Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কেজরীকে রুখতে কি প্রধানমন্ত্রীর দশ সভা!

আগামী মঙ্গলবার দিল্লি বিধানসভায় মনোনয়ন পেশের শেষ দিন। বিজেপি আজ দিল্লির ৭০টি আসনের মধ্যে ৫৭টিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।

নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।

নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:০৭
Share: Save:

অরবিন্দ কেজরীবালকে ভোটে মাত করতে হিমশিম খাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী ও সনিয়া গাঁধীর দল। এমনকি নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে অন্তত দশটি সভা করুন, এমন দাবিও উঠছে বিজেপির অন্দরে।

আগামী মঙ্গলবার দিল্লি বিধানসভায় মনোনয়ন পেশের শেষ দিন। বিজেপি আজ দিল্লির ৭০টি আসনের মধ্যে ৫৭টিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের নয়াদিল্লি আসনেই এখনও প্রার্থী ঠিক করতে পারেনি তারা। কেজরীর সামনে প্রার্থী হয়ে ‘হারতে’ও রাজি নন অনেকে।

কেজরীবালের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসও দিনভর দোলাচলে। দিল্লির দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা কীর্তি আজাদ এক বার নির্ভয়ার মা আশা দেবীকে নিজের দলে স্বাগত জানিয়ে ফেললেন। ‘মা তুঝে সালাম’ লিখে কীর্তি টুইট করলেন একটি সংবাদ প্রতিবেদন, যেখানে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লি কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী হতে পারেন আশা দেবী। কিন্তু সেই জল্পনা উড়িয়ে খোদ আশা দেবীই বললেন, ‘‘আমি রাজনীতিতে আসার পক্ষপাতী নই। শুধু নিজের মেয়েকে সুবিচার দিতে চাই।’’

গত রাতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা দিল্লির ভোট নিয়ে আলোচনা করেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা। মাঝরাতে শেষ হয় বৈঠক। বিজেপির এক সূত্রের দাবি, দিল্লিতে জয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যথেষ্টই আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু বিজেপির মধ্যে সে ভাবে আশার সঞ্চার হয়নি। সেই কারণেই দলের অনেকে চান, যে-হেতু প্রধানমন্ত্রীই বিজেপির মুখ, তাই দিল্লির ভোটের আগে আগামী কুড়ি দিনে নরেন্দ্র মোদীর অন্তত দশটির মতো সভা হোক। যদিও বিজেপির এক শীর্ষ সূত্রের মতে, বেশি সভা করলে বিরূপ বার্তা যেতে পারে। কারণ, দিল্লি একটি ছোট এলাকা। আপাতত দু’-তিনটি সভা চূড়ান্ত করা হোক। প্রয়োজন হলে পরে বাড়ানো যাবে।

তবে ‘কার্পেট বম্বিং’-এর কায়দায় দলের সব শীর্ষ নেতা, সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের দিল্লির কোণায় কোণায় ছড়িয়ে দিচ্ছে বিজেপি। অমিত শাহেরা মনে করছেন, প্রতিপক্ষের প্রধান মুখ যে-হেতু কেজরীবাল, তাই তাঁকে নিজের কেন্দ্রে যতটা সম্ভব বেঁধে রাখা দরকার। তাই নয়াদিল্লি কেন্দ্রে একটি ওজনদার মুখ খুঁজছেন বিজেপি নেতৃত্ব। আর সেখানেই সমস্যা।

এক সময়ে কেজরীবালের পুরনো সহযোদ্ধা কিরণ বেদীকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নামিয়ে সফল হয়নি বিজেপি। এ বারেও কুমার বিশ্বাস, সাজিয়া ইমলির মতো কেজরীর পুরনো সঙ্গীদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কেউই খুব একটা আগ্রহী নন। বিজেপি শিবিরে পঞ্জাবি গায়ক দালের মেহেন্দির নাম নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এখনও যে ১৩ আসনে এনডিএ-র প্রার্থী ঘোষণা বাকি, তার থেকে কয়েকটি তাদের দিতে হবে অকালি, জেডিইউ ও হরিয়ানার দুষ্মন্ত চৌটালার দলকে। ইতিমধ্যে হলফনামায় ভুয়ো তথ্য দেওয়ার দায়ে প্রাক্তন আইনমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ তোমরের গত ভোটের জয় আজ দিল্লি হাইকোর্টে বাতিল হয়ে যাওয়ায় সামান্য অস্বস্তি থাকছে আপের জন্য।

কংগ্রেস আজ সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার ছবি-সহ ‘কংগ্রেসওয়ালি দিল্লি’ স্লোগান তুলে প্রচার শুরু করেছে। কিন্তু আজ সকালে দশ জনপথে আরও এক দফা বৈঠকের পরেও দিল্লির তালিকা চূড়ান্ত হয়নি। সনিয়ার গড়ে দেওয়া কমিটি কাল ফের বৈঠকে বসছে।

আর এই ভোট-রাজনীতিরই অন্যতম বিষয় হয়ে উঠেছে নির্ভয়া-কাণ্ড। কীর্তি আজাদ যেমন নির্ভয়ার মাকে টেনে বিতর্ক বাধিয়েছেন, তেমনই বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি চার দোষীর ফাঁসিতে বিলম্বের দায় চাপিয়েছেন কেজরীবালের উপরেই। যার উত্তরে কেজরী বলেছেন, ‘‘অন্তত এই বিষয়ে রাজনীতি না-করে আমরা কি একসঙ্গে কাজ করতে পারি না?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE