Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কংগ্রেস শীর্ষে রাহুলকে ফেরানোর প্রস্তুতি শুরু

লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের দায় নিয়েই সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা ঘোষণা করেছিলেন রাহুল। যা মঞ্জুর হতেই মাস দুয়েক লেগে যায়! রাহুলের পরে দলের রাশ যাতে প্রবীণ নেতাদের হাতে পুরোপুরি চলে না যায়, তা অবশ্য নিশ্চিত করেছিলেন সনিয়া-পুত্র।

অভ্যর্থনা: বাল্মীকি জয়ন্তী উপলক্ষে সংবর্ধনা সনিয়া গাঁধীকে। রবিবার নয়াদিল্লিতে। এ দিন বাল্মীকি রথযাত্রার সূচনাও করেন কংগ্রেস সভানেত্রী। পিটিআই

অভ্যর্থনা: বাল্মীকি জয়ন্তী উপলক্ষে সংবর্ধনা সনিয়া গাঁধীকে। রবিবার নয়াদিল্লিতে। এ দিন বাল্মীকি রথযাত্রার সূচনাও করেন কংগ্রেস সভানেত্রী। পিটিআই

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:০৪
Share: Save:

ঠিক দু’মাস হল পরিস্থিতির চাপে ফের কংগ্রেসের হাল ধরতে হয়েছে সনিয়া গাঁধীকে। দায়িত্ব নেওয়ার আগেই সনিয়া স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, পাকাপাকি নয়, বড়জোর অন্তর্বর্তী সভানেত্রী হতে পারেন। সামনে দুই রাজ্যে ভোট মিটলেই যাতে রাহুল গাঁধীকে ফের সভাপতি পদে ফেরানো হয়, এ বারে সেই দাবি জোরালো করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে কংগ্রেসের একাংশে।

লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের দায় নিয়েই সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা ঘোষণা করেছিলেন রাহুল। যা মঞ্জুর হতেই মাস দুয়েক লেগে যায়! রাহুলের পরে দলের রাশ যাতে প্রবীণ নেতাদের হাতে পুরোপুরি চলে না যায়, তা অবশ্য নিশ্চিত করেছিলেন সনিয়া-পুত্র। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে সনিয়াকেই ফের দায়িত্ব নিতে হয়। এতে মুখে হাসি ফুটেছে অনেক প্রবীণ নেতার। সনিয়াকে সামনে রেখেই দলকে এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে তাঁদের অনেকেই। কিন্তু দু’মাস গড়াতে না গড়াতেই রাহুলকে ফের সভাপতি পদে ফেরানোর দাবি জোর কদমে উঠতে শুরু করেছে।

গত কয়েক দিন ধরে প্রকাশ্যেই এই দাবি তুলছেন সলমন খুরশিদের মতো প্রবীণ নেতা। নিজের ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্টও লিখেছেন তিনি। সলমনের সাফ কথা, ‘‘সনিয়া গাঁধী অস্থায়ী রূপে দায়িত্ব নিয়েছেন। আমার মতে, রাহুল গাঁধীই সভাপতি পদে ফিরে আসুন। দলের কর্মীরাও চান, রাহুলের নেতৃত্বে কাজ করতে।’’ সভাপতি থাকার সময় রাহুল ছত্তীসগঢ়ে মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন ভূপেশ বাঘেলকে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘অতীতে রাজীব গাঁধী, সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। কিন্তু রাহুল গাঁধীর নেতৃত্ব নিয়ে দলের কেউ কোনও প্রশ্ন তোলেননি। ফলে সভাপতি পদে তাঁর আবার দায়িত্ব নেওয়া উচিত।’’

কংগ্রেসের এক নেতা জানান, দুই সপ্তাহের মধ্যে হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রে ভোট শেষ হয়ে ফল প্রকাশ হয়ে যাবে। দুই রাজ্যে কংগ্রেস যে খুব একটা আশায় আছে, এমন নয়। কিন্তু এই ভোটপর্ব মিটলেই রাহুলকে ফের সভাপতি করার প্রক্রিয়া শুরু হওয়া উচিত। কারণ, এর পর ঝাড়খণ্ড, দিল্লিতে বিধানসভা ভোট। তার পর কোনও না কোনও ভোট লেগেই থাকবে। রাহুল ইস্তফা ঘোষণার পরে দলের মধ্যে ঘরোয়া স্তরে এমনটাই আলোচনা হয়েছিল, কাউকে অন্তর্বর্তী সভাপতি করে বছরের শেষ নাগাদ ভোট করা। তত দিনে রাহুলও মনস্থির করার সুযোগ পাবেন।

রাহুল ঘনিষ্ঠ যুব নেতাদের মতে, দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে এখনও মনস্থির করেননি সনিয়া-পুত্র। তবে এমনটাও মনে করার কোনও কারণ নেই, ‘ম্যাডাম’ চুপ করে বসে আছেন আর প্রবীণেরা তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে, প্রবীণ ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার চাপে রাহুল-শিবিরের অশোক তানোয়ার দল ছেড়েছেন। কিন্তু ভোটে হারলে কাঠগড়ায় দাঁড়াবেন হুডাই। তখন নবীন নেতাদের কদর বাড়তে পারে। সম্প্রতি এক বৈঠকে সনিয়া বলেছেন, ‘‘যুবকরাই দলের ভবিষ্যৎ। তাঁদের পথেঘাটে নেমে আরও লড়াই করতে হবে।’’ যা দেখে কংগ্রেসের অনেকের ধারণা, রাহুলের জন্যই আসলে ক্ষেত্র প্রস্তুত করছেন সনিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Sonia Gandhi Rahul Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE