Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ত্রিপুরায় কেমন ‘গণতন্ত্র’,শাসককে বিঁধল সিপিএম

ত্রিপুরার শান্তিরবাজার মহকুমার মুহুরীপুরে বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের প্রাক্তন কর্মী নিরঞ্জন চক্রবর্তী ও তাঁর ভাই হারাধনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাদলবাবু।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৮
Share: Save:

দলেরই ছাত্র আন্দোলনের প্রাক্তন কর্মী অসুস্থ, তাঁর ভাই ক্যান্সারে আক্রান্ত। তাঁদের বাড়িতে দেখতে গিয়ে ত্রিপুরার প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বিরোধী দলের উপ-নেতা বাদল চৌধুরীকে বিজেপি কর্মীদের হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ করল সিপিএম। ত্রিপুরায় বিজেপির রাজত্বে গণতন্ত্রের কোনও অস্তিত্ব নেই, এই অভিযোগেই সরব তারা। সেই সঙ্গেই ত্রিপুরার বিজেপির অপশাসনের বিরুদ্ধে সিপিএম প্রতিবাদ করছে না, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগেরও পাল্টা জবাব দিলেন দলের নেতারা।

ত্রিপুরার শান্তিরবাজার মহকুমার মুহুরীপুরে বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের প্রাক্তন কর্মী নিরঞ্জন চক্রবর্তী ও তাঁর ভাই হারাধনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাদলবাবু। তাঁর অভিযোগ, সেই সময়েই বিজেপির এক দল কর্মী-সমর্থক ঘিরে ফেলে ‘বাদল চৌধুরীর মুহুরীপুর আসা চলবে না’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁকে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য হুমকিও দেওয়া হয়। বেশ কিছু ক্ষণ ঘেরাও হয়ে থাকতে হয় তাঁকে। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজীব ভট্টাচার্য অবশ্য ঘটনার সঙ্গে শাসক দলের যোগ অস্বীকার করেছেন।

ঘটনার পরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘বর্বর বিজেপি রাজত্বে আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের কোনও অস্তিত্ব নেই, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা ও কর্মীদের স্বাধীন ভাবে চলাফেরার কোনও অধিকার নেই— এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে ঘিরে স্লোগান তুলে হুমকি প্রদর্শনের ঘটনা তার আর একটি জ্বলন্ত প্রমাণ’।

এ বার তৃণমূলের মুখপত্রের উৎসব সংখ্যায় ‘কাণ্ডারীর কলমে’ ত্রিপুরারই দৃষ্টান্ত দিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা লিখেছেন, সে রাজ্যে গণতন্ত্র কাঁদছে। মানুষের সব অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘এই সময় আমি বিস্মিত সিপিএম বন্ধুদের ভূমিকা দেখে! রাজ্যটা বিজেপির হাতে তুলে দিয়ে চুপ করে বসে আছে। কোনও আন্দোলন নেই, প্রতিবাদ নেই। যত রাগ আমাদের মা-মাটি-মানুষের সরকারের উপরে। যাদের ‘ত্রিপুরা অভিযান’ করার কথা, তারা করছে ‘নবান্ন অভিযান’!

সিপিএমের তরফে পাল্টা বলা হয়েছে, ত্রিপুরায় বিজেপির সন্ত্রাস নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে পথে নেমে প্রতিবাদ ছাড়াও সংসদ চত্বরে ধর্না দিয়েছে বামেরা। ত্রিপুরায় প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাম কর্মী-সমর্থকেরা খুন হয়েছেন, বহু ঘরবাড়ি ভাঙা হয়েছে। সিপিএমের বক্তব্য, ত্রিপুরায় কংগ্রেস ছেড়ে যাঁরা তৃণমূল হয়েছিলেন, তাঁরাই বরং বিজেপিতে গিয়ে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। দলের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘ত্রিপুরার সন্ত্রাস নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে প্রতিবাদ জানাতে গেলে তিনি সিপিএমের সাংসদ ঝর্না দাস বৈদ্যকে বিজেপিতে যোগ দিতে বলেছিলেন। ঝর্না জবাবে তাঁকে বলেন, যদি পাঁচটা লোকও সিপিএম করে, তা হলেও তারা বিজেপির রাজনীতির প্রতিবাদ করে যাবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Tripura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE