জানা, না-জানার কথা— কোনটা সত্যি? কোনটা মিথ্যা?
রাহুল গাঁধী অভিযোগ করেছিলেন, রাফাল নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে আড়াল করতেই মিথ্যা বলছেন দাসোর সিইও এরিক ত্রাপিয়ে। গত কাল রাফাল যুদ্ধবিমান প্রস্তুতকারী সংস্থাটির শীর্ষকর্তা এরিক দাবি করেন, তিনি মিথ্যা বলেন না। মিথ্যা বলার বদনামও নেই। কংগ্রেস আজ তুলে ধরল বেশ কিছু তথ্য। আর তাতেই জট পাকিয়ে গেল সব।
গত মাসে এক সাক্ষাৎকারে এরিক দাবি করেছিলেন, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যাল-এর সঙ্গে যে তাদের কোনও সমঝোতা হচ্ছে না, ২০১৫-এর ১৩ এপ্রিলের আগে এটা তাঁদের অজানা ছিল। এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সে দিনই ফ্রান্সে অনিল অম্বানীকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার ঘোষণা করেছিলেন।
কংগ্রেসের বক্তব্য, ২০১৫ সালের মার্চে অনিল জানিয়েছিলেন, মোদীই তাঁকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আসতে উৎসাহ দিচ্ছেন। সেই মাসেই তিনি একটি প্রতিরক্ষা সংস্থা তৈরি করেন। আর তার দু’সপ্তাহ পরেই হ্যাল-এর বদলে তারা বরাত পেয়ে যায়। অনিল আগে থেকে সব জানলেও, জানতেন না সেই সময়ের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। বিদেশসচিবের কাছেও কোনও খবর ছিল না।
আরও পড়ুন: রাফালের দাম কেন গোপন, প্রশ্ন উঠছেই
কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা কপিল সিব্বলের প্রথম প্রশ্ন, মোদীর ফ্রান্স সফরের আগেই অনিল নতুন সংস্থা তৈরি করে ফেললেন, অথচ দাসোর কর্তা ঘোষণার আগে কিছুই জানতেন না! এটা কী করে হয়? দ্বিতীয় প্রশ্ন, দাসোর কর্তা বলেছেন, ২০১৫-র ২৪ এপ্রিল রিলায়্যান্সের সংস্থা তৈরি হয়েছে, যার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ হয়েছে দাসোর। অথচ এপ্রিল পর্যন্ত এরিক কিছু জানতেন না! এটাও বা কী করে সম্ভব?
এখানেই শেষ নয় ধোঁয়াশার। দাসোর কর্তা বলেছিলেন, হ্যালের কাছে জমি নেই, অনিলের আছে। তাই তাঁর সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ করেছেন। কিন্তু তথ্য বলছে, সমঝোতা হয় জমি ছাড়াই। অনিল জমির জন্য আবেদনই করেন সে বছর জুনে, যৌথ উদ্যোগ হওয়ার মাস দুই পরে। জমি বরাদ্দ হয় অগস্টে। কপিল উল্লেখ করেন, হ্যালের কাছে বিস্তর জমি ছিল। বাড়তি জমি জন্য ২০১২ সালে আবেদনও করেছিল তারা।
আরও পড়ুন: রাফাল-প্রশ্ন শুনে খেই হারাল কেন্দ্র
‘‘আরও আছে,’’ বলছেন কপিল। যৌথ উদ্যোগে দাসো ও রিলায়্যান্সের সমান-সমান বিনিয়োগের কথা ছিল। কিন্তু শুধু দাসোই বিনিয়োগ করেছে। সেই অর্থে জমি কেনেন অনিল। ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সোয়া ওলাঁদের দাবি ছিল, অনিলকে বরাত দিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। ভারত সরকারই অনিলের নাম বলেছে। তা হলে কে সত্যি, কে মিথ্যা বলছেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy