ছবি রয়টার্স।
গোষ্ঠী সংক্রমণ কি শুরু হয়ে গিয়েছে ভারতে? নরেন্দ্র মোদী আজ ২১ দিন ‘লকডাউনের’ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতেই তা নিয়ে জল্পনা সব মহলে।
পরিসংখ্যান বলছে, গত ৪০ দিনে ভারতে ৫০টি করোনা সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়েছিল। পরের পাঁচ দিনে ১০০ জন, তার পরের দিন ১৫০ জন এবং শেষ দু’দিনে প্রায় ২০০ জনের দেহে ভাইরাসটি চিহ্নিত হওয়ার পর আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পাঁচশোর কাছে। আমেরিকায় যে ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা ফি দিন দ্বিগুণ হচ্ছে, ঠিক সেই গতিতে ভারতে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়লে হাসপাতালে জায়গা দেওয়াই সমস্যা হবে।
প্রধানমন্ত্রীও আজ কার্যত স্বীকার করে নেন, এত বড় বিপর্যয় ভারতের মতো স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় ঠেকানো দুঃসাধ্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানান, প্রথম ১ লক্ষ করোনা রোগীর সংক্রমিত হতে সময় লেগেছিল ৬৭ দিন। পরের ১১ দিনেই সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে ২ লক্ষ হয়। এরপর দু’লক্ষ থেকে তিন লক্ষের ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে সময় লাগে মাত্র চার দিন। সেই কারণে বিশেষজ্ঞদের একাংশ শুরু থেকেই লকডাউনের সুপারিশ করছিলেন।
এমসের চিকিৎসক তথা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শদাতা প্রসূন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উপসর্গ নেই এমন আক্রান্ত ব্যক্তি দু’সপ্তাহে একাই অন্তত ১৬ হাজার লোকের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম। বাড়িতে থাকাই এই রোগ আটকানোর শ্রেষ্ঠ উপায়।’’ একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সামাজিক দূরত্ব না মানলে ভারতের মতো দেশে অন্তত ১০ লক্ষের বেশি মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন। যাঁদের মধ্যে মারা যেতে পারেন অন্তত ৩০-৩৫ হাজার। গোষ্ঠী সংক্রমণ হলে পরিস্থিতি সে দিকেই যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক আজও দাবি করেছে, করোনা সংক্রমণের প্রশ্নে এ দেশ এখনও দ্বিতীয় ধাপে। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এ দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ, গত সপ্তাহ পর্যন্ত বিদেশ থেকে ভারতীয়দের আসা চালু ছিল। যাঁদের অনেকে সংক্রমিত থাকলেও নিজেরা জানতেন না। ফলে তাঁদের মাধ্যমে অজান্তেই বহু মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
প্রসূনবাবুর মতে, গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে কি না তা বুঝতে গেলে পার্ক, আবাসন, ঝুপড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু এতে জনমানসে আতঙ্ক তৈরি হবে। অন্য দিকে, সচ্ছল ব্যক্তিরা পরীক্ষা করাতে বেসরকারি ল্যাবে ছুটবেন। আইসিএমআর ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০০ নমুনা পরীক্ষা করে কোনও ভাইরাস আক্রান্তের সন্ধান পায়নি। সূত্রের খবর, এ সপ্তাহের শেষে ফের বিভিন্ন স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে আইসিএমআর। তা থেকেই বোঝা যাবে সংক্রমণ তৃতীয় ধাপে পৌঁছেছে কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy