Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ফের সাড়ে ৯৭ হাজার নতুন আক্রান্ত, ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ ৮১ হাজার

সাড়ে ৯৭ হাজার বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৪৬ লক্ষ ৫৯ হাজার ৯৪৮ জন।

কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু— দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু— দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১০:৩১
Share: Save:

৮৯, ৯৫, ৯৬, ৯৭— গত ক’দিনে এ ভাবেই বাড়ছে দেশে দৈনিক করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। দৈনিক মৃত্যুও রোজই ছাড়াচ্ছে ১২০০-র গণ্ডি। দেশের মোট আক্রান্ত ইতিমধ্যেই ছাড়িয়ে গিয়েছে সাড়ে ৪৬ লক্ষ। এর মধ্যে ১০ লক্ষ আক্রান্ত কেবলমাত্র মহারাষ্ট্রেই।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৯৭ হাজার ৫৭০ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৭ হাজার ১৫৪ ও ২৩ হাজার ৮৬৪ জন। গত এক মাস ধরেই ওই দু’টি দেশের তুলনায় ভারতের নতুন সংক্রমণ অনেক বেশি সংখ্যায় হচ্ছে। গত কয়েক দিনে তা দুই থেকে তিন গুণ হয়ে গিয়েছে।

সাড়ে ৯৭ হাজার বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৪৬ লক্ষ ৫৯ হাজার ৯৪৮ জন। প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকায় মোট আক্রান্ত ৬৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে মোট আক্রান্ত ৪২ লক্ষ ৩৮ হাজার।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )

মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটক— দৈনিক আক্রান্ত বৃদ্ধিতে দেশের মধ্যে এগিয়ে এই তিনটি রাজ্য। গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে নতুন সংক্রমণ সাড়ে ২৪ হাজারের বেশি। যার জেরে সেখানকার মোট আক্রান্ত ১০ লক্ষ ছাড়িয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে প্রায় ১০ হাজার ও কর্নাটকে সাড়ে ৯ হাজার নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশেও দৈনিক আক্রান্ত বিগত কয়েক দিন ধরে সাড়ে ছ’হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছিল। আজ তা ৭ হাজার ছুঁয়েছে। দৈনিক সংক্রমণে নতুন করে চিন্তা বাড়াচ্ছে দেশের রাজধানী। জুলাইয়ের শেষ ও অগস্টে সেখানে দৈনিক সংক্রমণ কমে এক হাজারের ঘরে নেমেছিল। গত ক’দিন ধরেই তা বেড়ে চার হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যা এই করোনাকালে প্রথম বার হল। পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে নতুন সংক্রমণ একই হারে হলেও তেলঙ্গানা, অসম, ওড়িশার দৈনিক নতুন সংক্রমণ কপালে ভাঁজ ফেলার জন্য যথেষ্ট। কেরল, হরিয়ানা, পঞ্জাব, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়েও আক্রান্ত উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।

দৈনিক সংক্রমণের পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যুতেও এখন অন্যান্য দেশের থেকে এগিয়ে ভারত। মোট মৃত্যুর নিরিখে বিশ্বের তৃতীয় স্থানে থাকলেও, প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা আমেরিকা ও ব্রাজিলের তুলনায় ভারতে মোট মৃত্যু অনেক কম। পাশাপাশি ওই দেশগুলির তুলনায় ভারতে মৃত্যুর হারও অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২০১ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৭৭ হাজার ৪৭২ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ২৮ হাজার ৭২৪ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত্যু ৮ হাজার ২৩১। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ছাড়িয়েছে। দেশের রাজধানীতে সংখ্যাটা ৪ হাজার ৬৮৭। অন্ধ্রপ্রদেশে (৪,৭৭৯), উত্তরপ্রদেশ (৪,২৮২), পশ্চিমবঙ্গ (৩,৮২৮) ও গুজরাত (৩,১৮০) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। পঞ্জাবে মোট মৃত্যু দু’হাজার ছাড়িয়ে বেড়ে চলেছে। মধ্যপ্রদেশ (১,৬৯১) ও রাজস্থানেও (১,২০৭) মোট মৃত্যু বেড়ে চলেছে। এর পর তালিকায় রয়েছে তেলঙ্গানা, হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যার মধ্যেই আশার আলো কোভিড রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠা। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৩৬ লক্ষ ২৪ হাজার ১৯৬ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের ৭৭.৭৭ শতাংশই সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৮১ হাজার ৫৩৩ জন।

প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সংক্রমণ হার ৮.৯৪ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পরীক্ষা হয়েছে ১০ লক্ষ ৯১ হাজার ২৫১ জনের।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )

কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু— দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত ১০ লক্ষ ১৫ হাজার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশে পাঁচ লক্ষ ৪৭ হাজার। তামিলনাড়ুতে মোট চার লক্ষ ৯১ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছেন। চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে মোট সংক্রমিত চার লক্ষ ৪০ হাজার। উত্তরপ্রদেশেও সংখ্যাটা ২ লক্ষ ৯৯ হাজারে পৌঁছেছে। দিল্লিতে মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ ছাড়িয়ে বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গে তা ১ লক্ষ ৯৬ হাজার। বিহারে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ও তেলঙ্গানাতে ১ লক্ষ ৫৪ হাজার। অসম ও ওড়িশাতে মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ও ১ লক্ষ ৪৩ হাজার। গুজরাত ও কেরলেও এক লক্ষ ছাড়িয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা।

রাজস্থানে মোট আক্রান্ত ৯৯ হাজার। হরিয়ানায় ৮৮ ও মধ্যপ্রদেশে ৮৩ হাজার। পঞ্জাবে ৭৪ হাজার, ঝাড়খণ্ডে ৫৯ হাজার, ছত্তীসগঢ়ে ৫৮ হাজার, জম্মু ও কাশ্মীরে মোট আক্রান্ত ৫০ হাজার। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, পণ্ডিচেরী ও ত্রিপুরা। মণিপুর, হিমাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১০ হাজারের কম।

পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ বেশ কিছু দিন ধরে তিন হাজারের নীচে ছিল। গত কয়েক দিন তা আবার তিন হাজার পেরিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৩ হাজার ১৫৭ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ৩৩২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৭ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজার ৮২৮ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID-19 Coronavirus in India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE