Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

অস্তিত্ব বাঁচাতে সরব চাকমারা

ভারতে থাকা চাকমারা ২০১৬ সালে ‘চাকমা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া কনফারেন্স’-এ কিছু প্রস্তাব নিয়েছিলেন

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আগরতলা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪৩
Share: Save:

পার্বত্য চট্টগ্রামের ৯৮.৫ শতাংশ মানুষ অ-মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও ব্রিটিশরা সেই জনবসতি পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে জুড়েছিল। এর প্রতিবাদে চাকমা জনগোষ্ঠী ১৭ অগস্টকে কালো দিবস হিসেবে পালন করে। চাকমাদের ওই বসতি এখন বাংলাদেশের অঙ্গ। ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরাম ও অরুণাচল প্রদেশেও রয়েছেন অন্তত আড়াই লক্ষ চাকমা। নাগরিকত্ব ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার প্রশ্নে ক্ষোভ রয়েছে তাঁদের। এই বিষয়গুলি নিয়ে নতুন করে আন্দোলন মাথা তুলছে উত্তর-পূর্বে।

ভারতে থাকা চাকমারা ২০১৬ সালে ‘চাকমা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া কনফারেন্স’-এ কিছু প্রস্তাব নিয়েছিলেন। তারই অঙ্গ হিসেবে গত কয়েক বছরের মতো ত্রিপুরায় আজকের দিনটিকে তাঁরা কালো দিন হিসাবে করেন। আগরতলা শহরে আলোচনা সভা হয় এ নিয়ে। যদিও মিছিল করার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। রাজ্যের বাকি অংশেও চাকমা অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে কিছু কিছু কর্মসূচি পালন করা হয়।

এত দিন পরে কেন এই আন্দোলন? অ-মুসলিম শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সরকার এবং কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক শিবিরের বিশেষ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। এর সঙ্গে কি তার কোনও যোগাযোগ রয়েছে?

ত্রিপুরা রাজ্য চাকমা সামাজিক পরিষদের উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি নিরঞ্জন চাকমা সেই বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি। তাঁর যুক্তি, ভারত পরাধীন হওয়ার অনেক পরে স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়েছিল। তার পর দেশ স্বাধীন হয়েছে। দেরি হলেও চুপ করে বসে থাকার কোনও কারণ নেই। মিজোরামে ষষ্ঠ তফসিল এবং নাগরিকত্বের অধিকারের ভিত্তিতে একটি জেলা কাউন্সিল রয়েছে চাকমাদের। ত্রিপুরায় আদিবাসী জনগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি এবং অনান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অরুণাচল প্রদেশে ১৯৬৪ সালে ভারত সরকার চাকমাদের পুনর্বাসন দিয়েছিল। কিন্তু নাগরিকত্ব মেলেনি।

বাংলাদেশে থাকা চাকমাদের নিয়েও ভাবছেন নিরঞ্জনরা। তাঁর বক্তব্য, জওহরলাল নেহরু চেয়েছিলেন, চাকমা জনবসতি ভারতে থাকুক। কিন্তু দেশ ভাগের আগে সিরিল রেডক্লিফের নেতৃত্বে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত নির্ধারণ কমিশন ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং অরুণাচল প্রদেশের চাকমা আদিবাসীদের প্রাচীন বসতি চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলকে (সিএইচটি) পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে জুড়ে দেয়। এবং সেটিই স্বীকৃতি পায়। ওই ঘটনা ছিল সবচেয়ে দুঃখজনক। পরেও বাংলাদেশে চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে এই জনজাতির প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। সমতলের মুসলিমদের ওখানে পুনর্বাসন দেওয়ায় চাকমারা সেখানে সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছেন। নানা রকম নির্যাতনও হয়েছে তাঁদের উপরে। দু’পারের চাকমাদের স্বার্থেই তাঁদের আন্দোলন, জানাচ্ছেন নিরঞ্জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chakma
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE