Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বয়স্ক বাবা-মাকে না দেখলে জেল

কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় মন্ত্রকের মন্ত্রী থেবরচন্দ গহলৌত ‘দ্য মেনটেন্যান্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অব পেরেন্টস অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেন্স (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৯’ লোকসভায় পেশ করেছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৩
Share: Save:

বয়স্ক বাবা-মায়ের দেখাশোনা না করলে কিংবা তাঁদের হেনস্থা করলেই ছয় মাসের জেল। সঙ্গে গুণতে হতে পারে জরিমানার টাকাও। লোকসভায় আজ এই সংক্রান্ত বিল পেশ হয়েছে। বয়স্ক নাগরিকদের হেনস্থা ঠেকাতে কড়া মনোভাব নেওয়া হয়েছে বিলে।

কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় মন্ত্রকের মন্ত্রী থেবরচন্দ গহলৌত ‘দ্য মেনটেন্যান্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অব পেরেন্টস অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেন্স (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৯’ লোকসভায় পেশ করেছেন। এতে বলা হয়েছে, যদি কোনও ব্যক্তি তাঁর ভরণপোষণের আওতায় থাকা বাবা-মাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হেনস্থা করেন অথবা তাঁদের ত্যাগ করেন, সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির সর্বোচ্চ ছয় মাস জেল কিংবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা দু’টো শাস্তিই হতে পারে। ‘হেনস্থা’ শারীরিক, মৌখিক, আবেগ ও অর্থনৈতিক ভাবে হতে পারে। মা-বাবার দেখাশোনা না করলে বা তাঁদের ত্যাগ করলে তা হেনস্থা হিসেবে গ্রাহ্য হবে। শারীরিক নিগ্রহ, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন অপরাধের আওতায় থাকছে।

‘সন্তান’ হিসেবে বোঝানো হয়েছে, ছেলে-মেয়ে, পালিত বা সৎ সন্তান, ছেলের স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, নাতি-নাতনিকেও। ‘বাবা-মা’ হিসেবে বোঝানো হয়েছে নিজের বাবা-মা, সৎ বাবা-মা, শ্বশুর, শাশুড়িকে। বয়স্ক নাগরিকদের অভিযোগের ফয়সালা করতে ট্রাইবুনাল গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আশি বছরের বেশি বয়সিদের অভিযোগের নিষ্পত্তি ৬০ দিনের মধ্যে করতে হবে। তবে ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে ট্রাইবুনাল এই সময়সীমা ৩০ দিন পর্যন্ত বাড়াতে পারে। এর থেকে কম বয়সি ‘বাবা-মায়ের’ অভিযোগ ও দাবিদাওয়ার সমাধান করতে ৯০ দিন সময় দেওয়া হবে ট্রাইবুনালকে। বিলে বলা হয়েছে, বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানদের এমন আচরণ করতে হবে যাতে তাঁরা সম্মানের জীবনযাপন করতে পারেন। এ ছাড়া, সন্তানহীন বয়স্ক নাগরিকদের দেখার দায়িত্ব আত্মীয়স্বজনের। মৃত্যুর পরে তাঁদের সম্পত্তির অধিকার পেতে পারবেন আত্মীয়েরা।

বয়স্কদের অভিযোগগুলি খাতিয়ে দেখতে প্রতিটি থানায় এক জন পুলিশ অফিসার থাকবেন, পদমর্যাদায় যিনি এএসআইয়ের থেকে কম নন। তিনি বাবা-মায়েদের অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন। একই ভাবে দেশের প্রতিটি জেলায় পুলিশের বিশেষ ইউনিট গঠন করা হবে, তারা বয়স্ক নাগরিকদের স্বার্থে কাজ করবেন। কমপক্ষে ডিএসপি পদমর্যাদার কোনও অফিসার এর দায়িত্বে থাকবেন।

বয়স্ক নাগরিকদের জন্য সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বিশেষ ভাবে চিহ্নিত শয্যা রাখার ব্যবস্থা করার কথা রয়েছে। বয়স্কদের যে কোনও রকমের বিপদ থেকে বাঁচাতে একটি হেল্পলাইন নম্বর রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের বিল আনার কারণ দেখিয়ে বলা হয়েছে, যৌথ পরিবার ভেঙে যাচ্ছে। বেড়ে চলেছে বাবা-মা ও বয়স্কদের প্রতি অবহেলা ও অপরাধের সংখ্যা। তবে শুধু খাওয়া, পরা, বাসস্থান কিংবা স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়াই নয়, বিলে বয়স্কদের দেখাশোনার সংজ্ঞায় তাঁদের নিরাপত্তার দিকটিকেও রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE