Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
National News

স্বামী চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশে ধর্ষণের অভিযোগ শাহজাহানপুরের তরুণীর

লোদি রোড থানায় ওই যুবতীর অভিযোগ গ্রহণ করে দিল্লি পুলিশ।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:৪৩
Share: Save:

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা স্বামী চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিতে চাইছে না উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এই অভিযোগ তুলে এ বার দিল্লি পুলিশের দ্বারস্থ হলেন ওই রাজ্যের এক আইনের ছাত্রী। ৭২ বছরের ওই নেতার বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, চিন্ময়ানন্দ তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। এবং গত এক বছর ধরে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করছেন।

সোমবার কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরের বাসিন্দা ওই যুবতী। তিনি বলেন, ‘‘স্বামী চিন্ময়ানন্দ আমাকে ধর্ষণ করেছেন। এমনকি, গত এক বছর ধরে আমাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে চলেছেন।’’

এ দিন লোদি রোড থানায় ওই যুবতীর অভিযোগ গ্রহণ করে দিল্লি পুলিশ। এর পর শাহজাহানপুর থানায় তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বছর তেইশের ওই আইন পাঠরতার দাবি, ‘‘শাহজাহানপুর থানা ধর্ষণের অভিযোগ গ্রহণ করতে চায়নি।’’

আরও পড়ুন: ৩৬ দিন পর নিরাপত্তা শিথিল, এখনও ছন্দ ফেরেনি কাশ্মীরে

গত মাসের শেষ দিকে স্বামী চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিয়োতে ওই অভিযোগে চিন্ময়ানন্দের নাম না করলেও তাঁর দাবি ছিল, ‘‘সন্ত সমাজের এক প্রভাবশালী নেতা, যিনি অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিয়েছেন, আমাকে খুনের হুমকি দিচ্ছেন।’’ ওই ভিডিয়োতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে সাহায্যের অনুরোধও করেন তিনি।

ওই যুবতীর বাবাও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছে তাঁর অভিযোগে এক প্রভাবশালী নেতার কথা বলেছিলেন। ভিডিয়োটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার পর তা নিয়ে আলোড়ন পড়ে যায়। এর পরে সপ্তাহখানেক ওই তরুণী কোনও খোঁজ মেলেনি। সে সময় বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ভয় দেখানোর অভিযোগও দায়ের করা হয়। ইতিমধ্যে চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

আরও পড়ুন: ভারতের বিরুদ্ধে বড়সড় নাশকতার ছক, গোপনে মাসুদকে জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছে পাকিস্তান!

গত ৩০ অগস্ট রাজস্থানের জয়পুরে ওই তরুণীর সন্ধান মেলার পর তাঁকে সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা হয়। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘রবিবার সিট-এর আধিকারিকেরা আমাকে ১১ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাঁদের ধর্ষণের কথা জানিয়েছিলাম। তবে সব কিছু বলার পরেও ওঁরা চিন্ময়ানন্দকে গ্রেফতার করেননি।’’

গোটা ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ভূমিকা। যদিও প্রথম থেকেই ওই তরুণীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বামী চিন্ময়ানন্দ। পুলিশকে এড়িয়ে চলছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। তবে এ দিন চিন্ময়ানন্দের আইনজীবী ওম সিংহ সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই মামলা এড়াচ্ছেন না স্বামীজি। এখন তিনি আধ্যাত্মিক কাজকর্মে ব্যস্ত রয়েছেন। তবে দিল্লি পুলিশ তলব করলে তিনি নিশ্চয়ই তাদের সামনে হাজিরা দেবেন।’’

অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানার মন্ত্রী স্বামী চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে এর আগেও ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। ২০১১ সালে তাঁর বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ করেন এক তরুণী। এমনকি, তাঁকে খুন করারও হুমকি দেন চিন্ময়ানন্দ। কিন্তু গত বছরের এপ্রিলে যোগী আদিত্যনাথ উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় দখলের পর সেই অভিযোগটি তুলে নেওয়া হয়। তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়ে যোগী সরকারকে। এ বার শাহজাহানপুরের ওই তরুণীর অভিযোগ ঘিরে ফের প্রশ্নের মুখে যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE