Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
KP Sharma Oli

ওলির রাম-ফাঁদ এড়াচ্ছে নয়াদিল্লি

ওলির নিজের রাজনৈতিক ভাগ্য সরু সুতোর উপর ঝুলছে।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি।—ছবি সংগৃহীত।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি।—ছবি সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০ ০৫:০৯
Share: Save:

রামের জন্মভূমি সংক্রান্ত বিতর্কিত মন্তব্যের ফাঁদে পড়তে চাইছে না মোদী সরকার। বিষয়টি নিয়ে বিজেপি-র তাবড় নেতারা যেমন মুখ খোলেননি, তেমন কেন্দ্রের তরফ থেকে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। বরং সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি কেন এই মন্তব্য করলেন, এবং লাগাতার ভারত বিরোধিতা কেন তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন তা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর।

ওলির নিজের রাজনৈতিক ভাগ্য সরু সুতোর উপর ঝুলছে। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, তিনি মরিয়া হয়ে ভারত-বিরোধিতার তাসটি খেলে নিজেকে নেপালের ইতিহাসে একমাত্র জাতীয়তাবাদী নেতার তকমা পেতে চাইছেন। তবে একটি নয়, একাধিক কারণে তার উষ্মা তৈরি হয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে।

প্রথমত, কাঠমান্ডুতে নিযুক্ত চিনের মহিলা রাষ্ট্রদূত তাঁকে ‘হানি ট্র্যাপ’ করানোর চেষ্টা করেছেন— এমন প্রচারের পিছনে ভারত রয়েছে বলে সন্দেহ ওলির। এ কারণে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে নেপালে। সূত্রের খবর, গোটা বিষয়টি নিয়ে ভারতের উপর ক্রুদ্ধ তিনি। দ্বিতীয়ত, কে পি ওলি রাম নিয়ে মন্তব্য করে সরাসরি প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন ভারত এবং নেপালের প্রাচীন সাংস্কৃতিক সংযোগ নিয়ে। তাঁর বক্তব্যের নির্যাস, এ রকম কোনও সংযোগই নেই। অর্থাৎ নেপালের পরিচয় ভারতের উপর নির্ভরশীল নয়। ভারতীয় সংস্কৃতির উপশাখা নেপাল বহন করে না – এমন মতামত সে দেশের অন্যান্য কমিউনিস্ট নেতাদেরও।

রামের জন্ম নেপালের ভূখণ্ডে – এই দাবি করে নিজেদের স্বতন্ত্র এবং মূল ধারার হিন্দুত্বের পরিচয়কে তুলে ধরাই তাঁর লক্ষ্য বলেও মনে করা হচ্ছে।

নয়াদিল্লির অনুমান, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর এই ‘উস্কানিমূলক’ মন্তব্য আসলে ভারতের জন্য কৌশলগত ফাঁদ তৈরি করা। সে দেশের ভারত-বিরোধিতার পরিবেশ তৈরি হয়েই রয়েছে। এখন ওলির মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হয়ে সাউথ ব্লক যদি তোপ দাগতে শুরু করে, তা হলে কূটনৈতিক ভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। বরং ওলির বিরুদ্ধে তাঁর দলের এবং নেপাল সরকারের অন্য শরিক দলের নেতারা যে ভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। ওলির এই উগ্র ভারত বিরোধিতার সমালোচনা করেছেন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই, প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী কমল থাপা, ওলির কমিউনিস্ট পার্টির বেশ কিছু নেতা। বিদেশ মন্ত্রক ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে এই প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক শুধরে নেওয়ার সুযোগ আসবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE