Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সৌজন্যে ভুতুড়ে টুইট, সিবিআই-আরবিআইয়ের পর এ বার প্রকাশ্যে রেলের কোন্দল

দু’টি ভুতুড়ে টুইট! সেগুলিকে কেন্দ্র করে সরকারের অন্দরের বিরোধ ফের প্রকাশ্যে চলে এল। সিবিআই-আরবিআইয়ের পরে এ বার ক্ষমতা নিয়ে প্রকাশ্য কোন্দল শুরু হয়েছে রেল মন্ত্রকেও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:০৯
Share: Save:

দু’টি ভুতুড়ে টুইট! সেগুলিকে কেন্দ্র করে সরকারের অন্দরের বিরোধ ফের প্রকাশ্যে চলে এল। সিবিআই-আরবিআইয়ের পরে এ বার ক্ষমতা নিয়ে প্রকাশ্য কোন্দল শুরু হয়েছে রেল মন্ত্রকেও। এক দিকে প্রশাসনিক স্তরে বিবাদ চলছে। অন্য দিকে দলের ভিতরে ক্রমশ মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিজেপি সাংসদ-কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। সরব শরিক নেতারাও। সব দেখে বিরোধীদের দাবি, প্রশাসনের উপর থেকে ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। আলগা হচ্ছে রাশ।

চলতি ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের কুর্সি। সরকারি নথি অনুযায়ী আগামিকাল মেয়াদ শেষ হচ্ছে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান অশ্বিনী লোহানির। যদিও সূত্রের খবর, ভোট মরসুমে নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ লোহানির কর্মজীবনের মেয়াদ অন্তত এক বছর বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে। আবার রেলেরই অন্য সূত্রের দাবি, শুরু থেকেই রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের সম্পর্ক খারাপ। রেল কর্তাদের একাংশের ধারণা, লোহানির মেয়াদ বৃদ্ধি চায় না রেলমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ শিবির। দু’পক্ষের টানাপড়েনের মধ্যে দু’টি টুইট সামনে আসে। যা আরও ইন্ধন জুগিয়েছে গোটা বিতর্কে।

২১ ডিসেম্বর অশ্বিনী লোহানির ছবি দেওয়া একটি অ্যাকাউন্টের টুইটে বলা হয়, ‘‘নতুন বছরে নতুন ইনিংস শুরু করার জন্য মুখিয়ে আছি। দীর্ঘ সময় দেশের দু’টি সর্ববৃহৎ গণপরিবহণ সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া ও ভারতীয় রেলে কাজ করার পরে আমি ৩১ ডিসেম্বর অবসর নিচ্ছি।’’ স্বভাবতই লোহানি ঘনিষ্ঠ শিবিরে শুরু হয় জল্পনা। তাহলে কি চেয়ারম্যানের মেয়াদ বাড়াতে রাজি হলেন না প্রধানমন্ত্রী? অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ তথা দলের কোষাধ্যক্ষ রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের ইচ্ছেই কি তাহলে মেনে নিলেন মোদী?

আরও পড়ুন: প্রযোজনা, পরিচালনা ও অভিনয়ে— মোদী ও কোম্পানি, অগুস্তা নিয়ে সরব কংগ্রেস

কিছু ক্ষণের মধ্যেই অবশ্য লোহানির দফতর জানিয়ে দেয়, টুইটটি ভুয়ো। গুঞ্জন থেমে যায়। কিন্তু গত কাল পৌনে বারোটা নাগাদ ফের সক্রিয় হয় লোহানির ভুয়ো অ্যাকাউন্টটি। তাতে বলা হয়, ‘‘আমার মেয়াদ তিন বছর বাড়ানো ছাড়া সরকারের কাছে আর কোনও রাস্তা খোলা নেই। আমার নেতৃত্বে ভারতীয় রেলের প্রভূত সংস্কার হয়েছে। যদিও এখনও অনেক কাজ বাকি। নতুন করে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।’’

আরও পড়ুন: ইতিবাচক প্রচার চাই, বর্ষশেষে বার্তা মোদীর

লোহানি শিবির জানায়, ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকেই ওই টুইট করা হয়েছে। তাছাড়া কর্মরত কোনও আমলা যে এ ভাষায় নিজের ঢাক পেটাবেন না তা বলাই বাহুল্য। লোহানি শিবিরের মতে, তিনি নতুন করে দায়িত্ব পান এটা রেলের কোনও শীর্ষ কর্তা চান না। তাঁরই অঙ্গুলিহেলনে লোহানির রাস্তায় বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। লোহানি শিবিরের ধারণা, তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি হলে রেল বোর্ডের যে সদস্যেরা চেয়ারম্যানের দৌড়ে রয়েছেন, তাঁদের পক্ষে ওই কুর্সিতে বসা সম্ভব হবে না। নিজেদের আশা জিইয়ে রাখতেই লোহানির নাম কাটতে তৎপর হয়েছেন কর্তাদের একাংশ।

কয়েক ঘণ্টা পরেই নতুন বছর। সেটা ভোটের বছরও বটে। বিরোধীদের মতে, ওই ভোটের বছরে আরও প্রশ্নের মুখে পড়তে চলেছে মোদীর কর্তৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE