Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Central Intelligence

এ বার কি ২৬/১২ হানার ছক মুম্বইয়ে

গোয়েন্দা সংস্থার সতর্কবার্তা জানাচ্ছে, ২৬ ডিসেম্বরের হামলার জন্য ২২ জন বাছাই করা জঙ্গির দল গড়া হয়েছে

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৩৪
Share: Save:

এক যুগ আগে, ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর জঙ্গি হানায় কেঁপে উঠেছিল বাণিজ্যনগরী মুম্বই। আঘাত হানার জন্য জঙ্গিরা আবার মুম্বইকেই বেছে নিয়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, এ বার আর নভেম্বর নয়, ডিসেম্বরের ২৬ তারিখে মুম্বই বিমানবন্দরে বড়সড় হামলার চক্রান্ত চলেছে। এই বার্তার জেরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা যেমন বাড়ছে, সমহারে জোরদার হচ্ছে সুরক্ষা-মুষ্টি। কারণ, প্রথমত, জায়গাটার নাম মুম্বই। দ্বিতীয়ত, আগে অনেক সতর্কবার্তা এলেও নির্দিষ্ট করে এমন তথ্য কখনও পাননি বিমান মন্ত্রকের কর্তারা।

গোয়েন্দা সংস্থার সতর্কবার্তা জানাচ্ছে, ২৬ ডিসেম্বরের হামলার জন্য ২২ জন বাছাই করা জঙ্গির দল গড়া হয়েছে। দলের প্রত্যেককে দেওয়া হয়েছে ২০ লক্ষ টাকার টোপ। কোন জঙ্গি সংগঠন এই ছক কষেছে, তা অবশ্য বলা হয়নি সতর্কবার্তায়।

বিষয়টিকে বিমান মন্ত্রক এতই গুরুত্ব দিচ্ছে যে, এক মাসেরও বেশি আগে থেকে শুধু মুম্বই বিমানবন্দর নয়, সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে সব বিমানবন্দরকেই। সতর্ক করা হয়েছে দেশের প্রতিটি উড়ান সংস্থাকেও। বিমানবন্দর এবং যাত্রী-সুরক্ষার সঙ্গে

যুক্ত সব নিরাপত্তা সংস্থার কাছেও পাঠানো হয়েছে ওই সতর্কবার্তা।

দেশের বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে বুরো অব সিভিল এভিয়েশন সিকিউরিটি বা বিসিএএস। তাদের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, বিমানবন্দর, টার্মিনাল, অ্যাপ্রন (যেখানে বিমান দাঁড়ায়) এলাকায় সব ধরনের লোকজনের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সাধারণ ভাবে বৈধ অনুমতিপত্র ছাড়া কেউ অ্যাপ্রন এলাকায় ঢুকতে পারেন না। কিন্তু টার্মিনালে সাধারণ যাত্রী ও দর্শকদের ঢোকার অনুমতি রয়েছে। যদিও করোনার জন্য এখন পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতে কলকাতা-সহ বহু বিমানবন্দরে দর্শকদের ঢোকার ক্ষেত্রে এমনিতেই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ আছে।

জঙ্গি সংগঠনগুলি এখন অনেক আধুনিক। ফলে শুধু যে সড়কপথেই আক্রমণ হবে, এমন কোনও কারণ দেখছেন না নিরাপত্তা-কর্তারা। তাই মুম্বই-সহ দেশের সব বিমানবন্দরে সাধারণ যাত্রী-বিমান ছাড়াও সব ধরনের ছোট বিমানের আনাগোনার উপরে কড়া নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ নজরদারির আওতায় ছোট বিমানের পাশাপাশি রয়েছে ড্রোনের মতো যন্ত্র-নিয়ন্ত্রিত বায়ুযান। প্যারাগ্লাইডারদের বিষয়েও সতর্ক করা হয়েছে। নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে রোগী নিয়ে যাতায়াত করা এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের উপরেও।

বিমানবন্দরে এমনিতেই সব যাত্রীর শরীর ও মালপত্র খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষায় সতর্কতার মাত্রা বাড়াতে বলেছে বিসিএএস। দরকারে দ্বিতীয় বার পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে কর্মরত কর্মীদের শরীর-তল্লাশির মাত্রা বাড়াতে হবে। বিমানে ওঠার ঠিক আগে যাত্রীদের শরীর-তল্লাশির উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে। বিমানবন্দরে দাঁড়ানো খালি বিমানকে যথাযথ ভাবে ঘিরে রাখতে হবে, যাতে চোখ এড়িয়ে কেউ তার ভিতরে ঢুকে পড়তে না-পারে।

বিমানবন্দরে আসা প্রতিটি গাড়িতে তল্লাশি চালানোর পরামর্শের সঙ্গে টার্মিনালের সামনে গাড়ি রাখার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রয়োজনে বিমানবন্দরের ঢোকার মুখে প্রশিক্ষিত কুকুর রাখতে হবে। এই সতর্কতার আওতা থেকে বাদ যায়নি পণ্য পরিবহণও। আশঙ্কা, বিমানের পেটের ভিতরে পণ্য পাঠিয়ে তা থেকে বিস্ফোরণ ঘটানো হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE