Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্তব্ধ বিমানবন্দর, ভরসা নৌবাহিনীর বিমানঘাঁটি

সম্পূর্ণ বন্ধ চেন্নাই বিমানবন্দর। বৃষ্টির শেষ নেই। রানওয়েটাকে মনে হচ্ছে একটা বিরাট জলাভূমি। দাঁড়িয়ে থাকা বিমানের পেট ছুঁয়ে ফেলছে জমা জল। এই অবস্থায় ‘নোটাম’ (নোটিস টু এয়ারমেন) জারি করে সারা বিশ্বকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী রবিবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত বিমান ওঠানামা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে চেন্নাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে।

নৌ-এয়ারবেসে নামার পর এয়ার ইন্ডিয়ার দুই পাইলট আর্ল পেরেরা ও সঙ্গীতা কাবরা।—নিজস্ব চিত্র।

নৌ-এয়ারবেসে নামার পর এয়ার ইন্ডিয়ার দুই পাইলট আর্ল পেরেরা ও সঙ্গীতা কাবরা।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:০৬
Share: Save:

সম্পূর্ণ বন্ধ চেন্নাই বিমানবন্দর।

বৃষ্টির শেষ নেই। রানওয়েটাকে মনে হচ্ছে একটা বিরাট জলাভূমি। দাঁড়িয়ে থাকা বিমানের পেট ছুঁয়ে ফেলছে জমা জল। এই অবস্থায় ‘নোটাম’ (নোটিস টু এয়ারমেন) জারি করে সারা বিশ্বকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী রবিবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত বিমান ওঠানামা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে চেন্নাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে।

একমাত্র আশার আলো, চেন্নাই থেকে ৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে আরাকোন্নামে নৌবাহিনীর বিমানঘাঁটি ‘আইএনএস রাজালি’। বুধবার রাত পৌনে ৯টা নাগাদ হায়দরাবাদ থেকে
এয়ার ইন্ডিয়ার একটি এয়ারবাস এ৩২০
বিমান নিয়ে সেখানে নেমেছেন ক্যাপ্টেন আর্ল পেরেরা ও কো-পাইলট সঙ্গীতা কাবরা। পরীক্ষামূলক এই ল্যান্ডিং সফল হওয়ার পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্র বলেন, ‘‘আশা করছি, বৃহস্পতিবার থেকে এখানে আরও যাত্রিবাহী বিমান নামবে।’’

যদিও জানা কথা, এটা স্রেফ আপৎকালীন বন্দোবস্ত। চেন্নাইয়ে আটকে পড়া অন্য দেশ বা শহরের নাগরিকদের সরানোর লক্ষ্যেই মূলত নিজেদের এয়ার বেস খুলে দিয়েছে নৌসেনা। তাই মূল বিমানবন্দর চালু না হওয়া অবধি পুরোপুরি স্বস্তি নেই। কিন্তু তার লক্ষণ কই?

মঙ্গলবার সন্ধে থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছিল। রাত সাড়ে ৮টায় চেন্নাই বিমানবন্দর থেকে উড়ে যায় শেষ বিমান। তার পরেই সব বন্ধ। আটকে পড়েন কয়েকশো যাত্রী। বুধবার বেশি রাতেও বিমানবন্দর থেকে যাত্রীদের সরানোর কাজ চলেছে। বিমানসংস্থা ইন্ডিগো ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে যৌথ ভাবে কিছু বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল যাত্রীদের বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। সেই বাসে জায়গা পেতে মারপিট শুরু হয়ে যায়।

চেন্নাই বিমানবন্দরের অধিকর্তা দীপক শাস্ত্রী জানালেন, এখন বৃষ্টি থামলে যে করেই হোক জল নামানোর চেষ্টা হবে। কিন্তু বৃষ্টি না থামলে কিচ্ছু করার নেই। বিমানবন্দরের জল গিয়ে যেখানে পড়ে, সেই অ্যাডেয়ার নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টি চলবে। ফলে যা পরিস্থিতি, তাতে অন্তত সোমবারের আগে বিমান ওঠানামা অসম্ভব।

চেন্নাইয়ের জন্যই ওলটপালট হয়ে গিয়েছে প্রতিটি বিমানসংস্থার উড়ানসূচি। বাদ যায়নি কলকাতাও। মঙ্গলবার ‘নোটাম’ জারির আগেই কলকাতা থেকে উড়ে গিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। সেটি চেন্নাইয়ে নামতে না পেরে বেঙ্গালুরু চলে যায়। তার পরে কলকাতা থেকে পরপর ইন্ডিগো ও জেট তাদের চেন্নাইয়ের উড়ান বাতিল করে দেয়। প্রতিদিন কলকাতা থেকে ১০টি উড়ান যায় চেন্নাইয়ে। ছ’টি চালায় ইন্ডিগো, দু’টি স্পাইসজেট, একটি করে এয়ার ইন্ডিয়া ও জেট। রবিবার পর্যন্ত ওই ১০টি উড়ানই সরকারি ভাবে বন্ধ। বিমানসংস্থাগুলির তরফে যাবতীয় তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের মোবাইলে। কেউ চেন্নাইয়ের বদলে বেঙ্গালুরু বা হায়দরাবাদ যেতে চাইলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনেকে টিকিটের টাকাও ফেরত নিচ্ছেন।

ভুগছে রেল পরিষেবাও। বৃহস্পতিবারের করমণ্ডল এক্সপ্রেস বাতিল করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। বুধবার বাতিল হয়েছে চেন্নাই মেল। আগামী ক’দিনে এই দু’টি ট্রেন নিয়েই অনিশ্চয়তা থাকছে। চেন্নাই থেকে বুধবার সারা দিনে ৫০টি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

chennai flood airport shut naval base
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE