Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in India

হয়নি বিহু, তাই পুজোতে রাজি নয় আলফা

বিহুর সময় রাজ্যে পুরোপুরি লকডাউন ছিল। তাই সব কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সরকার সমবেত বিহু বাতিল করে।

এই বছর প্রথম অসমে কোথাও রঙ্গালি বিহু পালিত হয়নি। ছবি: সংগৃহীত।

এই বছর প্রথম অসমে কোথাও রঙ্গালি বিহু পালিত হয়নি। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৩০
Share: Save:

করোনা ও লকডাউনের জেরে এই বছর প্রথম অসমে কোথাও রঙ্গালি বিহু পালিত হয়নি। তাই এ বছর রাজ্যে দুর্গাপুজোও হতে দেবে না আলফা স্বাধীন! তেমন দাবি করেই আজ লিখিত বিবৃতি দিল তারা। সঙ্গে ইউটিউবে আপলোড করা হল ভিডিয়ো।

আলফা স্বাধীনের নেতা অরুণোদয় অসম প্রশ্ন তোলেন, “ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র ভারতের অবিবেচক নীতি তথা অসমে পুতুল সরকারের অবৈজ্ঞানিক পদক্ষেপের জন্যে কোভিড-১৯ অতিমারির চেহারা নিয়েছে। তার ফলে সাম্প্রতিক ইতিহাসে প্রথম বারের জন্যে চলতি বছর অসমের জাতীয় উৎসব রঙ্গালি বিহু উদযাপনকেও বর্জন করার নির্দেশ দেয় এই সরকার। তা হলে কোন যুক্তিতে দুর্গাপুজো আয়োজনের অনুমতি দিচ্ছে”?

উল্লেখ্য, বিহুর সময় রাজ্যে পুরোপুরি লকডাউন ছিল। তাই সব কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সরকার সমবেত বিহু বাতিল করে। কিন্তু আজ থেকে রাজ্যে লকডাউন পুরো তুলে দেওয়া হল। সেই সঙ্গে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ক্ষেত্রেও সীমিত সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাই পুজোর আয়োজনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে।

আলফা স্বাধীনের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীকে সন্তুষ্ট করার স্বার্থে অতি হিন্দু হতে চলা অসম সরকার বিহু হতে না দিয়ে এখন দুর্গাপুজোর আয়োজনে ব্যস্ত। এমন জনস্বাস্থ্য-বিরোধী পদক্ষেপকে ধিক্কার জানিয়ে দুর্গাপুজো বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। দুর্গাপুজো কমিটিগুলি সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। অবশ্য ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০ শতাংশ পুজো কমিটি জানিয়েছে, তারা হয় ঘটপুজো করবে বা মূর্তিপুজো করলেও দর্শনার্থীহীন ও ছোট পরিসরে তা সারা হবে।

কিন্তু এর মধ্যেই আলফা এমন হুমকি দেওয়ায় বিষয়টি অন্য চেহারা নিয়েছে। মালিগাঁওয়ের এক বড় পুজোর কর্তা বলেন, ‘‘আলফার দুর্গাপুজো-বিরোধী বক্তব্য সরাসরি বাঙালি বিদ্বেষের উদাহরণ। করোনা ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আমরাও সমান সচেতন। পুজোর আচার অনুষ্ঠান পালন হলেও, সামাজিক দূরত্ব ও সব নিয়ম মানা হবে। কিন্তু তা হুমকি দিয়ে পুজো বন্ধ করার কাজ অন্যায়।’’

গুয়াহাটির লতাশিল এলাকার এক পুজো কমিটির প্রধান জানান, দুর্গাপুজো বাঙালিদের হাত ধরে এলেও বর্তমানে গুয়াহাটির পুজোগুলির অধিকাংশই অসমীয়া পরিচালিত। বাঙালিরা যেমন বিহু পালন করেন, দুর্গাপুজোও অসমিয়াদের নিজেদের উৎসব হয়ে গিয়েছে।

বরুয়া বাড়ির পুজো শিবসাগরে ১৮২৬ সালে শুরু হয়েছিল। গুয়াহাটিতে, ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে ১৮৩৮ সাল থেকে পুজো হয়ে চলেছে। গুয়াহাটির উজানবাজার বারোয়ারির পুজো এ বছর ১৩০ বছরে পড়ল। আহোম রাজার আমলে এই পুজোর সূচনা। কমিটির এক কর্তার মতে, পুজো বা বিহুর সঙ্গে রাজনীতি, হুমকি, উগ্রপন্থা মেলানো ঠিক নয়। করোনার ভয়াবহতা সকলেই বুঝেছেন। পুজো কমিটিগুলিও তা নিয়ে সতর্ক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE