অরুণাচল নিয়ে তিক্ততা আরও বাড়াতে চায় বেজিং, বুঝিয়ে দিচ্ছে চিনা কাগজের প্রতিবেদন। —প্রতীকী ছবি।
ভারতের ‘অবৈধ’ শাসনে অত্যন্ত দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন ‘দক্ষিণ তিব্বত’-এর মানুষ এবং তাঁরা চিনের অধীনে আসতে চাইছেন। চিনের সরকারি সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমন কথাই লেখা হয়েছে। অরুণাচল প্রদেশকে দক্ষিণ তিব্বত বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেই প্রতিবেদনে। দলাই লামার অরুণাচল সফরের কঠোর সমালোচনাও করা হয়েছে।
অশীতিপর তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামা এখন অরুণাচল সফরে রয়েছেন। কিন্তু চিন অরুণাচলকে, বিশেষ করে তাওয়াংকে তিব্বতের দক্ষিণাংশ মনে করে। দলাই লামা তাওয়াং যাবেন বলে যে দিন জানা গিয়েছিল, সে দিন থেকেই এই সফরের তীব্র বিরোধিতা করেছে বেজিং। চিনা সংবাদমাধ্যম এবং চিনা বিদেশ মন্ত্রক বার বার দলাই লামার প্রস্তাবিত সফরসূচি বাতিলের দাবি তুলেছে। ভারত সফরসূচি বাতিল না করায় বেনজির ভাষায় হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। নয়াদিল্লি নিজের অবস্থান থেকে অবশ্য নড়েনি।
তিব্বতি ধর্মগুরু অরুণাচলে পা রাখা মাত্রই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়ে বেজিং জানিয়েছিল, চিন-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মারাত্মক ক্ষতি করে দিল নয়াদিল্লি, এর ফল নয়াদিল্লিকে ভুগতে হবে। বুধবার ফের চিন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল। অরুণাচল প্রদেশকে ফের ‘দক্ষিণ তিব্বত’ হিসেবে উল্লেখ করল, ভারত অবৈধ ভাবে ওই অঞ্চল দখল করে রয়েছে বলে চিনা সরকারি সংবাদপত্রে লেখা হল এবং ওই অঞ্চলের মানুষ চিনের শাসনে ফিরতে চাইছেন বলে দাবি করা হল।
তাওয়াং-এ দলাই লামাকে ঘিরে এই বিপুল জনস্রোতই চিনের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে। ছবি: পিটিআই।
চিনা সংবাদপত্রের প্রতিবেদনটির মূলত দু’টি দেক। প্রথমত, তাতে ভারতকে আক্রমণ করা হয়েছে, অরুণাচল ভারতের নয় বলে লেখা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, দলাই লামার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।
ভারত সম্পর্কে লেখা হয়েছে, ‘‘ভারতের অবৈধ শাসনে দক্ষিণ তিব্বতের মানুষ খুব সমস্যাসঙ্কুল জীবনযাপন করছেন, বিভিন্ন রকমের বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং তাঁরা চিনের অধীনে ফিরতে চাইছেন।’’
আরও পড়ুন: গোপনে আকছার ফাঁসি দেওয়া হয়, ‘দুষ্ট রাষ্ট্র’ চিন, বলল অ্যামনেস্টি
দলাই লামা সম্পর্কে চিনা সংবাদপত্রের সুর আরও চড়া। নিজের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে টিকিয়ে রাখার জন্য তিনি ভারতের থেকে যে সহায়তা নিচ্ছেন, তার বিনিময়েই তাওয়াং-কে ভারতের হাতে তুলে দিতে চাইছেন— দলাই সম্পর্কে এমনই মন্তব্য করা হয়েছে চিনা কাগজটিতে। সেখানে দলাই লামা সম্পর্কে আরও লেখা হয়েছে, ‘‘বেঁচে থাকার জন্য তিনি ভারতের উপর নির্ভর করেন, তাই তিনি যে নিজের প্রভুকে খুশি করার জন্য উদগ্রীব, তা বোঝা যায়, কিন্তু প্রভুর আনুকূল্য পাওয়ার জন্য দক্ষিণ তিব্বতকে বেচে দিয়ে তিনি বাড়াবাড়ি করে ফেলছেন।’’ দলাই লামা নিজেকে ‘ভারতের সন্তান’ বলে দাবি করেছেন বহু বার। তা নিয়েও প্রবল কটাক্ষ রয়েছে চিনা সংবাদপত্রটিতে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘সাম্প্রতিক কালে জনসমক্ষে ২০ বারেরও বেশি তিনি নিজেকে ভারতের সন্তান বলে মন্তব্য করেছেন। দক্ষিণ তিব্বতকে বেচে দিয়ে এ বার তিনি ভারতের সন্তান হিসেবে নিজের ওজন একটু বাড়িয়ে নিতে চাইছেন, কিন্তু বুঝতে পারছেন না যে ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যার সমাধান এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথে তিনি কী পরিমাণ সমস্যা তৈরি করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy