Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
National News

লালু-রাবড়ির বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি, টেন্ডার দুর্নীতির মামলা দায়ের

গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, এ দিন দিল্লি, রাঁচী, পটনা এবং গুরুগ্রামের মোট ১২ জয়াগায় তল্লাশি চালানো হয়। এর মধ্যে ছিল লালু, রাবড়ি এবং পিকে গয়ালের বাড়িও।

লালু প্রসাদ যাদব। পিটিআইয়ের ফাইল চিত্র।

লালু প্রসাদ যাদব। পিটিআইয়ের ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ১২:০৯
Share: Save:

২০০৬-এ রাঁচী ও পুরীতে হোটেল বণ্টনের টেন্ডারে দুর্নীতির অভিযোগে শুক্রবার প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ-সহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করল সিবিআই। বাকি যে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে তাঁরা হলেন— লালুর স্ত্রী রাবড়ি দেবী, ছেলে তেজস্বী, আইআরসিটিসি-র প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর পি কে গয়াল, লালুঘনিষ্ঠ আরজেডি নেতা প্রেম চন্দ্র গুপ্তর স্ত্রী সরলা গুপ্ত।

গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, এ দিন দিল্লি, রাঁচী, পটনা এবং গুরুগ্রামের মোট ১২ জয়াগায় তল্লাশি চালানো হয়। এর মধ্যে ছিল লালু, রাবড়ি এবং পিকে গয়ালের বাড়িও। অভিযোগ, লালু যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন সে সময় রাঁচী ও পুরীতে রেলের দুটো হেরিটেজ হোটেলের টেন্ডার একটি বেসরকারি সংস্থাকে পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছিলেন। পরিবর্তে সেই সংস্থার কাছ থেকে ২ একর জমি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে লালুর বিরুদ্ধে। বেনামি জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগে গত মে-তেই লালু-ঘনিষ্ঠদের অফিস, বাসভবন-সহ ২২টি জায়গায় আয়কর দফতর হানা দিয়েছিল। বেনামে এক হাজার কোটি টাকার জমি কেনাবেচা এবং বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে আয়কর বিভাগ দাবি করে। বেনামি লেনদেনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে লালুপ্রসাদ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।

আরও খবর: নীতীশকে ঠেকাতে উদ্যোগী রাহুল

এ দিন রেলের হোটেলের টেন্ডারে দুর্নীতিতে সিবিআই লালুপ্রসাদ ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায় সাঁড়াশি চাপে পড়লেন আরজেডি সুপ্রিমো। লালুপ্রসাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলেই দাবি করেছেন দলের নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি। এর আগেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছিল দল। তাদের অভিযোগ ছিল, কেন্দ্র সিবিআই ও ইডির মতো তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ব্যবহার করছে।

তবে লালুর এবং তাঁর পরিবারের নতুন করে দুর্নীতি মামলায় জড়ানোর পর, আরও জোরালো কৌতুহল তৈরি হয়েছে বিহারের জোট সরকারের প্রধান তথা আরজেডি নেতা তথা নীতীশ কুমারের ভবিষ্যত্ কর্মপন্থা নিয়ে। গত বেশ কয়েক মাস ধরেই নীতীশ যে ভাবে বিভিন্ন ইস্যুতে মোদী সরকার তথা এনডিএ-র বিভিন্ন সিদ্ধান্তের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাতে জল্পনা বেড়ে চলেছে বিহারের শাসক জোটের ভবিষ্যত্ নিয়ে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সেনার সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং তারপর ৮ নভেম্বর মোদীর বিমুদ্রাকরণের সিদ্ধান্তকে দরাজ সমর্থন জানিয়েছিলেন নীতীশ। তার পর সম্প্রতি এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিরোধী জোটকে অস্বস্তিতে ফেলে দেন। ভবিষ্যতে কংগ্রেস এবং আরজেডি-র সঙ্গে জোট ভেঙে এনডিএ-র দিকে আসার রাস্তা তৈরি রাখছেন নীতীশ, এমনটাই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।

এ দিন দুর্নীতির অভিযোগে লালুর বিরুদ্ধে সিবিআই মামলা দায়ের করার পরই তড়িঘড়ি মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং বিহার পুলিশের ডিজি-কে ডেকে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। নীতীশের ক্যাবিনেটেরই এক জন মন্ত্রী তথা লালুর ছেলে তেজস্বীর নাম এই মামলায় জড়িয়েছে। তেজস্বীকে নিয়ে এখন নীতীশ কী পদক্ষেপ করেন সে দিকে তাকিয়ে গোটা রাজনৈতিক মহল। আগেই জল্পনা চলছিল, বেনামী সম্পত্তির মামলায় তেজস্বীর বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট দাখিল করলেই জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারেন নীতীশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE