Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

স্বাধীনতা সংগ্রামে কংগ্রেসের ভূমিকা মানল আরএসএস

দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে শুরু হওয়া তিন দিনের সঙ্ঘের ওই আলোচনা সভার আজ ছিল প্রথম দিন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সঙ্ঘ প্রধান জানান, সঙ্ঘকে বোঝার জন্যই ওই আলোচনা সভা।

সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। ফাইল চিত্র।

সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৭
Share: Save:

আলোচনা সভার মূল সুরটি ছিল সঙ্ঘ পরিবারের ভাবনায় ভবিষ্যতের ভারত। কিন্তু ভবিষ্যতের ভারতের স্বপ্ন দেখানোর পরিবর্তে কী ভাবে জন্মলগ্ন থেকেই সঙ্ঘকে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সে কথাই জানালেন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। যা করতে গিয়ে ভাগবত আজ কার্যত স্বাধীনতা সংগ্রামে কংগ্রেসের ভূমিকাকে স্বীকার করে নেন। ভাগবতের ওই বক্তব্যের পরেই বিতর্ক ছড়িয়েছে দিল্লির রাজনৈতিক শিবিরে।

দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে শুরু হওয়া তিন দিনের সঙ্ঘের ওই আলোচনা সভার আজ ছিল প্রথম দিন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সঙ্ঘ প্রধান জানান, সঙ্ঘকে বোঝার জন্যই ওই আলোচনা সভা। তাঁর মতে, ‘‘হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতেই যে সঙ্ঘের জন্ম হয়েছিল এ কথা ঠিক। তাই জন্মলগ্ন থেকেই সঙ্ঘের বিষয়ে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের নেতিবাচক ভাবনা রয়েছে।’’ ভাগবত জানান, সেই ভাবনা দূর করতেই সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে তিন দিনের আলোচনা সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিরোধীদের অবশ্য দাবি, দেশ জুড়ে মেরুকরণের রাজনীতির পিছনে সঙ্ঘের হাত থাকার অভিযোগ উঠছে। লোকসভা ভোটের আগে সেই অভিযোগকে খণ্ডন করতে সরকারি মদতে বিজ্ঞান মঞ্চে এই বিশাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির মোহন ভাগবতদের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ স্বাধীনতা সংগ্রামে সঙ্ঘের প্রত্যক্ষ ভূমিকা না থাকা। আজ সেই অভিযোগ খণ্ডনে একাধিক বার মুখ খুলতে দেখা যায় ভাগবতকে। প্রথমেই তিনি স্বীকার করে নেন স্বাধীনতা সংগ্রামে মানুষকে একজোট করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল কংগ্রেস। এমনকি সে সময়ে কংগ্রেসের সিদ্ধান্তকে যে তাঁরা সমর্থন করেছিলেন তাও স্বীকার করে নেন ভাগবত। তাঁর কথায়, ‘‘১৯৩১ সালে লাহৌর অধিবেশনে কংগ্রেস স্বরাজ প্রস্তাব আনার পরে সেই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্য সমস্ত কর্মী-সমর্থকদের নির্দেশ দেন কেশব হেডগাঁওকর।’’ এ ছাড়া কী ভাবে হেডগাঁওকর বিভিন্ন সময়ে অনুশীলন সমিতি থেকে শুরু করে বিপ্লবীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে স্বাধীনতার জন্য কাজ করেছেন তাও বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেন ভাগবত।

সঙ্ঘের আলোচনা সভায় চলচ্চিত্র, ক্রীড়া, বাণিজ্য জগৎ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও কোনও বিরোধী দলের নেতাকে আজ বিজ্ঞান ভবনে দেখা যায়নি। বিরোধী দলগুলি অবশ্য সরাসরি বয়কটের কথা এড়িয়ে গিয়ে বলেছে, তারা কোনও আমন্ত্রণ পত্র পায়নি। অন্য দিকে সঙ্ঘের দাবি, বিরোধী দলগুলিকেও প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য আমন্ত্রণ করা হয়েছিল।

শুরু থেকেই সঙ্ঘ পরিবারের বিরুদ্ধে বিজেপিকে চালনা করার অভিযোগ যে রয়েছে তা বিলক্ষণ জানেন ভাগবত। আজ তাই নিজের বক্তব্যে সঙ্ঘের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সমাজ গড়তে বেশি মনোযোগী। ক্ষমতায় কে বসবে সেই সিদ্ধান্ত পরবর্তী সময়ে সমাজ তথা মানুষ নেবেন। সঙ্ঘের সিদ্ধান্ত মেনে সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নিলে তা আমাদের পরাজয়। আমরা চাই দেশের ইতিহাস লিখুন দেশের মানুষ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE