সিবিআই-কাণ্ডে এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কাঠগড়ায় তুললেন রাহুল গাঁধী। গোটা বিতর্কে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার তদন্তের দাবি তুলল কংগ্রেস।
আজ দিল্লিতে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সিবিআইয়ের গৃহযুদ্ধ নিয়ে বৈঠক করেন রাহুল। তার পরেই বিকেলে দলের নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাকে দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করানো হয়। সেখানে কংগ্রেস অভিযোগ করে, গত সাড়ে চার বছর ধরে সিবিআইকে ‘বন্ধক’ রেখে নিজেদের ‘পুতুল’ বানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ। বিজেপির ‘ডার্টি ট্রিকস’ বিভাগ হিসেবে সিবিআইকে ব্যবহার করা হয়েছে। কোন এক্তিয়ারে সিবিআইয়ের দুর্নীতির বিষয়ে তার প্রধান ও র-এর প্রধানকে নিজের বাড়িতে ডেকে বৈঠক করে তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী? এটি অসাংবিধানিক ও অনৈতিক। গোটা ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার তদন্ত হওয়া উচিত বলে দাবি করেছে কংগ্রেস।
ইউপিএ জমানায় কয়লা কেলেঙ্কারিতে সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা সিবিআইয়ের তদন্ত রিপোর্ট তৎকালীন আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার দেখেছিলেন। খোদ সেই সময়ের সিবিআই প্রধান রঞ্জিত সিংহই সুপ্রিম কোর্টকে সে কথা জানিয়েছিলেন। বিরোধী দলে থাকা অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজের মতো বিজেপি নেতারা সেই সময়ে হল্লা করে সংসদ অচল করে রাখেন। অবশেষে আইনমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের ঘনিষ্ঠ অশ্বিনীকে। কংগ্রেসের প্রশ্ন, যদি সিবিআইয়ের কাজে নাক গলানোর জন্য বিজেপির চাপে কংগ্রেসের মন্ত্রীর পদ খোয়া যায়, তা হলে এখনও তো প্রধানমন্ত্রী ঠিক একই কাজ করছেন!
সিবিআইয়ের গৃহযুদ্ধের উত্তাপ যত বাড়ছে, বিজেপিও তত এই নিয়ে নীরব থাকছে। দলের কোনও নেতাই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না। আর এই সুযোগে কংগ্রেস-সহ বাকি বিরোধী দলও আক্রমণের ধার বাড়াচ্ছে। কংগ্রেস আজ অভিযোগ করে, ব্যপম মামলায় সিবিআই মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে ক্লিনচিট দিয়েছে। ২৬ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যাঙ্ক প্রতারণায় অভিযুক্ত নীরব মোদী ও মেহুল চোক্সীর
তদন্তকারী সিবিআই অফিসারদের বদলি করা হয়। উল্টে গোধরা তদন্তে রাকেশ আস্থানার ভূমিকা নিয়ে সংশয় থাকলেও তাঁকে সিবিআইতে আনা হয়। কয়লা কেলেঙ্কারিতে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের এক অফিসারের ভূমিকা থাকলেও চাপ দিয়ে অভিযুক্তের বদলে তাঁকে সাক্ষী করা হয়েছে।
দিল্লিতে আজ প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি, গুলাম নবি আজাদ, সীতারাম ইয়েচুরি, তারিক আনোয়ার, শরদ যাদবরাও এক মঞ্চে এসে নরেন্দ্র মোদীর তুলোধনা করেন। বিশেষ করে মোদী জমানায় যে ভাবে বিভাজনের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। আনসারি বলেন, যাঁরা পরিবেশে বিষ ছড়াচ্ছে, তাঁদের উৎখাত করতে সব রকম চেষ্টা করতে হবে। এই মঞ্চ থেকেই আওয়াজ ওঠে, সিবিআইয়ে যে ভাবে গৃহযুদ্ধ চলছে, গোটা দেশে সেই পরিবেশ তৈরি করে ফায়দা তুলতে চান মোদী। ২০১৯ সালে তাঁদের হটানোই লক্ষ্য হওয়া উচিত। শুধু সিবিআই নয়, ইডি, এসএফআইও, এনআইএ, সিবিডিটি, আয়কর— সব প্রতিষ্ঠানে চক্রান্ত করে হামলা করছেন প্রধানমন্ত্রী। সিভিসির ভূমিকাও সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। বিরোধীদের প্রশ্ন, তাদের উপরেও রাজনৈতিক চাপ নেই তো!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy