Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
National News

অন্ধ্রে ঢুকতে পারবে না সিবিআই, বিজ্ঞপ্তি জারি চন্দ্রবাবুর, সমর্থন করলেন মমতা

অন্ধ্র সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, এবার থেকে কোনও মামলায় তদন্ত, তল্লাশি, গ্রেফতার, জিজ্ঞাসাবাদ বা অন্য যে কোনও সরকারি কাজে গেলে তাদের অনুমতি নিতে হবে। সরকার অনুমতি দিলে তবেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা অন্ধ্রপ্রদেশে ঢুকতে পারবেন।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সংবাদ সংস্থা
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ১৪:১৯
Share: Save:

কেন্দ্র তথা এনডিএ-র সঙ্গে সংঘাত আরও উচ্চগ্রামে নিয়ে গেলেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। এবার তাঁর রাজ্যে সিবিআইয়ের প্রবেশ কার্যত ‘নিষিদ্ধ’ করে দিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। আর চন্দ্রবাবুর পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়ে কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চন্দ্রবাবু। আমিও সিবিআই-কে ঢুকতে দেব না। এমন আইনি সংস্থানের বিষয়ে আমরাও খতিয়ে দেখছি।’’

অন্ধ্র সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, এবার থেকে কোনও মামলায় তদন্ত, তল্লাশি, গ্রেফতার, জিজ্ঞাসাবাদ বা অন্য যে কোনও সরকারি কাজে গেলে তাদের অনুমতি নিতে হবে। সরকার অনুমতি দিলে তবেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা অন্ধ্রপ্রদেশে ঢুকতে পারবেন। চন্দ্রবাবু যখন হায়দরাবাদে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সিবিআই-এর এক্তিয়ারে বেড়ি পরিয়ে দিয়েছেন, তখনই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে কলকাতায় তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের জেনারেল কাউন্সিল মিটিং-এ মমতার তোপ, ‘‘গান গেয়ে টাকা চাইলেও ওরা বলবে চোর।’’ বিজেপিকে নিশানা করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, সিবিআই, আরবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।

১৯৪৬ সালে দিল্লি পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্টে সিবিআই গঠিত হয়। ওই আইনে কোনও রাজ্যে সরকারি কাজে গেলে সিবিআই আধিকারিকদের ‘জেনারেল কনসেন্ট’ নিতে হত। যার অর্থ আগে সিবিআই আধিকারিকরা কোনও রাজ্যে তদন্তে গেলে শুধুমাত্র রাজ্যকে জানালেই হত। অনুমতির প্রয়োজন ছিল না। অন্ধ্রের সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে সেই অংশটি তুলে নেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে কার্যকর করা হয়েছে ‘প্রায়র কনসেন্ট’। এর অর্থ আগে থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের অনুমতি নিয়ে ঢুকতে হবে। রাজ্য অনুমতি না দিলে ঢুকতে পারবেন না গোয়েন্দারা।

আরও পড়ুন: ছবি এঁকে রোজগার করলেও চোর! তোপ মমতার, ভাবনায় সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও

প্রাক্তন সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মা এবং স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা বিবাদের প্রসঙ্গ টেনে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওই ঘটনার পর সিবিআই-এর উপর আর আস্থা নেই রাজ্য সরকারের। সাম্প্রতিক অতীতে কেন্দ্রীয় এই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্তাদের যে সব কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে, তার পর তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। যে সমস্ত মামলা চলছে, সেগুলির নিষ্পত্তি যে সিবিআই করতে পারবে, এমনটা বিশ্বাস করাই কঠিন। এই সব কারণেই এমন সিদ্ধান্ত।

(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)

সিবিআই-কে ‘নিষিদ্ধ’ করে রাজ্যের অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো (এসিবি) বা দুর্নীতি দমন শাখার ক্ষমতাও বাড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু। এবার থেকে সিবিআই-এর কাজ এই দুর্নীতি দমন শাখাই করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, সন্দেহ হলে কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসগুলিতেও তল্লাশি অভিযান চালানোর অধিকার দেওয়া হয়েছে এই এসিবি-কে।

আরও পড়ুন: তামিলনাড়ুতে আছড়ে পড়ল গজ, ঝড়ের তাণ্ডবে মৃত অন্তত ১৫

তেলঙ্গানা আলাদা হওয়ার পর অন্ধ্রপ্রদেশকে আলাদা রাজ্যের মর্যাদা দাবি করেছিলেন চন্দ্রবাবু। সেই দাবিতে সায় দিয়েও বিজেপি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ তুলে এ বছরের গোড়ার দিকেই এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে আসেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। তারপর থেকেই কেন্দ্রের এনডিএ জোটের বিরুদ্ধে খড়গহস্থ টিডিপি সুপ্রিমো চন্দ্রবাবু। আবার ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে মহাজোট গড়ার দৌত্যে সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকাও নিয়েছেন তিনিই। সেই চন্দ্রবাবুই এবার সিবিআই-এর অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং তা নিয়ে কেন্দ্রের ভূমিকাকে সুক‌ৌশলে কাজে লাগিয়ে কার্যত সিবিআই-এর গলায় লাগাম পরিয়ে দিলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।

ভোটের খবর, জোটের খবর, নোটের খবর, লুটের খবর- দেশে যা ঘটছে তার সেরা বাছাই পেতে নজর রাখুন আমাদের দেশ বিভাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE