Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in India

বাড়ছে সংক্রমণ, তবু লকডাউন উঠল অসমে

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সব বিধিনিষেধ উঠে গেলেও মনে রাখতে হবে গুয়াহাটি তথা রাজ্যের অবস্থা ভয়াবহ।

এএফপি-র তোলা প্রতীকী ছবি।

এএফপি-র তোলা প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৪৩
Share: Save:

অসমে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা। এমনকি কোভিড নেগেটিভ হয়ে বাড়ি ফেরার পরেও অনেকে মারা যাচ্ছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করে বলছেন, ‘বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে অসম।’ এমন পরিস্থিতিতে, মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণ আজ ঘোষণা করলেন আগামী কাল থেকে সপ্তাহান্তের লকডাউন ও নৈশ কার্ফু কিছুই থাকছে না। চলাফেরায় থাকবে না কোনও বাধা! চালু হচ্ছে গণ পরিবহণ। এমনকী অনুমতি দেওয়া হচ্ছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় জমায়েতেও।

কিন্তু কেন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে এমন সিদ্ধান্ত?

স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, করোনা পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। যে গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে সেপ্টেম্বরেই রাজ্যে ৯০ হাজার মানুষ সংক্রামিত হতে পারেন। তখন চিকিৎসা চালানোই সমস্যা হবে। কিন্তু রাজ্যের অর্থনীতি বাঁচাতে, রাজস্ব পেতে কাজকর্ম শুরু করতেই হতো। তা ছাড়া, এখন থেকে লকডাউন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত রাজ্য নয়, নেবে কেন্দ্র। নতুন নির্দেশে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, ৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে গণ পরিবহণ। আপাতত বিবাহে ৫০ জন ও সৎকারে ২০ জন লোক থাকতে পারবেন। ২০ সেপ্টেম্বরের পর থেকে সংখ্যাটি বেড়ে ১০০ জন হবে। ২১ সেপ্টেম্বর থেকে সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, মনোরঞ্জন, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সর্বাধিক ১০০ লোক সমবেত হওয়ার অনুমতি মিলবে।

কনটেনমেন্ট জ়োনগুলিতে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পূর্ণ লকডাউন থাকবে। সিনেমা হল, সুইমিং পুল, প্রেক্ষাগৃহ, স্কুল-কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। স্কুলে ৫০ শতাংশ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে হাজির থাকতে হবে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাছাই ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকের অনুমতিসাপেক্ষে স্কুলে যেতে পারবে।

আনলক পর্বে রাস্তায় মানুষের নিয়মভঙ্গের ভয়াবহ ছবি দেখা গিয়েছে। গুয়াহাটিবাসী সামাজিক দূরত্ব, মুখোশ পরার কোনও নিয়ম মানছেন না, এই অভিযোগে গৌহাটি হাইকোর্টে জনস্বার্থ আবেদন দায়ের হয়। প্রধান বিচারপতি অজয় লাম্বার বেঞ্চ রাজ্য সরকার ও সব জেলাশাসক-এসপিদের নির্দেশ দিয়েছে মানুষ যাতে বাধ্যতামূলকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন তা নিশ্চিত করতে হবে। মুখোশ না পরা বা অন্য নিয়ম ভাঙলে শুধু জরিমানা নয়, অন্য শাস্তিরও ব্যবস্থা রাখতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সব বিধিনিষেধ উঠে গেলেও মনে রাখতে হবে গুয়াহাটি তথা রাজ্যের অবস্থা ভয়াবহ। আশঙ্কা আরও বাড়াচ্ছে কোভিড নেগেটিভ হয়ে বাড়ি ফেরার পরে মারা যাওয়া রোগীর সংখ্যা। তিনি বলেন, “করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরেও রোগীদের বিভিন্ন অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে। ফুসফুসে ফাইব্রোসিস হয়ে যাচ্ছে। আর আগের মতো দম থাকছে না। করোনা পজিটিভ ৩৩০ জনের মৃত্যুর তথ্য সরকারি ভাবে দেওয়া হলেও আরও প্রায় সাতশো জন করোনা সারার পরে মারা গিয়েছেন। যা স্বাস্থ্য দফতরকে বেজায় চিন্তায় ফেলেছে।”

অসমে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ১,১৮,৩৩৩ জন। করোনামুক্ত রোগীর সংখ্যা ৯০,৬৯৭ জন। মৃতের সংখ্যা ৩৩০ জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in India Coronavirus Assam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE