শুক্রবার এমসে যুবককে কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ দেওয়া হচ্ছে।
করোনার টিকা তৈরির ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে বিভিন্ন দেশ। পিছিয়ে নেই ভারতও। শুক্রবার নতুন মাইলফলক স্পর্শ করল এ দেশের টিকা গবেষণা। গতকাল থেকে শুরু হল করোনার সম্ভাব্য টিকা কোভ্যাক্সিনের হিউম্যান ট্রায়াল বা মানবশরীরের উপর পরীক্ষা। এমসে বছর তিরিশের এক যুবকের দেহে কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। তার ফলের উপর নজর রেখেই স্থির হবে পরীক্ষার পরবর্তী ধাপ।
করোনা অতিমারি দমনে টিকা তৈরির চেষ্টা করছে বহু দেশ। সেই চেষ্টায় সামিল হায়দরাবাদের সংস্থা ভারত বায়োটেকও। প্রাথমিক পরীক্ষায় বেশ আশা জাগিয়েছে ভারত বায়োটেকের সম্ভাব্য করোনা টিকা কোব্যাক্সিন। শুক্রবার এমসে ৩০ বছরের এক যুবকের দেহে কোভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছে। এই পর্যায়ে মোট ১০০ স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিকে কোভ্যাক্সিন দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। হিউম্যান ট্রায়ালের আগে শুরু হয়েছিল স্বেচ্ছাসেবক বাছাই পর্ব। তাতে ১২ জন স্বেচ্ছাসেবককে ডাকা হয়। নাসারন্ধ্র, শ্বাসযন্ত্র এবং রক্তপরীক্ষার পর তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে বেছে নেওয়া হয়। আপাতত দু’টি ধাপে শেষ হবে এই হিউম্যান ট্রায়াল।
এমসের কমিউনিটি মেডিসিনের অধ্যাপক তথা প্রধান গবেষক সঞ্জয় রাই বলেন, ‘‘দিল্লির ওই বাসিন্দার দু’দিন আগে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছিল। তিনি সুস্থ এবং স্বাভাবিক। তাঁর অন্য কোনও অসুস্থতাও নেই। তাঁকে ০.৫ মিলিমিটারের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে।’’ এর কোনও ক্ষতিকারক প্রভাব আপাতত ওই ব্যক্তির শরীরে দেখা যায়নি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। আগামী ৭ দিন তাঁর ওপর নজর রাখা হবে। কোভ্যাক্সিনের এই প্রথম ডোজ মানুষের শরীরে কেমন কাজ করছে তা খতিয়ে দেখার পরেই শুরু হবে পরীক্ষার পরবর্তী পর্যায়। জানা গিয়েছে, কোভ্যাক্সিনের হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য প্রথম ধাপে বেছে নেওয়া হয়েছে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সী স্বাস্থবান ব্যক্তিদের, যাঁদের কোনও কো-মর্বিডিটি নেই। অন্তঃসত্ত্বা নন এমন মহিলারাও রয়েছেন ওই তালিকায়।
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ, রয়েছেন কোয়রান্টিনে
প্রথম ধাপের ফল আশানুরূপ হলে ৭৫০ জনের উপর শুরু হবে দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা। তাঁদের মধ্যে থাকবেন ১২ থেকে ৬৫ বছর বয়স্করা। ইতিমধ্যেই ১ হাজার ৮০০ জন স্বেচ্ছাসেবক পরীক্ষার জন্য নিজেদের নাম নথিবদ্ধ করেছেন বলেও জানা গিয়েছে। এমসের অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া বলেন, ‘‘আমরা প্রথম ধাপে টিকাটি কতটা নিরাপদ তা খতিয়ে দেখব, সেটাই আমাদের কাছে প্রাথমিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে টিকার ডোজ কতটা হবে তাও খতিয়ে দেখা হবে।’’
আরও পড়ুন: দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ লক্ষ ছাড়াল, মৃত্যু পেরলো ৩১ হাজার
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং ন্যাশনাল ইন্সস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি)-র সহায়তায় ভারত বায়োটেকের তৈরি করা ওই টিকাটি মানব শরীরের উপর পরীক্ষা চালানোর জন্য সম্প্রতি অনুমোদন দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া। ওই পরীক্ষা চালানোর জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে এমস-সহ দেশের মোট ১২টি হাসপাতালকে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোভ্যাক্সিন অনেকটাই আশার আলো জাগিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy