কাশ্মীরে বিক্ষোভের ফাইল চিত্র।
ছররায় গুরুতর জখম হওয়া এখন কাশ্মীরে প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তেমন ঘটনায় ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ক্ষেত্রে কাশ্মীরিদের পথ দেখাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ।
বিএসএফের ছোড়া ছররায় ডান চোখের দৃষ্টি গিয়েছিল নদিয়া জেলার চাপড়ার হাটখোলা গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আলি হালসানার। কয়েক বছরের আইনি লড়াইয়ের পরে সম্প্রতি তাঁকে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ২০১৪ সালের ৭ নভেম্বর হাটখোলা গ্রামে গরু পাচারকারীদের তাড়া করার সময়ে ছররা ছো়ড়ে বিএসএফ। তখনই মহম্মদের চোখে ছররা লাগে। মানবাধিকার কর্মী রমেন মৈত্রের মাধ্যমে মহম্মদের পরিবার এক মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই মানবাধিকার সংগঠন মহম্মদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। কিন্তু অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর ডান চোখটি বাঁচানো যায়নি। ওই চোখে পুরোপুরি দৃষ্টি হারান তিনি।
২০১৬ সালে বিষয়টি নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয় ওই মানবাধিকার সংগঠন। সম্প্রতি এই বিষয়ে ফয়সালা হয়েছে কমিশনে। মানবাধিকার সংগঠনের নেতা কিরীটী রায় জানিয়েছেন, মহম্মদকে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে সুপারিশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কিরীটি বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে, এতে আমরা খুশি। কিন্তু কেউ শাস্তি পেল না? আমাদের আন্দোলন চলবে।’’
নদিয়ার ঘটনায় মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশে আশার আলো দেখছেন কাশ্মীরের মানবাধিকার কর্মীরা। এই সুপারিশের কথা উল্লেখ করে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে আর্জি পেশ করেছেন কাশ্মীরের মানবাধিকার কর্মী মহম্মদ আহসান আন্টু। আর্জিতে জানানো হয়েছে, উপত্যকায় ছররায় আহতদেরও এককালীন ক্ষতিপূরণ দিতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিক কমিশন। আন্টু জানিয়েছেন, তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনেও আর্জি পেশ করবেন। রাজ্য কমিশন ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের মতে, এখন উপত্যকায় ছররায় আহতের সংখ্যা ৭৩৪০ জন। তাঁদের মধ্যে ১৭৭০ জন পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরে ছররায় আহতদের ক্ষতিপূরণের কোনও ব্যবস্থা নেই। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিলাল নাজকি জানিয়েছেন, ছররায় যাঁদের চোখে আঘাত লেগেছে তাঁদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ১০টি জেলার মধ্যে এখনও বান্দিপোরা ও বাদগাম থেকে তথ্য পায়নি কমিশন। গান্ধেরবাল জেলা প্রশাসনের পাঠানো তথ্য থেকে আঘাতের প্রকৃতি স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছে না। এই তথ্য হাতে পেলে তবেই গোটা চিত্র স্পষ্ট হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy