Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
India

বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে রেলপথে জুড়ছে কলকাতা-শিলিগুড়ি

বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কাজ শুরু করে দিয়েছে ভারতও।

২০০৮ সালে দুই দেশের উদ্যোগে চালু হয় মৈত্রী এক্সপ্রেস। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে সংগৃহীত।

২০০৮ সালে দুই দেশের উদ্যোগে চালু হয় মৈত্রী এক্সপ্রেস। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে সংগৃহীত।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:১৭
Share: Save:

পড়শি দেশের মধ্যে দিয়েই এ বার রেলপথে জুড়বে কলকাতা-শিলিগুড়ি। বাংলাদেশের উপর দিয়ে ট্রেন চলবে দুই শহরের মধ্যে। সেই মতো সীমান্ত পেরিয়ে দু’দেশের মধ্যে রেলপথ গড়ে উঠবে খুব শীঘ্রই। রেল সূত্রে তেমনটাই জানা যাচ্ছে।

বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কাজ শুরু করে দিয়েছে ভারতও। ২০২১ সালের মধ্যে রেললাইন বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশা রেল কর্তৃপক্ষের। মূলত দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতেই ওই রেলপথ জোড়া হচ্ছে। চালু হওয়ার পর আপাতত ওই পথে শুধুমাত্র মালগাড়ি চলবে। তবে ভবিষ্যতে ওই রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো হতে পারে বলে রেল সূত্রে খবর।

এই পরিষেবা চালু হলে শিয়ালদহ থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে ঢুকবে ট্রেন। বাংলাদেশের ভিতরে পার্বতীপুর, দর্শনা, সঈদপুর, নীলফামারি, তোরণবাড়ি, দোমার, চিলাহাটিপেরিয়ে ফের তা গিয়ে উঠবে ভারতের হলদিবাড়িতে। সেখান থেকে গিয়ে পৌঁছবে শিলিগুড়ি।

আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর দিন আসছেই? এ বছর আরও বেড়েছে বাতাসের বিষ, জানাল রাষ্ট্রপুঞ্জ​

১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগে শেষ বার ট্রেন চলেছিল ভারতের হলদিবাড়ি ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চিলাহাটির মধ্যে। সেইসময় শিলিগুড়ির উপর দিয়ে দার্জিলিং পর্যন্ত ট্রেন চলত। আবার হলদিবাড়ি হয়ে ট্রেন ঢুকত কলকাতায়। সম্প্রতি ওই রুটটিকে পুনরুজ্জীবিত করার সিদ্ধান্ত নেয় দুই দেশ। ভারতের তরফে অবশ্য তেমন খরচ নেই। বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার লাইন বসাতে হবে।তার জন্য দু’দফায় মোট ৪২ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে ভারতীয় রেল। চিলাহাটি থেকে সাড়ে ৭কিলোমিটার লাইন বসাতে বাংলাদেশ সরকার ৮০ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছে।

হলদিবাড়ি স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার জানিয়েছেন, এ পারের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে একটি উড়ালপুল গড়ার কাজ চলছে। চলছে বৈদ্যুতিন সিগন্যালের কাজও। ৫৬০ মিটার করে দু’টি প্ল্যাটফর্মের নির্মাণও প্রায় শেষ। রেল লাইনে আগে যে স্লিপার পাতা ছিল, সেগুলি ৬০ কেজি ওজনের ভার সইতে পারত। সেগুলি সরিয়ে নতুন স্লিপার বসানো হচ্ছে, যেগুলি ৯০ কেজি পর্যন্ত ভার সইতে সক্ষম।

তবে এই পথে ট্রেন চলাচল চালু হলে আদৌ কি কোনও সুবিধা হবে? ঠিক কতটা সময় বাঁচবে? তার জবাবে নর্দান ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের কাটিহার ডিভিশনের এডিআরএম পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘১৯৬৫ সালের শুরুর দিক পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের উপর দিয়ে ট্রেন চলাচল চালু ছিল।তা বন্ধ হয়ে গেলে পরে আমাদের তরফে নতুন রেলপথ গড়ে তোলা হয়। দুই দেশের উদ্যোগে এখন আবার পুরনো রুটটিকে পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে। দু’দেশের যৌথ উদ্যোগে নতুন করে রেলপথ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। আপাতত মালগাড়ি-ই চলবে। তবে ভবিষ্যতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলেও সময় খুব একটা বাঁচবে বলে মনে হয় না। শিলিগুড়ি থেকে শিয়ালদহ আসতে খামোকা বাংলাদেশের উপর দিয়ে ঘুরপথে আসতে যাবেন কেন মানুষ?’’ নতুন রেলপথ বসাতে এবং পরিকাঠামোগত উন্নতি ঘটাতে রেল মন্ত্রকের তরফে ঠিক কত টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে তা নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি।

অ্যানিমেশন: শৌভিক দেবনাথ।

আরও পড়ুন: ভারতে ভুয়ো খবর ছড়াতে বেশি তৎপর হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলিই, প্রকাশ রিপোর্টে​

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মোট ৭টি সীমান্ত চেকপয়েন্ট রয়েছে, তার মধ্যে মাত্র তিনটি পথে ট্রেন চলাচল করে। হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হলে তাতে আখেরে লাভই হবে বাংলাদেশের। ভারতের উপর দিয়ে নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গেও রেলপথে যোগাযোগ স্থাপনেপদক্ষেপ করতে পারবে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India Bangladesh Rail Ministry Rail Route
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE