Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

উড়ে আসবেন বিচারক, ধর্ষণের সাজা আজ জেলেই

সুরক্ষার স্বার্থে বা বিশেষ প্রয়োজনে আদালত ভবনের বাইরে এজলাস বসানোটা নতুন নয়। নরসিংহ রাও দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি (সাংসদের) ঘুষ দেওয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৫২
Share: Save:

ধর্ষকের শাস্তি ঘোষণা নয়, যেন যুদ্ধের প্রস্তুতি! তা-ও আবার জেলের অন্দরে!

জোড়া ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে রোহতকের সুনারিয়ার জেলা সংশোধনাগারে শাস্তির মেয়াদ শোনার অপেক্ষায় সময় গুনছেন ডেরা সচ্চা সৌদার প্রধান, গুরমিত রাম রহিম সিংহ। গত শুক্রবার তিনি দোষী সাব্যস্ত হতেই ভক্তেরা যে রকম তাণ্ডব চালিয়েছিল, তার পরে আর ঝুঁকি নিতে চাইছে না হরিয়ানা প্রশাসন। শাস্তি ঘোষণার জন্য স্বঘোষিত ওই ধর্মগুরুকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে না। সুরক্ষার স্বার্থে আদালতকেই উড়িয়ে আনা হচ্ছে সুনারিয়ার জেলে চৌহদ্দিতে। জেলটিকে ঘিরে রেখেছে জলপাই উর্দিধারীরা। ইতিমধ্যেই সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক জগদীপ সিংহকে বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আগামিকাল হেলিকপ্টারে উড়িয়ে নিয়ে আসা হবে তাঁকে। জেলে রায় ঘোষণার পরে তিনি ফিরবেনও হেলিকপ্টারে।

সুরক্ষার স্বার্থে বা বিশেষ প্রয়োজনে আদালত ভবনের বাইরে এজলাস বসানোটা নতুন নয়। নরসিংহ রাও দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি (সাংসদের) ঘুষ দেওয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। ২০০০ সালে সেই মামলার বিচার হয়েছিল নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে। ১৯৯৩ সালে হিরো কাপের সম্প্রসারণ নিয়ে দূরদর্শন এবং ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের মধ্যে মামলায় জরুরি ভিত্তিতে অনেক রাতে বিশেষ আদালত বসেছিল তৎকালীন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি এন কে মিত্রের বাসভবনে।

আরও পড়ুন:বাবাই খুনের ছক কষেন, দাবি সাধুর

সে বছরেই বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় একাধিক বার আদালত বসে বেতওয়া নদীর ধারে মাতাটিলা বাঁধের পাশে এক বাংলোর লনে। সেখানে বন্দি ছিলেন বাবরি ধ্বংসে অভিযুক্ত লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর জোশী, উমা ভারতী, বিনয় কাটিয়ারের মতো নেতারা। তখনও লখনউ থেকে উড়িয়ে আনা হতো বিচারকদের। মুম্বই হামলার অন্যতম অভিযুক্ত আজমল কসাবের বিচার হয়েছিল মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলে। প্রাক্তন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশে নিম্ন আদালত এ ভাবে বসতে পারে।’’

হামলার আশঙ্কায় অভিযুক্তেরাও অনেক সময়ে চায়, বিচার হোক জেলেই। যেমন, পাকিস্তানের টাকায় কাশ্মীরে অশান্তি ছড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সাবির শাহ। পটিয়ালা আদালতে তিনি আর্জি জানিয়েছেন যে, তিহাড় জেল থেকেই ভিডিও কনফারেন্সে বা জেলেই বিশেষ আদালতে বিচার হোক তাঁর।

‘রকস্টার গুরু’ গুরমিতের বিচার এত দিন পঞ্চকুলার আদালতে হলেও কাল শুধু শাস্তির মেয়াদ ঘোষণা হবে জেলে। গত শুক্রবার থেকে সেখানেই বিশেষ একটি সেলে রয়েছেন তিনি। জনা বারো বন্দিকে রাখা হয়, এমন একটি ঘরে আপাতত একলা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE