ছবি: রয়টার্স।
অরুণাচলের আপার সুবনসিরি জেলায় নাচো সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছ থেকে পাঁচ অরুণাচলি তরুণকে অপহরণ করার ঘটনা নিয়ে চিনের পিপল্স লিবারেশন আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানালেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। টুইটারে তিনি জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনা হটলাইনে সীমান্তের ও-পারে চিনা সেনার কাছে অপহরণের বিষয়টি নিয়ে জানতে চেয়েছে। ও-পার থেকে জবাব আসার অপেক্ষা করা হচ্ছে।
সেনা সূত্রে আজ জানানো হয়েছে, সীমান্ত পোস্ট মারফত বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু অপহৃত এক তরুণ সেনাবাহিনীর পোর্টার বলে সংবাদমাধ্যমে তাঁর পরিবার বিবৃতি দেওয়ায় পরিস্থিতি ঘোরালো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পিএলএ ওই তরুণের কাছ থেকে সেনার গতিবিধি ও ঘাঁটিগুলির বিবরণ জানার চেষ্টা করবে। যদিও অপহৃত কোনও তরুণই সেনাবাহিনীর নথিভুক্ত পোর্টার নন। তাঁরা শিকারে গিয়েছিলেন।
বারবার আপার সুবনসিরি সীমান্তে চিনাদের হাতে ভারতীয়দের অপহরণের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু ঘটনার পরে ন্যূনতম খবরটুকু জোগাড় করতেও তিন-চার দিন পার হয়ে যায়। আগের অপহৃতদের উদ্ধারেও দিন কুড়ি সময় লেগেছে।
আরও পড়ুন: এই জিএসটি সর্বনাশা, জেটলির ভিডিয়ো টুইট করে ফের তোপ রাহুলের
আরও পড়ুন: মাদক-বিতর্কে সম্পাদকের ছেলে, অস্বস্তিতে কেরল-সিপিএম
গ্রামবাসীদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী-সাংসদরা সীমান্ত এলাকার সড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখানকার মানুষ কার্যত সভ্য জগত থেকে অনেকটাই দূরে। জেলাসদর দাপোরিজো যেতে হলে নাচো, টাকসিং, গেলেমোর মানুষদের দেড় দিন লেগে যায়। স্থানীয় থানায় হেঁটে এসে খবর দিতে হলেও দিন পার। তাই পারতপক্ষে কেউ থানায় ডায়েরি করতে আসেন না। মোবাইল নেটওয়ার্ক মেলে না। সীমান্তের খবর পৌঁছায় না জেলাসদরে। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে চিনা সেনা অনেকটা ভিতরে ঢুকে এলেও সেনা বা প্রশাসন সেই খবর পাবে না। কেন্দ্র সীমান্ত এলাকা উন্নয়নে বিশেষ প্যাকেজ দিয়েছে। কিন্তু তার কোনও বাস্তবায়ন গ্রামের মানুষ দেখতে পাচ্ছেন না। প্রশাসন ও পরিকাঠামোর চিহ্নমাত্র নেই অরুণাচলের অনেক সীমান্তে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও স্কুলের ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষকরা দাপোরিজোতে বসেই মাইনে পাচ্ছেন। গ্রামের মানুষ অসুস্থ হলে স্থানীয় টোটকাই ভরসা। স্কুলে যাচ্ছে না ছেলেমেয়েরা। শিকার ও মদ্যপান ছাড়া কার্যত কোনও বিনোদন নেই গ্রামবাসীদের জীবনে।
দেশের সব গ্রাম আলোকিত করা বা স্মার্ট সিটির তৈরির কথা বলা কেন্দ্রের কাছে খবরই নেই— গিবা ও নিলিং সার্কলের গ্যাদু, মারকিয়া, মারগিং, পিয়ার মতো বহু গ্রামে বিদ্যুৎ আসেনি। নেই সড়ক বা পানীয় জলের ব্যবস্থাও। সেখানকার মানুষ কখনও মোটরগাড়ি দেখেননি। এখানকার মানুষ কেন্দ্রের কাছে ও নিজেদের সাংসদ কিরেণ রিজিজুর কাছে অনেক বার স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন। মিলেছে আশ্বাস। কিন্তু চিন সীমান্তের এ-পারে গ্রামগুলি একই অন্ধকারে থেকে গিয়েছে। বিআরও যে সড়ক বানিয়েছে তার অবস্থাও বেহাল। সেনাবাহিনীর মতে, বিআরও-র কাজ সীমান্ত সড়ক তৈরি করা। তা-ও সরকারকে সাহায্য করতে তারা প্রচুর অসামরিক সড়ক তৈরি করে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy