Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

বিজেপি বিধায়ক বেরিয়ে যাওয়ার পর গঙ্গাজলে ‘শুদ্ধ’ করা হল মন্দির

হামিরপুরের মুসকুরা খুর্দ গ্রামের অধিকাংশ মানুষজনের বিশ্বাস, মহাভারতের সময় থেকেই রয়েছে ধ্রুম ঋষি নামে ওই মন্দিরের অস্তিত্ব। তবে ওই মন্দিরের গর্ভগৃহে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। তাঁরা মন্দির চত্বরের বাইরে থেকে প্রার্থনা জানাতে পারেন।

‘পবিত্র’ করা হচ্ছে সেই মন্দির।

‘পবিত্র’ করা হচ্ছে সেই মন্দির।

সংবাদ সংস্থা
কানপুর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৮ ২১:০৮
Share: Save:

যে ‘হিন্দুত্ববাদ’ তাঁদের রাজনীতির সবচেয়ে বড় হাতিয়ার, সেই ‘হিন্দু’দের মধ্যেই ছোঁয়াছুয়ি আর বিদ্বেষ-বিতৃষ্ণার বীজ কতটা শক্তিশালী— তা হাড়ে হাড়ে টের পেলেন বিজেপিরই এক বিধায়ক। উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর জেলার রথ কেন্দ্রের মহিলা বিধায়ক মনীষা অনুরাগী, ওই জেলারই একটি গ্রামের এক মন্দিরে ঢুকেছিলেন। তিনি ফিরে যাওয়ার পর গঙ্গাজলে ‘শুদ্ধ’ করা হয় গোটা মন্দির। কেন? কারণ, তিনি প্রথমত মহিলা এবং সেই সঙ্গে দলিতও।

হামিরপুরের মুসকুরা খুর্দ গ্রামের অধিকাংশ মানুষজনের বিশ্বাস, মহাভারতের সময় থেকেই রয়েছে ধ্রুম ঋষি নামে ওই মন্দিরের অস্তিত্ব। তবে ওই মন্দিরের গর্ভগৃহে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। তাঁরা মন্দির চত্বরের বাইরে থেকে প্রার্থনা জানাতে পারেন। সেখানে কোনও মহিলার প্রবেশে নাকি খরার প্রকোপে পড়তে পারে গোটা গ্রাম।

বিজেপি বিধায়ক মনীষা অনুরাগী এ সবের কিছুই জানতেন না। নিজের দলের কর্মী-সমর্থকদের অনুরোধেই গত ১২ জুলাই পা রেখেছিলেন মন্দিরের গর্ভগৃহে। তাতে বাধা দিয়েছিলেন গ্রামের মানুষজনের একাংশ। সে সময় মন্দিরের পুরোহিত উপস্থিত ছিলেন না। তিনি থাকলে কী হত, তা জানিয়েছেন পুরোহিত নিজেই। পুরোহিতের কথায়, “আজ পর্যন্ত এই মন্দিরে কোনও মহিলা প্রবেশ করেননি। মনীষা অনুরাগী যখন এসেছিলেন আমি ছিলাম না। না হলে আমি কখনওই তাঁকে এখানে ঢুকতে দিতাম না।”

বিজেপি বিধায়ক মনীষা অনুরাগী। ছবি: সংগৃহীত।

বিধায়ক হলেও দলিত মহিলার এই ‘পাপ’-এর প্রায়শ্চিত্ত করতেই এর পর ব্যবস্থা নেন পুরোহিত। মন্দির ‘শুদ্ধ’ করা হয় গঙ্গাজলে। সেই সঙ্গে বিগ্রহটি ‘শুদ্ধ’ করতে পাঠানো হয় ইলাহাবাদে। অনেক বাসিন্দা মন্দিরের একটি ইট খুলে নিয়ে ইলাহাবাদে গঙ্গায় তা চুবিয়ে ‘পরিশুদ্ধ’ করতে গিয়েছেন। কট্টর ‘হিন্দুত্ববাদী’দের এ হেন আচরণে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়ক মনীষা অনুরাগী। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “এমনটা ঘটে থাকলে তা মহিলাদের পক্ষে অত্যন্ত অপমানজনক।” এখানেই থেমে থাকেননি মনীষা। একে ‘নির্বোধদের কাজ’ বলেই আখ্যা দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন
পাঁচ গার্লফ্রেন্ডের আবদার মেটাতে এ কী করলেন ৬৩ বছরের রোমিও!

শুধু মহিলা বলেই নয়, গোটা কাণ্ডের পিছনে যে দলিত-বিরোধী মানসিকতাও কাজ করছে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে গ্রামপ্রধান ওমপ্রকাশ অনুরাগীর কথায়। তাঁর মন্তব্য: “বিধায়ক ও আমি দু’জনেই দলিত হওয়ায় আমাদের টার্গেট করেছেন কয়েক জন গ্রামবাসী।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP MLA Superstition Manisha Anuragi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE