Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

পদোন্নতিতে সংরক্ষণ ছাড়তে চায় না কেন্দ্র

সুপ্রিম কোর্টে আজ কেন্দ্র স্পষ্ট জানিয়ে দিল, আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হলেও তফসিলি জাতি-জনজাতির কর্মীদের পদোন্নতিতে সংরক্ষণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার পক্ষপাতী নয় তারা।

নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৪২
Share: Save:

দলিতদের জন্য সংরক্ষণ নিয়ে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে কোনও রকম ধোঁয়াশা রাখতে নারাজ মোদী সরকার।

সুপ্রিম কোর্টে আজ কেন্দ্র স্পষ্ট জানিয়ে দিল, আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হলেও তফসিলি জাতি-জনজাতির কর্মীদের পদোন্নতিতে সংরক্ষণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার পক্ষপাতী নয় তারা।

মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত এক বার মুখ ফস্কে সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার কথা বলে ফেলেছিলেন। কেন্দ্র তথা বিজেপি যে সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার পক্ষে নয়, তা বোঝাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল তার পরে। দলিত আইন নিয়ে বিপদে পড়ে সবেমাত্র সরকার উদ্ধার পেয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট দলিত নির্যাতন প্রতিরোধ আইন লঘু করার পরে আইনের পুরনো চেহারা ফেরাতে সরকারকে বিল আনতে হয়েছে। এ বার তাই আর কোনও ঝুঁকি নেয়নি কেন্দ্র।

অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল এ দিন আদালতে বলেছেন, তফসিলি জাতি-জনজাতির অনেকে উঠে এলেও কয়েক শতক ধরে পিছিয়ে থাকার কালিমা এখনও রয়েছে। এখনও তফসিলি জাতি-জনজাতির মানুষরা সামাজিক ভাবে পিছনের সারিতে। এখনও তাদের উঁচু জাতের কাউকে বিয়ে করায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমনকি বিয়ে করার সময় ঘোড়ায় চড়ারও অনুমতি মেলে না।

এ কথা শুনে বিচারপতি রোহিংটন নরিম্যান বলেন, ‘‘দেশের প্রতিটি ধর্মে জাতপাত ঢুকে গিয়েছে। এমনকি আমার ধর্মেরও হিন্দুত্বকরণ হয়ে গিয়েছে।’’ বিচারপতি নরিম্যান নিজে পার্সি। তিনি বলেন, ‘‘যে দেশে আমার ধর্মের উৎপত্তি, সেখানে কোনও জাতপাত নেই। কিন্তু এখানে রয়েছে। আমি পুরোহিত পরিবারে জন্ম না নিলে পুরোহিত হতে পারতাম না।’’ বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘‘উনি যে গির্জায় যান, সেখানেও কেউ নিজের গোত্রের বাইরে বিয়ে করে না।’’

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ কেন্দ্রকে প্রশ্ন করেছিল, ওবিসি-র ক্ষেত্রে যেমন আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল বা ‘ক্রিমি লেয়ার’-এর নিয়ম রয়েছে, তফসিলি জাতি-জনজাতির ক্ষেত্রেও একই নীতি প্রয়োগ করা যায় কি না? অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তফসিলি জাতি-জনজাতির কোনও অংশকে সংরক্ষণের আওতা থেকে বাদ দিতে হলে, একমাত্র সংসদই তা করতে পারে। ২০০৬-এ এম নাগরাজ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ তফসিলি জাতি-জনজাতির পদোন্নতিতে সংরক্ষণে নানা শর্ত বেঁধে দিয়েছিল। কেন্দ্রের দাবি, প্রয়োজনে সাত বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করে সেই রায়ের পর্যালোচনা হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Reservation Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE