Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

৩৭০ ধারাকেই নিশানা বিজেপির 

সেই অস্ত্র কাজে লাগাতে বিজেপি যে কসুর করবে না, তা আজ বুঝিয়ে দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের ভারপ্রাপ্ত নেতা রাম মাধব। জনসঙ্ঘের আমল থেকেই সংঘ পরিবারের নেতারা সংবিধানের ৩৭০ ধারায় জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ সুবিধা ও অধিকার দেওয়ার বিরুদ্ধে।

মেহবুবা মুফতি। ফাইল চিত্র।

মেহবুবা মুফতি। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ০৩:৫৫
Share: Save:

মেহবুবা মুফতির সঙ্গ ত্যাগের সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপি ফিরল নিজের ৩৭০ ধারার রাজনীতিতে।

ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য রাম মন্দিরের বিষয় ছিলই। তিন তালাক তুলে দিয়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর রবও উঠে গিয়েছে। আর জম্মু-কাশ্মীরে জোট ভেঙে বেরিয়ে আসার পরে এ বার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার দাবি তুলছে বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে মেরুকরণের রাজনীতির সব হাতিয়ারই এখন বিজেপির হাতে চলে এসেছে।

সেই অস্ত্র কাজে লাগাতে বিজেপি যে কসুর করবে না, তা আজ বুঝিয়ে দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের ভারপ্রাপ্ত নেতা রাম মাধব। জনসঙ্ঘের আমল থেকেই সংঘ পরিবারের নেতারা সংবিধানের ৩৭০ ধারায় জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ সুবিধা ও অধিকার দেওয়ার বিরুদ্ধে। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে রাম মাধবের যুক্তি, ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি বিজেপির প্রধান কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে। এ বিষয়ে সংসদই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

পিডিপি-র সঙ্গে জোট করে বিজেপি জম্মু-কাশ্মীরে সরকারে এলেও মেহবুবা এত দিন ৩৭০ ধারা নিয়ে এগোতে দেননি। শরিকি চাপের মুখেও কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধার প্রশ্নে আপস করতে রাজি হয়নি তিনি। কিন্তু ৩৭০ ধারাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে। মামলায় বলা হয়েছিল, ৩৭০ ধারা কোনও স্থায়ী বন্দোবস্ত ছিল না। কিন্তু গত এপ্রিলে শীর্ষ আদালত রায় দেয়, সংবিধানের ৩৭০ ধারা কোনও অস্থায়ী বন্দোবস্ত নয়। সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ে স্বস্তি পেয়েছিলেন মেহবুবা। কিন্তু ইতিমধ্যে সংবিধানের ৩৫এ ধারার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের হয়েছে। যে ধারায় বলা হয়েছে, ১৯৫৬ সালে গৃহীত জম্মু-কাশ্মীরের সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা কারা।

সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র ইতিমধ্যেই দাবি তুলেছে, এ বিষয়ে বিতর্ক প্রয়োজন। গরমের ছুটির পরে অগস্টে এই মামলার শুনানি। পিডিপি ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতাদের আশঙ্কা, শুনানিকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক খাড়া করবে বিজেপি। সে ক্ষেত্রে জম্মু-কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্তি নিয়েও বিতর্ক শুরু করতে হবে।

এখানেই প্রমাদ গুণছেন কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের মতে, ভূ-স্বর্গের ভালমন্দের কথা ভেবে নয়, হিন্দি বলয়ে মেরুকরণকে পাখির চোখ করে ৩৭০ ধারা বিলোপের দাবিতে ফের মাঠে নামতে চাইছে সঙ্ঘ পরিবার। আর বিজেপি সূত্রের মতে, জম্মু-কাশ্মীরে রাজ্যপাল শাসন জারি হওয়ায় কেন্দ্রই রাজ্যপালের মাধ্যমে রাজ্য চালাবে। ফলে সুপ্রিম কোর্টেও কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধার বিরুদ্ধে সরব হতে অসুবিধা হবে না। তবে প্রশ্ন উঠেছে, কাশ্মীরের মানুষের মতের বিপক্ষে গিয়ে রাজ্যপাল ৩৭০ ধারা বিলোপের পক্ষে আদৌ কতটা জোরালো অবস্থান নিতে পারবেন? বিজেপি নেতাটির পাল্টা বক্তব্য, রাজ্যপালকে আখেরে কেন্দ্রের মতামতকেই গুরুত্ব দিতে হয়। কেন্দ্র যা চাইবে, রাজ্যপাল সেটাই করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE