চন্দ্রবাবু নায়ডু
উনিশের ভোট যত এগিয়ে আসছে বিজেপি বিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রশ্নে প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে উঠছেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। রাহুল গাঁধীকে সঙ্গে নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক বিরোধী নেতার সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন তিনি। এ বার তাঁদের চেষ্টা মায়াবতী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এই বিরোধী মঞ্চে শামিল করা।
এ যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। একুশ বছর আগে সংযুক্ত মোর্চা (ইউনাইটেড ফ্রন্ট) সরকার তৈরির সময়েও এই চন্দ্রবাবু একই ভাবে সক্রিয় ছিলেন। হরকিষেন সিংহ সুরজিৎকে সঙ্গে নিয়ে রাতের পর রাত বৈঠক চলত নয়াদিল্লির অন্ধ্রভবনে। চলত বিরোধীদের সকলের রাজনৈতিক ইস্তাহারকে এক করে ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি তৈরির প্রক্রিয়া।
রাজনীতির সেই সব কুশীলবদের অধিকাংশই এখন আর নেই। কিন্তু কেন্দ্র বিরোধী রাজনীতিতে বিভিন্ন বিরোধী দলকে একজোট করার সেই কৌশল কালক্রমে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। আর সেই বিরোধী শক্তির অন্যতম সূত্রধর হিসেবে চন্দ্রবাবু আজও সমান ভাবে সক্রিয়। আপাতত তাঁর চেষ্টা আগামী ২২ তারিখ নয়াদিল্লিতে যে বৈঠক তিনি ডেকেছেন, সেখানে মমতা ও মায়াবতী যাতে থাকেন তা নিশ্চিত করা। ১৯ তারিখ কলকাতা যাচ্ছেন মমতার সঙ্গে কথা বলতে। সেখানে কথা হবে দু’জনের। তৃণমূল শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, দলনেত্রী ২২ তারিখ দিল্লি যেতে পারেন। কিন্তু ওই সময়ে রাজ্যে তাঁর একাধিক প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক কাজকর্ম রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ফলে এখনই এ ব্যাপারে পাকা কথা চন্দ্রবাবুকে দিতে পারেননি তিনি। দলীয় সূত্র বলছে, অন্য বিরোধী দলনেতাদের মধ্যে কে কে শেষ পর্যন্ত ২২ তারিখের বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন সেটাও দেখতে চাইছেন মমতা।
তবে চন্দ্রবাবু তো বটেই, বিরোধী শিবিরের অন্য নেতারাও জানেন, মায়াবতীকে পাশে পেতে এখনও যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হবে। চেষ্টা যে তিনি করছেন না তা নয়। গত মাসের ২৭ তারিখ মায়াবতীর নয়াদিল্লির বাসভবনে গিয়ে দীর্ঘ বৈঠকও করেছেন চন্দ্রবাবু। সূত্রের খবর, মায়ার কাছ থেকে ইতিবাচক বার্তা পাওয়া যায়নি। উল্টে চন্দ্রবাবুর সঙ্গে ওই বৈঠকেই বিএসপি নেত্রী অভিযোগ করেছেন, কংগ্রেস ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে বিরোধী শরিকদের যথেষ্ট মর্যাদা দেয়নি। মায়াবতী-ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, ‘‘চন্দ্রবাবু কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়বেন, সেটা ভাল কথা। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে আদৌ কি কংগ্রেসের অস্তিত্ব রয়েছে? ফলে সেখানে আসন সমঝোতার প্রশ্নে কংগ্রেসের কথা কে শুনবে? বহেনজি এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, যত ক্ষণ না উত্তরপ্রদেশে সম্মানজনক শর্তে আসন সমঝোতা হচ্ছে, তিনি কোনও নেতার সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়াবেন না।’’ তবে তিনি যাতে আসেন, তার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করছেন চন্দ্রবাবু।
সূত্রের বক্তব্য, মায়াবতীও দেখে নিতে চান পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কোথাকার জল কোথায় গড়ায়। হাওয়া কোন দিকে বইবে তা নিশ্চিত করে বুঝে নিয়ে তবেই নিজের শেষ তাসটি দেখাবেন বিএসপি নেত্রী। উত্তরপ্রদেশে তাঁর ভূমিকা যে কেন্দ্রে সরকার গড়ার প্রশ্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেটা জানেন মায়াবতী। চন্দ্রবাবুর সঙ্গে এই ‘মায়া-ফ্যাক্টর’ নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছেন রাহুল। এবং সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ সিংহ যাদবও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy