Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

রেশন প্রকল্প নিয়ে তরজায় কেন্দ্র-রাজ্য

২০২০ সালের জুনের মধ্যে এক দেশ-এক রেশন কার্ড চালু করতে চায় কেন্দ্র। যাতে কাজের জন্য ভিন্‌ রাজ্যে গিয়ে থাকতে হলেও রেশন তোলার সুবিধা মেলে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২৮
Share: Save:

এক দেশ-এক রেশন কার্ড প্রকল্প চালুর জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ার কাজে পশ্চিমবঙ্গ এত পিছিয়ে কেন, প্রায় সব রাজ্যের প্রতিনিধির সামনে সেই প্রশ্ন ফের তুললেন কেন্দ্রীয় খাদ্য, ক্রেতা সুরক্ষা এবং গণবণ্টন মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান। উত্তরের খোঁজে রাজ্যের মন্ত্রীর ডাক পড়তেই সাধন পাণ্ডের জবাব, ‘‘আমি খাদ্যমন্ত্রী নই। এ বিষয়ে বলতে পারবে খাদ্য দফতরই।’’ কিন্তু একই সঙ্গে ক্রেতা সুরক্ষায় রাজ্যকে পর্যাপ্ত টাকা না জুগিয়ে শুধু পরামর্শ দিয়ে চলার জন্য কেন্দ্রের দিকে আঙুলও তুললেন তিনি। জানালেন, টাকা না দিলে উন্নততর পরিকাঠামো তৈরি রাজ্যের পক্ষে কার্যত অসম্ভব।

২০২০ সালের জুনের মধ্যে এক দেশ-এক রেশন কার্ড চালু করতে চায় কেন্দ্র। যাতে কাজের জন্য ভিন্‌ রাজ্যে গিয়ে থাকতে হলেও রেশন তোলার সুবিধা মেলে। তার জন্য প্রত্যেক রেশন দোকানে পিওএস (পস) মেশিন বসানো জরুরি। যাতে আঙুলের ছাপ যাচাইয়ের বন্দোবস্ত থাকে। একই সঙ্গে প্রয়োজন, খাদ্যপণ্যের মজুত-খরচ হিসেব রাখার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা আর পণ্য জোগানের ডিজিটাল পরিকাঠামো (সাপ্লাই চেন)। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ, দুই ক্ষেত্রেই পিছিয়ে রয়েছে রাজ্য।

পাসোয়ান বলেন, গুজরাত, তামিলনাড়ু, লক্ষদ্বীপ সমেত ১৪টি রাজ্যে ১০০% রেশন দোকানে পস মেশিন পৌঁছেছে। সিকিম, কর্নাটক, রাজস্থানে তার হার ৯৭ থেকে ৯৯ শতাংশ। সেখানে পশ্চিমবঙ্গে তা মাত্র ৭৭%। পিছনে উত্তরাখণ্ড (৩৩%), বিহার (১৫%) আর উত্তর-পূর্বের কয়েকটি রাজ্য। বার বার বলা সত্ত্বেও এত দেরি কেন, সেই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের সচিবের দাবি, মেশিন পৌঁছেছে। বসানোর কাজও হয়ে যাবে এ মাসেই।

রাজ্যের মন্ত্রীদের সঙ্গে এই সংক্রান্ত পঞ্চম আলোচনায় কেন্দ্র যদি এ দিন পরিকাঠামো তৈরিতে দেরির জন্য পশ্চিমবঙ্গের দিকে আঙুল তুলে থাকে, তবে ক্রেতা সুরক্ষায় পর্যাপ্ত টাকা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন সাধনও। রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রীর অভিযোগ, সরকার সংসদে নতুন ক্রেতা সুরক্ষা আইন পাশের কৃতিত্ব দাবি করছে। হামেশাই বলছে তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কথা। অথচ টাকা দেওয়ার বেলায় তারা হাত গুটিয়ে বসে। এ ভাবে চলতে থাকলে রাজ্যের পক্ষে ক্রমশ বাড়তে থাকা খরচ জোগানো কী ভাবে সম্ভব, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, এই খাতে টাকা চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মোদী সরকার তা দিতে রাজি না থাকায় রাজ্যকে ভাবতে হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথাও। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, নতুন ক্রেতা সুরক্ষা আইনে রাজ্যকে পাশ কাটিয়ে কেন্দ্রের সরাসরি নাক গলানোর রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে। ক্রেতা সুরক্ষা তহবিলের টাকা কিসে ব্যবহার করা যাবে, বিস্তর ধোঁয়াশা রয়েছে তা নিয়ে। এমনকি এক সময়ে কেন্দ্র খাদ্য এবং ক্রেতা সুরক্ষা দফতর আলাদা হওয়া উচিত বলে রাজ্যকে চিঠি লিখলেও, দিল্লির সরকারেই এখনও তা হয়নি।

টাকার দাবিতে এ দিন ওড়িশা-সহ কিছু রাজ্যকে পাশে পেয়েছেন সাধন। দেশে ক্রেতা হেনস্থার ঘটনা মেনে ৮ টাকার এক জোড়া ডিম কী ভাবে রেস্তোরাঁয় ১,৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তা দেখতে বলেছেন পাসোয়ানও। হাতে গোনা ব্যতিক্রম বাদ দিলে কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রীদের উপস্থিতি গত কয়েক বছরে প্রায় বিরল। তারই মধ্যে এ দিন এই সম্মেলনে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের কথার খোঁচার সাক্ষী থাকল বিজ্ঞান ভবন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rationing System Ration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE