প্রতীকী ছবি।
সিকিম সীমান্তে টানাপড়েনের মধ্যেই ভারত মহাসাগরে চিনা ডুবোজাহাজের আনাগোনা। আর একই সঙ্গে চিনের সরকারি সংবাদপত্রে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য তুলে ধরে ভারতকে দেওয়া হল যুদ্ধের হুমকি। যা দু’দেশের সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন উপগ্রহের পাঠানো ছবি তথ্য দিয়েছে, ভারত মহাসাগর এলাকায় সক্রিয় রয়েছে অন্তত ১৪টি চিনা যুদ্ধজাহাজ। এগুলির কয়েকটি অত্যাধুনিক লুয়াং-৩ বা কুনমিং শ্রেণির ডেস্ট্রয়ার। যেগুলি থেকে নিখুঁত নিশানা স্থির করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে। এরই মধ্যে ভারত মহাসাগরে ডিজেল চালিত ইউয়ান শ্রেণির ডুবোজাহাজ পাঠিয়েছে চিন। তবে এটিই প্রথম নয়, বিভিন্ন সূত্রে ভারতীয় নৌসেনা জানতে পেরেছে, ভারত মহাসাগরে ভারতের জলসীমার কাছাকাছি এসে নজরদারি চালাতে সাতটি ডুবোজাহাজ পাঠিয়েছে বেজিং। ২০১৩-১৪ সাল নাগাদ ভারতের জলসীমার আশেপাশে ২টি চিনা রণতরী ও ডুবোজাহাজ নজরে এসেছিল। তার পর থেকে ভারত মহাসাগরে চিনা নৌ বাহিনীর তৎপরতা বেড়েই চলেছে।
সমুদ্রে এ ভাবে শক্তি দেখানোর পাশাপাশি যুদ্ধের আবহ তৈরি করেও চাপ বাড়াতে চাইছে বেজিং। আর সে জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে সরকারি সংবাদ মাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’কে। সিকিম সীমান্তের ডোকা লা-য় প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে মুখোমুখি দু’দেশের সেনা। দু’পক্ষই নিজেদের জমি শক্ত করতে সেনা বাড়িয়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি সংবাদপত্রে চিনা প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ হু জিয়াং মন্তব্য করেছেন, ‘‘ভারত যদি চিনের জমি থেকে সেনা না সরায়, তা হলে চিন বাধ্য হয়ে সামরিক ব্যবস্থা নিতে পারে।’’ তাঁর মতে, ভারত আসলে আমেরিকাকে দেখাতে চাইছে, তারা চিনকে আটকে রাখতে পারে। অবশ্য জিয়াং-এর দাবি, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ শরিক মনে করেন না। কারণ তিনি জানেন, বেজিংয়ের সঙ্গে সংঘাতে যাওয়ার মতো শক্তিশালী নয় দিল্লি।’’
সিকিম সীমান্তে টানাপড়েনের মধ্যে ১৯৬২ সালের যুদ্ধের কথা মনে করিয়েছিল চিন। তার জবাব দিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘বেজিংয়ের বোঝা উচিত ভারত সেই ৬২ সালে পড়ে নেই। ২০১৭ সালের ভারত অনেক আলাদা।’’ এই প্রসঙ্গেই হু জিয়াং-এর দাবি, ‘‘চিন ও ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার যে ফারাক, তা ৬২ সালের থেকেও এখন অনেক বেশি। নিজেদের ভাল চাইলে ভারত শান্ত থাকবে।’’ চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জেং শুয়াং ডোকা লা-য় চিনা সেনাকে রাস্তা গড়তে বাধা দেওয়ায় ভারতীয় সেনার পদক্ষেপকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ আখ্যা দেন। তার পরে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনার বহর বেড়েই চলেছে। আজ ভারতে চিনের রাষ্ট্রদূত লিউ ঝাউউই গোটা পরিস্থিতিকে ‘উদ্বেগজনক’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘‘সেনা সরানোর প্রশ্ন নিয়ে কোনও সমঝোতা হবে না। বল এখন দিল্লির কোর্টে।’’
এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপর চাপ বাড়িয়েছে কংগ্রেস। আজ কংগ্রেস বলেছে, সিকিম সীমান্তে চিনা অনুপ্রবেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে না সরকার। কূটনীতির পথে সমাধান খুঁজতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন দলের মুখপাত্র অজয় মাকেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy