Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

আর্থিক সুরাহা নিয়ে চুপ কেন্দ্র

প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, আজ সংসদে অর্থ বিল পাশের সময় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন গরিব মানুষের হাতে নগদ জোগানের ঘোষণা করতে পারেন।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২০ ০৪:৪৮
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বীকার করলেন, করোনাভাইরাস অর্থনীতিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অতিমারী বিশ্বযুদ্ধের থেকেও কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে মোকাবিলার জন্য গরিবগুর্বো মানুষের জন্য আর্থিক সুরাহা দেওয়ার দাবি উঠলেও মোদী সরকার এ দিনও কোনও আর্থিক প্যাকেজের কথা ঘোষণা করল না।

প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, আজ সংসদে অর্থ বিল পাশের সময় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন গরিব মানুষের হাতে নগদ জোগানের ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু প্রত্যাশা তুঙ্গে উঠলেও তা পূরণ হল না। করোনাভাইরাসের জেরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর ও জেলায় লকডাউন। রুটিরুজি বন্ধ হয়ে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে দিন আনি দিন খাই নিয়মে বেঁচে থাকা মানুষের। বিরোধী শিবির থেকে শিল্পমহল দাবি তুলেছিল, আয়ের দিক থেকে নীচের সারিতে থাকা মানুষের হাতে নগদ টাকা তুলে দিক কেন্দ্রীয় সরকার। যাতে তারা খেয়েপড়ে বাঁচতে পারে। সেই সঙ্গে বাজারে কেনাকাটাতেও টান না পড়ে। অর্থনীতির গতি অব্যাহত থাকে। উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার রাজ্যের ২০ লক্ষ নির্মাণকর্মী, ১৫ লক্ষ রিকশাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা, ছোট দোকানদারদের জন্য মাসে ১ হাজার টাকা করে ভাতার ঘোষণা করেছে। কেরল, পঞ্জাব, দিল্লির রাজ্য সরকারও বেশ কিছু সুরাহা দিয়েছে।

আজ সংসদের বাজেট অধিবেশ মুলতুবি হয়ে যাওয়ার আগে আলোচনা ছাড়াই অর্থ বিল পাশ করিয়ে নেয় মোদী সরকার। কিন্তু কংগ্রেসের অধীর রঞ্জন চৌধুরী থেকে ডিএমকে-র টি আর বালুর মতো নেতারা বারবার দাবি তোলেন, গরিব মানুষের জন্য কিছু ঘোষণা করা হোক। অধীর বলেন, মানুষ সরকারের মুখের দিকে চেয়ে রয়েছে। সরকার যত ইচ্ছে বিল পাশ করাক। কিন্তু গরিব মানুষের জন্য কিছু ঘোষণা করুক। অর্থমন্ত্রী অবশ্য এর জবাব দেননি।

আরও পড়ুন: করোনা-কণিকা আতঙ্কে দুষ্মন্তের ভিন‌্ দলের বন্ধুরা

গরিব মানুষের জন্য এ দিনও কোনও ঘোষণা না হলেও অর্থমন্ত্রীর দফতর থেকে আজ নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, সরকারি দফতরে যে সব ঠিকাকর্মী ঘর-বন্দির ফলে কাজে যেতে পারছেন না, তাঁদের বেতন কাটা হবে না। খাদ্যশস্যের জোগান অব্যাহত রাখতে এবং আর্থিক ভাবে সাহায্য করতে অর্থমন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যগুলি তিন মাসের খাদ্যশস্য খাদ্য নিগমের থেকে ধারে তুলে নিতে পারবে। ফলে গরিব মানুষকে খাদ্য সরবরাহে রাজ্যগুলিকে নগদের অভাবে পড়তে হবে না। অর্থমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, সরকারি খরচে যাতে কোনও বাধা না আসে, তার জন্য সরকারি খরচকে অত্যাবশকীয় পরিষেবার আওতায় আনা হয়েছে।

বণিকসভা সিআইআই মোদীকে চিঠি লিখে আর্জি জানিয়েছিল, আয়ের দিক থেকে নীচের সারির ২০ কোটি মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এককালীন ৫ হাজার টাকা নগদ দেওয়া হোক। করোনাভাইসারে জেরে অর্থনীতিতে ধাক্কা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আজ শিল্পমহল ও শিল্পপতিদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষের কথা ভেবে সরব হওয়ার জন্য শিল্পমহলকে সাধুবাদ জানান। মোদী বলেন, সরকার যখন আর্থিক বৃদ্ধি চাঙ্গা করার জন্য কাজ করছিল, সেই সময়ই করোনাভাইরাস অর্থনীতিতে বাধা হয়ে দাঁড়াল। এই অতিমারী বিশ্বযুদ্ধের থেকেও কঠিন চ্যালেঞ্জ।

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, পিএমকিষাণ প্রকল্পে ভর্তুকি দ্বিগুণ করা হোক। ভাগচাষিদেরও এর আওতায় আনা হোক। জিএসটি ও শুল্ক কমিয়ে কর মেটানোর সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়া হোক। কংগ্রেস যেমন ভোটের আগে গরিব মানুষের জন্য মাসিক ভাতা বা ‘ন্যায়’-এর কথা বলেছিল, তেমন ভাতার বন্দোবস্ত হোক। মাসে বিনামূল্যে ১০ কেজি খাদ্যশস্য দেওয়া হোক। ব্যবসায়িক সংস্থাগুলি যাতে বেতন বা চাকরি ছাঁটাই না করে, তার জন্য আর্থিক সুবিধা দেওয়া হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE