপরই। বলেছিলেন, ‘‘পরিস্থিতি যাই হোক, লোকসভা কেন্দ্র (পটনা সাহিব) বদল হবে না। সেখান থেকেই তিনি লড়বেন।’’ অর্থাৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে যদিও বা তিনি সমঝোতা করতে রাজি, পরপর দু’বার জেতা পটনা সাহিবের সঙ্গে কোনও ভাবেই নয়।
তবে এই জল্পনা শুরু হওয়ার পর থেকে পটনা সাহিবের টানা দু’বারের সাংসদ শত্রুঘ্নর তরফে অবশ্য এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। কিন্তু ওই সময় যে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তিনি পটনা সাহিবে লড়ার কথা বলেছিলেন, তাতে আরও বড় সংঘাত অবশ্যম্ভাবী বলে মনে করছেন রাজনীতিক বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ।
একটি অনুষ্ঠানে যশবন্ত সিনহার সঙ্গে শত্রুঘ্ন সিনহা। —ফাইল ছবি
আরও পডু়ন: ০.৪ শতাংশ সুদ বাড়ল পিপিএফের, এনএসসি, কেভিপিতেও সুদবৃদ্ধি
জল্পনা আরও রয়েছে। কিছুদিন আগেই মোদী-অমিত শাহ-র বিরুদ্ধে তোপ দেগে দল ছেড়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা। তার পর থেকে বিজেপি বিরোধী জোটের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। কখনও জেলবন্দি লালুপ্রসাদ, কখনও বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা গিয়েছে তাঁকে। শত্রুঘ্ন আবার যশবন্তের ঘনিষ্ঠ। ফলে বিরোধী শিবিরে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনাও দেখছেন রাজনীতির কারবারীরা। যদিও পুরোটাই এখনও জল্পনার পর্যায়ে। ‘ভারত ভাগ্য বিধাতা’ শেষ পর্যন্ত ‘তকদির’-এ কী লিখেছেন, তা অবশ্য সময়ের অপেক্ষা। তবে তার আগে আসন্ন লোকসভা ভোটে পটনা সাহিবের তখত নিয়ে যে বিজেপি-শত্রুঘ্নর চরম সংঘাত শুরু হতে চলেছে, সেটা এখনই বলে দিচ্ছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
(ভোটের খবর, জোটের খবর, নোটের খবর, লুটের খবর- দেশে যা ঘটছে তার সেরা বাছাই পেতে নজর রাখুন আমাদের দেশ বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy