ফাইল চিত্র। ছবি: পিটিআই।
চার বছর আগে এক ভোটসভায় মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর হত্যার জন্য আরএসএসকে দায়ী করেছিলেন তিনি। এর জেরে ঠাণের দায়রা আদালতে আজ সঙ্ঘের অবমাননা করার অভিযোগে চার্জগঠন হল রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে। এর আগে কংগ্রেস সভাপতির কাছে দায়রা বিচারক এ আই শেখ জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘আপনি কি অভিযোগ স্বীকার করছেন?’’ রাহুলের জবাব ছিল, ‘‘আমি নির্দোষ।’’
রাহুলের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন আরএসএস ক্যাডার রাজেশ কুন্তে। অভিযোগ আনা হয়েছে দণ্ডবিধির ৪৯৯ (কুত্সার মাধ্যমে সম্মানহানি) ও ৫০০ (মানহানির শাস্তি) ধারায়। দোষী সাব্যস্ত হলে দু’বছর পর্যন্ত জেল বা জরিমানা, কিংবা দুই-ই হতে পারে রাহুলের। আদালত থেকে বেরিয়ে রাহুল আজ দৃঢ় ভাবে বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যত খুশি মামলা করুক ওরা (বিজেপি ও সঙ্ঘ)। লড়াইটা আদর্শের।’’
২০১৪-র ৬ মার্চ ভিওয়ান্ডির সভায় করা ওই মন্তব্যে বরাবরই অনড় রয়েছেন রাহুল। এ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হলে তিনি তা খারিজ করার আর্জি জানিয়েছিলেন শীর্ষ আদালতে। ২০১৬-র জুলাইয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলে, গাঁধী হত্যার পুরো দায় একটি সংগঠনের ঘাড়ে চাপানো উচিত হয়নি। ওই মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ না করলে রাহুলকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। তখনই রাহুল জানিয়ে দেন, বিচার হোক। তারই সূত্রে কংগ্রেস সভাপতি আজ হাজির হন ঠাণের আদালতে। রাহুলের তরফে আর্জি ছিল, সংক্ষিপ্ত শুনানি (সামারি ট্রায়াল) নয়, তিনি চান বিস্তারিত শুনানি (সামনস ট্রায়াল), যাতে সব নথি-প্রমাণ সবিস্তার রেকর্ড ও খতিয়ে দেখা হয়। রাহুলের আইনজীবী নারায়ণ আইয়ার জানান, ওই আর্জি আজ মঞ্জুর করেছে আদালতে। পরের শুনানিতে রাহুলের বক্তৃতার ভিডিয়ো ও তার লিখিত রূপ (ট্রান্সক্রিপ্ট) প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। সে দিন অবশ্য আদালতে হাজিরা দিতে হবে না রাহুলকে।
কংগ্রেস সভাপতি আজ কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে আসেন বেলা ১১টা ৫-এ। বাইরে তখন উৎসাহী কংগ্রেস সমর্থকদের বড়সড় জমায়েত। স্লোগান উঠছে, ‘‘রাহুল গাঁধী সংঘর্ষ করো।’’ একই কথা লিখে টাঙানো হয়েছিল বিশাল হোর্ডিং। যদিও পরে তা সরিয়ে নিতে হয় নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে। ২৫ জুন বিধান পরিষদের নির্বাচন রয়েছে রাজ্যে। কংগ্রেস সভাপতি এজলাস থেকে বেরোন সওয়া বারোটায়। প্রায় পুরো সময়টাই তিনি ও অভিযোগকারী কুন্তে বসে ছিলেন এজলাসের বিপরীত প্রান্তে।
অভিযুক্ত হিসেবে রাহুলকে এ দিন আইনজীবীদের শৌচালয়ে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। যেতে হয় সকলের ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট বেজায় অপরিচ্ছন্ন শৌচালয়ে। তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এসপিজি-রা। অন্য দিকে, কুন্তের অভিযোগ, আদালতে ঢোকার আগে তাঁকে ও তাঁর আইনজীবীকে দেহতল্লাশির মুখে পড়তে হয়েছে। অথচ রাহুলকে বিশেষ খাতির করেছে পুলিশ। কুন্তে অবশ্য বলেছেন, ‘‘আদালতের উপরে আস্থা রয়েছে। আমার বিশ্বাস, সুবিচারই মিলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy