সুপ্রিম কোর্ট। -ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতিই যে ‘মাস্টার অব দ্য রস্টার’, প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রই সে রায় দিয়েছেন।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফের যুক্তি, হাইকোর্টের ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি প্রশাসনিক প্রধান বা ‘মাস্টার অব দ্য রস্টার’ হলেও অন্য বিচারপতিদের মতামত শোনা উচিত। জমে থাকা মামলার নিষ্পত্তি নিয়ে আজ দিল্লিতে এক সভায় প্রধান বিচারপতির সামনেই বিচারপতি জোসেফের যুক্তি, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিরা সাধারণত অন্য রাজ্যের হাইকোর্ট থেকে আসেন। সে-ক্ষেত্রে অন্য বিচারপতিদের কার কী বিষয়ে দক্ষতা, কার বেঞ্চে কোন মামলার শুনানি হওয়া উচিত, তা নিয়ে বাকিদের মতামত শোনা উচিত।
গত জানুয়ারিতে প্রবীণ বিচারপতি দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে যে চার প্রবীণ বিচারপতি সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন, বিচারপতি কুরিয়েন তার অন্যতম। তাঁদের প্রধান অভিযোগই ছিল, প্রধান বিচারপতি মিশ্র স্পর্শকাতর মামলা বাছাই করা বিচারপতিদের বেঞ্চে পাঠাচ্ছেন। তার আগেই প্রধান বিচারপতি ঘোষণা করেছিলেন, ‘মাস্টার অব দ্য রস্টার’ হিসেবে তাঁর হাতেই ওই ক্ষমতা রয়েছে। এ নিয়ে মামলায়ও একই রায় দিয়েছেন তিনি। সেই বিবাদে না-গিয়ে, আজ বিচারপতি জোসেফ হাইকোর্টের উদাহরণ তুলে উল্টো যুক্তি দিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধেছেন বিচারপতি জোসেফ। মোদী সরকারের মাসের পর মাস বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশের ফাইল নিয়ে বসে থাকা বন্ধ করতে তাঁর দাবি, সময় বেঁধে দেওয়া হোক। উত্তরাখণ্ডের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কে এম জোসেফকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগের সুপারিশ নিয়ে প্রায় চার মাস আটকে রেখে আপত্তি তোলে মোদী সরকার। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুকেও দিল্লির প্রধান বিচারপতি করার সুপারিশ ছয় মাস পরে ওঠে। বিচারপতি জোসেফের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের ক্ষেত্রে দু’সপ্তাহ এবং হাইকোর্টের ক্ষেত্রে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
তাঁর যুক্তি, বিচারপতিদের শূন্যপদ পূরণে দেরির ফলে মামলার পাহাড় জমছে। বিচারপতিদের অভাব মেটাতে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়স বাড়িয়ে ৭০ বছর করে দেওয়া উচিত। বর্তমানে ওই বয়সসীমা যথাক্রমে ৬৫ এবং ৬২ বছর। ওই সভায় প্রধান বিচারপতি মিশ্রের দাওয়াই, হাইকোর্টের বিচারপতিরা ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তি করতে শনিবারও এজলাসে বসতে পারেন। গত ১০ মাসে শনিবারের শুনানিতে ৩ হাজার ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে।
জমে থাকা মামলার সংখ্যা কমাতে বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, ‘‘সমন পাঠানো, বিবৃতি নথিভুক্ত করা-সহ বিভিন্ন প্রক্রিয়াগত কারণে মামলার অনেক সময় নষ্ট হয়। এজন্য নিম্ন আদালতের প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া উচিত। অনেক জেলা আদালতেই ওয়াই ফাই নেই।’’
বিচারপতি এম বি লোকুর জানিয়েছেন, জেলা আদালতগুলিতে আড়াই কোটি মামলা ঝুলে রয়েছে। হাইকোর্টে এই সংখ্যা ৪৩ লক্ষ।
ফলে জেলা আদালতের দিকে বেশি নজর দিলে আবেদনকারীরা উপকৃত হবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy