Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
National News

জন্ম থেকে হাত নেই, পা দিয়ে লিখেই দ্বাদশ শ্রেণীতে ৬৩% পেল আঁচল

অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলি জেলা। সেখানেই থাকে ১৭ বছরের আঁচল রাউত। নিকোলাসের সঙ্গে তাঁর রক্তের সম্পর্ক নেই, কিন্তু মিল আছে অনেক। হাত বা পা কোনওটাই নেই নিকোলাসের। আঁচলের আছে শুধু দু’টি পা। জন্ম থেকে হাত নেই তাঁর। তবু প্রতিবন্ধকতায় দমে যায়নি সেই মেয়ে।

—প্রতীকী চিত্র

—প্রতীকী চিত্র

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ১৮:৩৩
Share: Save:

অস্ট্রেলিয়ার নিকোলাস জেমস ভুজিকিককে চেনে কী মহারাষ্ট্রের আঁচল? হয়তো চেনে, হয়তো না। হাত বা পা কোনওটাই নেই নিকোলাসের। একবার পড়ে গেলে ফের উঠতে সময় লাগে প্রায় ১০ মিনিট। তবু বিশ্বের জনপ্রিয়তম ‘মোটিভেশনাল স্পিকার’ আজ তিনিই।

অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলি জেলা। সেখানেই থাকে ১৭ বছরের আঁচল রাউত। নিকোলাসের সঙ্গে তাঁর রক্তের সম্পর্ক নেই, কিন্তু মিল আছে অনেক। হাত বা পা কোনওটাই নেই নিকোলাসের। আঁচলের আছে শুধু দু’টি পা। জন্ম থেকে হাত নেই তাঁর। তবু প্রতিবন্ধকতায় দমে যায়নি সেই মেয়ে।

আজ দ্বাদশ শ্রেণির ফলাফলের তালিকায় জ্বলজ্বল করছে আঁচলের নাম। দু’টো হাত নেই। তাই পায়ের আঙুলের ফাঁকে পেন ধরেই পরীক্ষা দিয়েছিল সে। শংসাপত্রে আজ তাঁর নামের পাশে ৬৩ শতাংশ নম্বর।

অস্ট্রেলিয়ার মোটিভেশনাল স্পিকার নিকোলাস জেমস ভুজিকিক

দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ‘রাইটার’ নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল তাকে। কিন্তু তা মানবে কেন আঁচল? নিজের ‘ক্ষমতা’ থাকতে অন্যের ওপর নির্ভর করা তার একেবারে না-পসন্দ। তাই পায়ে লিখেই সফল ১৭ বছরের আঁচল।

আঁচলের কথা মনে পড়ায় ভক্তি ঘাটলেকে। ক্যানসারের থাবায় মাত্র ছয় মাসেই নষ্ট হয়েছিল তাঁর একটি চোখ। বয়স সাত বছর পেরতে না পেরতেই অন্ধকার নেমে এসেছিল অন্য চোখটিতেও। কিন্তু স্বপ্নটা দেখা ছাড়েননি তিনি। সদ্যই নাগপুর ইউনিভার্সিটি থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় সোনার পদক পেয়েছেন ভক্তি। ভক্তি বলেন, ‘‘জীবনটা যেমন, তেমন ভাবেই খুব সুন্দর।’’

ভক্তির মতোই নিজের লক্ষ্যে অবিচল আঁচলও। কিন্তু এতটুকু মেয়ের মনে এত মনের জোর এল কোথা থেকে? আঁচলের যুদ্ধের কথা শোনালেন তাঁর স্কুল বিদ্যাভারতী মহাবিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল রাজাভু মুনঘাটে। গরীব কৃষক পরিবারের মেয়ে আঁচল। হাত না থাকলেও মাঠে বাবাকে আর রোজকার ঘরের কাজে মাকে সাহায্য করে সে। তারপর ৪০ মিনিটের বাস যাত্রায় পৌঁছয় স্কুল। একদিনও তাকে স্কুল কামাই করতে দেখেনি কেউ।

তবে স্কুলে ভর্তির সময় আঁচলকে দেখে কিছুটা আশঙ্কিতই হয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন আঁচল হয়তো পারবে না। হয়তো পিছিয়ে পড়বে বাকি পড়ুয়াদের থেকে। কিন্তু নিজের জেদেই সফল হয়েছে আঁচল, জানালেন রাজাভু।

স্বপ্ন উড়তে থাকে তড়তড়িয়ে। ভক্তির মতোই আঁচলও জানায়, একদিন আইএএস অফিসার হবে সে। বাবা-মার মুখে হাসি ফোটাবেই

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE